লখনউ: যদি কোনও গ্রামে কবরস্থানের জন্য জমি দেওয়া হয়, তবে শ্মশানের জন্যও দেওয়া উচিত। যদি রমজানে বিদ্যুৎ দেওয়া হয়, তবে দেওয়া হোক দীপাবলীতেও। একইভাবে দোলে বিদ্যুতের সুবিধে থাকলে তা ইদেও পাওয়া উচিত। উত্তরপ্রদেশ ভোট প্রচারে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর এই মন্তব্যে বিতর্ক দানা বেঁধেছে। ফতেহপুর জেলায় ভাষণ দিতে গিয়ে এ কথা বলেছেন তিনি।

অখিলেশ যাদব সরকারকে উদ্দেশ্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, রাজ্য সরকারের দেখা উচিত, কোথাও কোনও বৈষম্য হচ্ছে কিনা। ধর্ম বা জাতপাতের ভিত্তিতে রাজ্যবাসীর প্রতি অবিচার করা উচিত নয়। কিন্তু উত্তরপ্রদেশের সব থেকে বড় সমস্যা হল, এখানে বৈষম্য অত্যন্ত বেশি। দলিতরা বলছে, তাদের প্রাপ্য ওবিসিরা পাচ্ছে, ওবিসিরা বলছে, তাদের প্রাপ্য যাদবরা নিয়ে যাচ্ছে আবার যাদবরা বলছে, সব পাচ্ছে মুলায়ম পরিবারের সঙ্গে যুক্তরা, বাকি যাচ্ছে মুসলমানদের ঘরে। অর্থাৎ সকলেই বৈষম্যের শিকার।

প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্য, এই ভেদাভেদ চলতে পারে না। যার যেখানেই জন্ম হোক, প্রত্যেকের নিজের অধিকার মেলা উচিত। একইসঙ্গে বলেন, তাঁর সরকারের নীতি সবকা সাথ, সবকা বিকাশ।

কিন্তু স্বয়ং নরেন্দ্র মোদীর এই বয়ান বিরোধীরা মোটেই ভাল চোখে দেখেননি। তাঁদের অভিযোগ, ভোটে হারের ভয়ে প্রধানমন্ত্রী ধর্মীয় মেরুকরণের তাস খেলছেন। এসপি-কংগ্রেস জোটে আশঙ্কিত হয়ে হিন্দু ভোট একজোট করার চেষ্টা করছেন তিনি। তাঁর বক্তব্যের তীব্র সমালোচনা করে একের পর এক বয়ান আসতে থাকে বিরোধীদের।

কংগ্রেস প্রশ্ন করে, কী করে এই মানুষটি গাঁধীর ভারতের প্রধানমন্ত্রী হলেন?





দ্রুত যোগ দেন মুসলিম নেতা আসাউদ্দিন ওয়াইসিও। একের পর এক টুইটে তিনি প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে বৈষম্যের অভিযোগ করেন। প্রশ্ন করেন, কেন উত্তরপ্রদেশ ভোটে একজন মুসলমানকেও টিকিট দেয়নি বিজেপি? গোয়ায় গোমাংস পাওয়া গেলে মহারাষ্ট্রে নয় কেন?





‘হিন্দু-মুসলমানের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টির চেষ্টা’র জন্য সিপিএমও প্রধানমন্ত্রীর সমালোচনা করে।





যদিও বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, বিশ্লেষণ করলে দেখা যাচ্ছে, প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্য মোটেই সাম্প্রদায়িক নয়। বরং তুষ্টিকরণের রাজনীতির বিরুদ্ধেই মুখ খুলেছেন তিনি।