মৃতার নাম শকুন্তলা দেবী। ৫৫ বছরের ওই মহিলা গলার ক্যানসারে ভুগছিলেন, ছিল হৃদরোগও। গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় ওই মহিলাকে বৃহস্পতিবার সকালে সোনেপতে টিউলিপ নামে এক বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে আসেন তাঁর ছেলে পবন কুমার বালিয়ান ও ভাই রবীন্দ্র কুমার। কিন্তু হাসপাতাল বলে, ভর্তি করতে গেলে আধার কার্ড লাগবে।
পবনের সঙ্গে সেই মুহূর্তে আধার কার্ড ছিল না কিন্তু তাঁর ফোনে কার্ডের ছবি ছিল। তিনি বলেন, বাড়ি থেকে কার্ড এনে দেবেন, তার আগে ফোনের ছবি থেকে আধার নম্বর নিয়ে মাকে ভর্তি করে নিতে। অভিযোগ, তাতে রাজি হয়নি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ, আসল আধার কার্ড হাতে না আসা পর্যন্ত ভর্তি করা সম্ভব নয় বলে জানিয়ে দেয় তারা।
ক্ষুব্ধ পবন ম্যানেজমেন্টের কাউকে ডেকে আনার কথা বললে এক মহিলা বেরিয়ে এসে বলেন, হয় আধার কার্ড দেখাতে না হলে ভালয় ভালয় হাসপাতাল ছেড়ে চলে যেতে। কথা কাটাকাটি শুরু হতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ পুলিশে খবর দেয়। পুলিশ এসে হাসপাতাল চত্বরে ‘অকারণে’ অশান্তি করার জন্য হুমকি দেয় তাঁকে।
বুকের যন্ত্রণায় কাঁদতে থাকা শকুন্তলা দেবীকে এত কিছুর পরেও ভর্তি নেয়নি হাসপাতাল। এভাবেই ঘণ্টাদেড়েক কেটে গেলে পবন মাকে নিয়ে এক্স সার্ভিসমেন কন্ট্রিবিউটরি হেলথ সার্ভিস স্কিম হাসপাতালে নিয়ে যান, যাতে সেখান থেকে তারা তাঁর মাকে অন্য বেসরকারি হাসপাতালে রেফার করে। এই সব কাজকর্ম সারতে সারতে তিনি খবর পান, মারা গিয়েছেন মা।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অবশ্য শকুন্তলাকে ভর্তি না নেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেছে। তাদের দাবি, গুরুতর অসুস্থ যে কোনও রোগীকে জরুরি ভিত্তিতে ভর্তি নেয় তারা। তাদের বক্তব্য, ওই রোগিণীর পরিবারই তাঁকে নিয়ে অন্যত্র চলে যায়। যদিও হাসপাতাল স্বীকার করেছে, আসল আধার কার্ড সব সময় দেখতে চায় তারা।
সরকারি নীতি অবশ্য বলছে, রোগী ভর্তির জন্য আধার কার্ডের ১২টি নম্বর জমা দিলেই হবে, সে জন্য আসল কার্ড জরুরি নয়।
শকুন্তলা ছিলেন হবালিদার লক্ষ্মণ দাসের স্ত্রী। লক্ষ্মণ দাস কার্গিলের কাছে মুস্কো উপত্যকায় ৮ জাঠ রেজিমেন্টে কর্মরত ছিলেন। ১৯৯৯-এর ৯ জুন কার্গিল যুদ্ধের সময় পাকিস্তানিদের গুলিতে তিনি শহিদ হন।