জয়পুর: আন্তর্জাতিক নারী দিবস ঘিরে যখন সারা দেশে মহিলাদের অধিনায় নিয়ে আলোচনা চলছ, তখন রাজস্থানের উচ্চ শিক্ষা দফতরের একটি বিতর্কিত নির্দেশের খবর সামনে এল। এই নির্দেশ চলতি শিক্ষাবর্ষে রাজস্থানের সরকারি কলেজগুলির পড়ুয়াদের ইউনিফর্ম সংক্রান্ত। নির্দেশের প্রতিলিপি সমস্ত কলেজের অধ্যক্ষদের কাছে পাঠানো হয়েছে। ইউনিফর্ম নিয়ে অধ্যক্ষদের মতামত জানতে চাওয়া হয়েছে। নির্দেশে পড়ুয়াদের পোশাক সম্পর্কে কয়েকটি বিকল্প দেওয়া হয়েছে। সেই বিকল্প থেকে বেছে পছন্দের ইউনিফর্মের উল্লেখ করে পাঠাতে হবে অধ্যক্ষদের। এক নজরে মনেই হতে পারে, পড়ুয়াদের ইউনিফর্ম বাছাই নিয়ে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে মতামত গ্রহণ করা হচ্ছে। কিন্তু আদতে তা একেবারেই নয়। নির্দেশিকা অনুসারে, ছাত্রীদের জন্য কলেগুলি শুধুমাত্র শাড়ি বা শালোয়ার কামিজের মধ্যে কোনও একটিকে বেছে নিতে পারবে। ছাত্রীদের জন্য ট্রাউজার, জিন্স, স্কার্ট বা শার্টের কোনও বিকল্পই নির্দেশিকায় রাখা হয়নি। ছাত্রদের ক্ষেত্রে শুধুমাত্র জামা ও ট্রাউজারের বিকল্পই রয়েছে।
রাজ্যের উচ্চশিক্ষামন্ত্রী কিরণ মাহেশ্বরী বলেছেন, গুরু-শিষ্য সম্বাদ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল সরকার। ওই অনুষ্ঠানে ইউনিফর্ম নিয়ে প্রস্তাব আসে পড়ুয়াদের কাছ থেকেই। বহিরাগত ও কলেক থেকে পাস হয়ে বেরিয়ে যাওয়া পড়ুয়াদের ক্যাম্পাসে এসে সমস্যা তৈরির কারণ দেখিয়ে ইউনিফর্মের কথা বলেছিল পড়ুয়ারা। এরইভিত্তিতে আগামী ১২ মার্চের মধ্যে পছন্দের ইউনিফর্ম নিয়ে কলেজগুলিকে মতামত জানাতে বলা হয়েছে।
সমাজকর্মীরা অবশ্য এই পোশাকবিধির বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন। তাঁদের কথায়, এটা তো পড়ুয়াদের পছন্দের ওপর লাগাম টেনে দেওয়ার সামিল। পোশাক সংক্রান্ত অধিকার ভঙ্গ হবে এতে। পিইউসিএল রাজস্থানের সভাপতি কবিতা শ্রীবাস্তব, এটা একেবারেই দুঃখজনক। এতে পড়ুয়াদের পোশাক বেছে নেওয়ার অধিকারে রাশ টানা হবে। এটা একেবারেই অগণতান্ত্রিক ও পশ্চাদপদ এবং পিতৃতান্ত্রিক ও কর্তৃত্ববাদী পদক্ষেপ। শিক্ষা দফতর আরএসএসের মতামত চাপিয়ে দিচ্ছে। পড়ুয়াদের ভোটের অধিকার থাকবে, অথচপছন্দের পোশাক পরতে পারবে না।
শ্রীবাস্তব এই নির্দেশ অবিলম্বে প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন। যদিও এর থেকে পিছু হঠার কোনও পরিকল্পনাই নেই সরকারের। এই অবস্থায় সামাজিক সংগঠনগুলির এর বিরোধিতার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।