নয়াদিল্লি:  আগামী ১ ফেব্রুয়ারি সংসদে সাধারণ বাজেট পেশ করবেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। কোভিড-১৯ অতিমারিজনিত নজিরবিহীন পরিস্থিতিতে এবারের বাজেট পেশ হবে। করোনাভাইরাস অতিমারির কারণে প্রায় এক বছর বন্ধ রয়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলি। ফলে বহু স্কুলেরই আর্থিক অবস্থা খারাপ হয়েছে। সেইসঙ্গে এমন অনেক ঘটনাও ঘটেছে, যেখানে অভিভাবকরা তাঁদের সন্তানদের ফি দিতে পারেননি। এতে স্কুলগুলি পরিচালনার ক্ষেত্রে অসুবিধার সম্মুখীন হয়েছে।

এই অস্বাভাবিক পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে এবারের বাজেটে কর সংক্রান্ত কিছু স্থগিতাদেশের প্রস্তাব থাকতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে। এক্ষেত্রে কর স্থগিতের মেয়াদ স্বাভাবিক অবস্থা না ফেরা পর্যন্ত  কম করে এক বছর বাড়ানো হতে পারে। এই পদক্ষেপ অর্থ সংকটে থাকা বিভিন্ন স্কুল ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলির আর্থিক বোঝা অনেকটা লাঘব করতে সহায়ক হতে পারে।

অতিমারির কারণে বহু স্কুল ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকেই অনলাইন এডুকেশনের দ্বারস্থ হতে হয়েছে। শিক্ষাপ্রদান ও পরীক্ষা গ্রহণের ক্ষেত্রে এই মাধ্যমই এখনও পর্যন্ত অবলম্বন হয়ে থেকেছে। এরসঙ্গে বহু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি এবং অন্যান্য পরিকাঠানো ক্ষেত্রে লগ্নি করতে হয়েছে। এতে থাকছে জিএসটি দিতে হবে।

অত্যাবশ্যক পরিষেবা হওয়ায় প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও কলেজ শিক্ষার ক্ষেত্রে জিএসটি প্রযোজ্য নয়। তাই এক্ষেত্রে করের বোঝা পড়ুয়াদের ওপর চাপানো যায় না। এক্ষেত্রে স্কুলস অ্যান্ড এডটেক কোম্পানিগুলিতে ১৮ শতাংশ হাতে জিএসটি প্রযোজ্য হয়। এই হারের সংশোধন ঘটিয়ে সর্বাধিক ৫ শতাংশ করা হতে পারে। জিএসটি-তে যে কোনও ধরনেক ছাড় আর্থিক বোঝা লাঘবের ক্ষেত্রে সহায়ক হতে পারে।

গত কয়েকমাসে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির মতোই অভিভাবকরাও ল্যাপটপ, ট্যাবলেটের পাশাপাশি সফটওয়্যার, আইটি পরিকাঠামো, সার্ভার ও ডেটা প্রোটেকশনের মতো বিভিন্ন ডিভাইসে প্রচুর লগ্নি করেছেন। অনলাইনে শিক্ষার সঙ্গে সড়গড় হতেই এই ডিভাইসগুলি লগ্নি হয়েছে। তাই শিক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় এই জিনিসপত্র যাতে সুলভ হয়, বাজেটে সেজন্য পদক্ষেপ করা হবে, এমনই আশা করা হচ্ছে।

সেইসঙ্গে গ্রামীণ ও শহুরে এলাকাগুলির শিক্ষার মানের ক্ষেত্রে ফারাক মেটানোর পদক্ষেপের প্রয়োজন। এক্ষেত্রে প্রযুক্তির একটা বড় ভূমিকা রয়েছে। তা গ্রামীন এলাকার লক্ষ লক্ষ শিশুদের ভবিষ্যত নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে সহায়ক হতে পারে।

পাশাপাশি, বাজেটে সরকার-পরিচালিত স্কুলগুলিতে সমাজের আর্থিক দিক থেকে অনগ্রসর শ্রেণীর পড়ুয়াদের জন্য হাইস্পিড ইন্টারনেট ও কম্পিউটার বা ট্যাবলেট  ডিভাইসের সুযোগ দেওয়ার ক্ষেত্রে নজর দেওয়া হতে পারে।

আগামী দিনগুনিতে প্রথাগত শিক্ষার পাশাপাশি অনলাইন শিক্ষার সংমিশ্রনের কথা মাথায় রেখে সরকার অনলাইন শিক্ষার ক্ষেত্রে আরও বেশি লগ্নির কথা বিবেচনা করতে পারে।

শিক্ষাক্ষেত্রে বরাদ্দ অর্থের পরিমাণ গত কয়েক বছরে বাড়লেও জিডিপি-র শতাংশের হারে তা কমেছে।