নয়াদিল্লি: একদিকে আয়করে বড়সড় ছাড়, অন্যদিকে ছাড়ের একাধিক রাস্তা বন্ধ। এক দিকে কর কমালেন,অন্যদিকে কেড়ে নিলেন ছাড়ের বেশ কিছু সুবিধা। বাজেট প্রস্তাবে এক ঢিলে দুই পাখি মারলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ। ব্যক্তিগত আয়কর কাঠামোয় অন্তর্ভুক্ত করলেন নতুন নিয়ম।
সাধারণ বাজেটে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীর প্রস্তাব, বার্ষিক করযোগ্য আয় ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত হলে লাগবে না কোনও কর।
৫ থেকে ৭.৫ লক্ষ টাকা বার্ষিক করযোগ্য আয়ে কর দিতে হবে ১০%, এতদিন যা ছিল ২০%।
৭.৫ থেকে ১০ লক্ষ টাকা বার্ষিক করযোগ্য আয়ে এখন কর ১৫%, আগে ছিল ২০%।
১০ থেকে ১২.৫ লক্ষ টাকায় আয়কর দিতে হবে ২০%, আগে ছিল ৩০%।
১২.৫ লক্ষ থেকে ১৫ লক্ষ টাকা বার্ষিক করযোগ্য আয়ে আগে দিতে হত ৩০% কর, এখন দিতে হবে ২৫%।


এবং ১৫ লক্ষ টাকার বেশি যদি হয় বার্ষিক করযোগ্য আয় তাহলে কর দিতে হবে আগের মতোই ৩০%।

তবে এই নতুন হারে, অর্থাত্‍ কম হারে কর দিতে চাইলে, আয়করের পুরনো বেশিরভাগ ছাড়ই আর মিলবে না।

তবে, যাঁরা আগের মতোই ছাড়ের সুবিধা নিতে চান, তাঁদের পুরনো হারেই আয়কর দিতে হবে।
আয়করদাতারা বেছে নিতে পারবেন যে কোনও একটি বিকল্প।

তাহলে সাধারণ মানুষের লাভ কী হল? দেখে নেওয়া যায় অঙ্কটা।
ধরা যাক তারাপদ দাশগুপ্ত। বেসরকারি সংস্থায় চাকরি করেন। বার্ষিক আয় সাড়ে ৭ লক্ষ টাকা। আগের হিসেব অনুযায়ী প্রথম আড়াই লক্ষ টাকা করমুক্ত। ৮০ সি-তে ছাড় দেড় লক্ষ টাকা। সব বাদ দিয়ে তাঁর করযোগ্য বার্ষিক করযোগ্য আয় ৩ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা।যার জন্য কর কাঠামোর দুই ধাপের হিসেবে আগে তাঁকে কর দিত হত ৩২ হাজার ৫০০ টাকা। বর্তমান কর কাঠামোয় কোনও রকম ছাড় বাদে, তাঁকে কর দিতে হবে ২৫ হাজার টাকা। অর্থাৎ তাঁর সাশ্রয় হবে ৭ হাজার ৫০০ টাকা।
আর একটি হিসেব দেখি। ধরা যাক এক ব্যক্তির নাম অনিরুদ্ধ পাল। সল্টলেকের তথ্য প্রযুক্তি সংস্থার পদস্থ চাকুরে।বার্ষিক আয় ১০ লক্ষ টাকা।আগের হিসেব অনুযায়ী প্রথম আড়াই লক্ষ টাকা করমুক্ত। ৮০ সি-তে ছাড় দেড় লক্ষ টাকা। অর্থাত্‍ তাঁর বার্ষিক করযোগ্য আয় দাঁড়ায় ৬ লক্ষ টাকা। কর কাঠামোর তিন ধাপের হিসেবে আগে তাঁকে কর দিত হত ৮২ হাজার ৫০০ টাকা। বর্তমানে কোনও ছাড় ছাড়া কর কাঠামোর তিন ধাপে তাঁকে কর দিতে হবে ৭৫ হাজার টাকা। অর্থাত্‍ সাশ্রয় হবে ৭ হাজার ৫০০ টাকা।

এবার ধরা যাক এক ব্যক্তির নাম অশোক সেন।বহুজাতিক সংস্থার পদস্থ কর্তা।বার্ষিক আয় ১৫ লক্ষ টাকা। প্রথম আড়াই লক্ষ টাকা ছিল করমুক্ত। ৮০ সি-তে ছাড় ছিল দেড় লক্ষ টাকা। সব বাদ দিয়ে অশোকের বার্ষিক করযোগ্য আয় ছিল ১১ লক্ষ টাকা। যার জন্য আগের কর কাঠামো অনুযায়ী ৫ ধাপের হিসেবে তাঁকে কর দিত হত ২ লক্ষ ১৭ হাজার ৫০০ টাকা। এখন ছাড়ের রাস্তা অনেকটাই বন্ধ। কোনও রকম ছাড় বাদে বর্তমান কর কাঠামোতে, ৫ ধাপের হিসেব অনুযায়ী তাঁকে কর দিতে হবে ১ লক্ষ ৮৭ হাজার ৫০০ টাকা। অর্থাত্‍ অশোকের সাশ্রয় হবে ৩০ হাজার।