নয়াদিল্লি: কাশ্মীরে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলে রাষ্ট্রপুঞ্জের পেশ করা রিপোর্টে তীব্র প্রতিক্রিয়া ভারতের। রিপোর্টটি 'উদ্দেশ্যপ্রণোদিত', 'প্রতারণামূলক', 'বিভ্রান্তিকর' বলে খারিজ করল বিদেশমন্ত্রক। মন্ত্রকের তরফে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, রিপোর্টটি 'প্রবল পক্ষপাতে দুষ্ট', একটি 'মিথ্যা ভাষ্য' তৈরির চেষ্টা রয়েছে তাতে। তা দেশের সার্বভৌমত্ব, ভৌগোলিক সংহতি লঙ্ঘন করেছে। গোটা জম্মু ও কাশ্মীর ভারতের অবিচ্ছেদ্য অংশ। পাকিস্তানই আগ্রাসন চালিয়ে ভারতের একাংশ কব্জা করে অন্যায় ভাবে দখলে রেখেছে। আমরা এমন রিপোর্ট প্রকাশের উদ্দেশ্য নিয়েই প্রশ্ন তুলছি।

রাষ্ট্রপুঞ্জের এ ধরনের রিপোর্ট এই প্রথম। তাতে বলা হয়েছে, 'ভারত ও পাকিস্তান, দুদেশ শাসিত কাশ্মীরে' মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগের আন্তজাতিক সংস্থাকে দিয়ে তদন্ত করাতে হবে। অতীত ও বর্তমানের মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনাগুলি খতিয়ে দেখা আশু প্রয়োজন। কাশ্মীরে রাজনৈতিক সমস্যার মীমাংসায় হিংসার চক্রের অবসান ঘটানোর শপথ নিতে হবে, পুরানো ও চলতি মানবাধিকার লঙ্ঘনের দায়ও নির্ধারণ করতে হবে। মানবাধিকারের পরিসর সীমিত হওয়ায় বা তার স্বীকৃতি না থাকায় নিয়ন্ত্রণরেখার দুদিকের লোকজনের ওপরই খারাপ প্রভাব পড়েছে, তাঁদের ক্ষতি হচ্ছে।

ভারত বরাবরই বলে এসেছে, জনগণের বৈধ অভাব, অভিযোগ, অসন্তোষ নিরসনের যাবতীয় উপায় দেশের গণতান্ত্রিক কাঠামোর মধ্যেই আছে। জম্মু ও কাশ্মীরের সঙ্গে পাকিস্তানের দখলে থাকা কাশ্মীরের কোনও তুলনাই চলে না কারণ জম্মু ও কাশ্মীর শাসন করে গণতান্ত্রিক পথে নির্বাচিত সরকার, কিন্তু পাক অধিকৃত কাশ্মীরে প্রশাসনের মাথায় একতরফা বসানো হয়েছে এক পাকিস্তানি কূটনীতিককে।

রাষ্ট্রপুঞ্জের রিপোর্টে অবশ্য বলা হয়েছে, ১৯৮০-র পর্ব থেকেই নানা ধরনের সশস্ত্র গোষ্ঠী ভারতের জম্মু ও কাশ্মীরে সক্রিয়। হিজবুল মুজাহিদিন কমান্ডার বুরহান ওয়ানির ভারতীয় বাহিনীর হাতে খতম হওয়ার পর কাশ্মীর উপত্যকায় হিংসা, অশান্তি ছড়ানোর প্রসঙ্গও আছে রিপোর্টে। পাশাপাশি বলা হয়েছে, পাকিস্তান সরকার এইসব গোষ্ঠীকে কোনও সমর্থন দেয় না বলে দাবি করলেও বিশেষজ্ঞদের বিশ্বাস, পাক সেনাবাহিনী সীমান্তের ওপারে ভারত শাসনাধীন কাশ্মীরে ওদের মদত দিয়ে চলেছে।

তবে রিপোর্টে ১৯৯০ এর সশস্ত্র বাহিনী (জম্মু ও কাশ্মীর) বিশেষ ক্ষমতা আইনকে 'দ্রুত' বাতিল ও 'অসামরিক আদালতে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযুক্ত নিরাপত্তাকর্মীদের বিচারের জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের যে সম্মতি নিতে হয়, তা তুলে দেওয়ার' আবেদনও করা হয়েছে।