নয়াদিল্লি: আগামী অর্থবর্ষের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ করের ক্ষেত্রে বাজেটে বিশেষ ঘোষণা কেন্দ্রের। এদিন সংসদে বাজেট পেশ করতে গিয়ে অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ জানান, করদাতাদের ওপর যথাসম্ভব কম চাপ দিতে হবে।


এদিনের বাজেটে ৭৫ বছর বা তার বেশি বয়সীদের জন্য বিশেষ ছাড়ের ঘোষণা করেন নির্মলা। সীতারমণ বলেন, ‘৭৫ বছরের বেশি পেনশনভোগীদের জন্য সুদের ওপর সম্পূর্ণ ছাড়। ৭৫ বছর বেশি পেনশনভোগীদের ট্যাক্স রিটার্ন জমা দিতে হবে না। এনআরআই-দের জন্য অডিট থেকে ছাড় পাবেন। ৭৫ বছরের বেশি বয়সী ব্যাঙ্কের সুদের ওপর নির্ভরশীলদেরও ছাড়।’


বাজেট ঘোষণা অনুযায়ী, নতুন ফ্ল্যাট কিনলে দেড়লক্ষ টাকা আয়করে ছাড় মিলবে ২০২২ মার্চ পর্যন্ত। শেয়ারের ডিভিডেন্ট থেকে টিডিএস কাটা হবে না।


যদিও, প্রত্যাশা পূরণ হল না ব্যক্তিগত করদাতাদের। বাড়ল না ছাড়ের ঊর্ধ্বসীমা, বাজেট প্রস্তাবে অপরিবর্তিত রইল আয়কর কাঠামো। অর্থাত্‍ চাকরিজীবী মধ্যবিত্ত মানুষকে কর দিতে হবে আগের হারেই।


নির্মলা জানিয়ে দেন, ‘আয়কর কাঠামোর কোনও পরিবর্তন হবে না।’ ফলে, আগের মতোই অপরিবর্তিত থাকছে আয়করের স্ল্যাব। --


২.৫ লক্ষ পর্যন্ত বার্ষিক আয় - ০%
২.৫-৫ লক্ষ পর্যন্ত বার্ষিক আয় - ৫% (* শর্ত সাপেক্ষে ০%)
৫-১০ লক্ষ পর্যন্ত বার্ষিক আয় - ২০%
১০-৫০ লক্ষ পর্যন্ত বার্ষিক আয় - ৩০%+৪% (স্বাস্থ্য ও শিক্ষা) সেস
৫০ লক্ষ-১ কোটি পর্যন্ত বার্ষিক আয় - ৩০%+৪% সেস+১০% সারচার্জ
১-১০ কোটি পর্যন্ত বার্ষিক আয় - ৩০%+৪% সেস+১৫% সারচার্জ


-------


৬৭৫ কিমি সড়ক তৈরি হবে পশ্চিমবঙ্গে আগামী অর্থবর্ষে। এর জন্য ২৫ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ। বাজেটে ঘোষণা নির্মলা সীতারমণের।


সোমবার সংসদে কেন্দ্রীয় বাজেট পেশ করেন অর্থমন্ত্রী। সেখানে তিনি বলেন, ‘৬৭৫ কিমি সড়ক পশ্চিমবঙ্গে তৈরি হবে। কলকাতা-শিলিগুড়ির রাস্তা সংস্কারও এর মধ্যে আছে। পশ্চিমবঙ্গের জন্য সড়ক তৈরিতে ২৫ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ।


সড়কের পাশাপাশি, রাজ্যে রেল পরিকাঠামো নিয়েও পরিকল্পনা করা হয়েছে। সীতারমণ জানান, রেলের জন্য জাতীয় রেল প্ল্যান তৈরি হয়েছে। খড়গপুর থেকে বিজয়ওয়াড়া ফ্রেট করিডর তৈরি হবে।


অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘ সবমিলিয়ে ১ লক্ষ ২৫ হাজার কোটি টাকা রেলের জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে। রেলের মূলধন খাতে ১ লক্ষ কোটি টাকা ব্যয় হবে।’


এদিন বাজেটের শুরুতে সীতারমণ বলেন, ‘অভূতপূর্ব পরিস্থিতিতে এই বাজেট। অনেকে হারিয়েছেন প্রিয়জনকে, হারিয়েছেন টাকাপয়সা। লকডাউন না করলে আরও প্রাণ হারানোর আশঙ্কা ছিল। করোনার ফলে প্রভাব পড়েছে বিশ্ব অর্থনীতিতে।


তিনি বলেন, ‘৮০ কোটি মানুষকে নিখরচায় রেশন দেওয়া হয়েছে। ৪০ কোটি কৃষক ও বয়স্কদের অ্যাকাউন্টে পাঠানো হয়েছে নগদ। করোনা-কালে ২৭ লক্ষ কোটি টাকার প্যাকেজ আরবিআই-এর।


নির্মলা বলেন, ‘করোনা-কালে ৫টি মিনি বাজেট ঘোষণা করে মোদি সরকার। প্রতি ১০ লক্ষে মৃত্যু হার কমেছে উল্লেখযোগ্য হারে। জিডিপি-র ১৩ শতাংশ খরচ হচ্ছে আত্মনির্ভর প্যাকেজে।’