লখনউ:  উত্তরপ্রদেশের মোবাইলের রিচার্জের দোকানে মেয়েদের মোবাইল নম্বর বিক্রি করে দেওয়া হয়। কোন মেয়েকে কেমন দেখতে, তার ওপর নির্ভর করে দাম ধার্য হয়। ৫০ থেকে ৫০০ টাকায় নম্বরগুলো বিক্রি করা হয়। তারপর বিভিন্ন ব্যক্তি সেই নম্বরে ফোন করে ওই মহিলাদের উত্যক্ত করে, দাবি পুলিশের।

এই চক্র প্রথম পুলিশের নজরে আসে যখন অখিলেশ সরকার পুলিশের ২৪ ঘন্টার একটি হেল্পলাইন নম্বর চালু করে। ওই হেল্পলাইন নম্বরে সবচেয়ে বেশি অভিযোগ মহিলাদের থেকেই এসেছে। তাঁদের প্রত্যেকেরই অভিযোগ বিভিন্ন অজানা নম্বর থেকে তাঁদের কাছে ফোন আসছে এবং তাঁদের না না ভাবে উত্যক্ত বা বিরক্ত করা হচ্ছে। গত চার বছরে মোট ৬ লক্ষ অভিযোগ এই হেল্পলাইন নম্বরে এসেছে, এরমধ্যে ৯০ শতাংশই ফোনে উত্যক্ত করার অভিযোগ এসেছে।

ওই মহিলারা জানিয়েছেন, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ‘হামে আপসে দোস্তি করনি হ্যায়’, বা ‘আই ওয়ান্ট টু মেক ফ্রেন্ডশিপ উইথ ইউ’ ধরনের কথা দিয়ে কথোপকথন শুরু হয়। মূলত রিচার্জ সেন্টার থেকেই তাঁদের নম্বর উত্যক্তকারীদের হাতে পৌঁছে দেওয়া হয়। সুন্দরী হলে সেই মহিলার ফোন নম্বরের দাম উঠত ৫০০ টাকা, সাধারণ মানের দেখতে যাঁদের তাঁদের নম্বরের দাম উঠত ৫০ টাকা।

ট্র্যাক করে এই চক্রের সঙ্গে যুক্ত বেশ কয়েকজনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ। তাদের থেকে সংগৃহীত তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ জানতে পেরেছে, যেহেতু এভাবে ফোন করা কোনও অপরাধের মধ্যে পড়ে না, এবং মজাও পাওয়া যায়, তাই এই কাজটি বহু পুরুষই করে থাকে। এরমধ্যে সব বয়সের পুরুষই আছে। বেশিরভাগ সময় ওয়াটসঅ্যাপে অশ্লীল মেসেজও পাঠানো হত। যেহেতু এখনও এধরনের অপরাধের কোনও শাস্তি হয় না, তাই এই চক্র বন্ধ করতে শুধুমাত্র পুলিশের হুঁশিয়ারির ওপরই নির্ভর করতে হচ্ছে আম জনতাকে।

তবে এপ্রসঙ্গে এক ক্রিমিনাল ল'ইয়ারের সঙ্গে কথা বলা হয়। তিনি জানান, মোবাইলের রিচার্জের দোকান থেকে যখন মহিলাদের নম্বর ফাঁস করা হচ্ছে, তখন সেই মহিলার বিশ্বাসভঙ্গ করা হচ্ছে। আর একজন মহিলার একান্ত ব্যক্তিগত তথ্য এভাবে ফাঁস করা গুরুতর অপরাধের সামিল। এই বিশ্বাসঘাতকতার জন্যে অভিযুক্ত ব্যক্তির সাত বছর পর্যন্ত জেলও হতে পারে।