কৌশাম্বি:  দানা মাঝির ঘটনার পুনরাবৃত্তি এবার উত্তরপ্রদেশে। নিহত সাত মাসের ভাগ্নীর দেহ সাইকেলে করে বাড়িতে ফিরিয়ে নিয়ে গেলেন এক ব্যক্তি। হাসপাতালে চিকিত্সা চলাকালে মৃত্যু হয় ওই শিশুকন্যার। এরপর ভাগ্নীর দেহ নিয়ে যেতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা করে দেওয়ার আর্জি জানান ওই ব্যক্তি। কিন্তু সেই আর্জিতে সাড়া দেয়নি কেউই।  গত সোমবারের এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পর নড়েচড়ে বসেছে কর্তৃপক্ষ। কর্তব্যরত চিকিত্সক ও অ্যাম্বুলেন্স চালকের বিরুদ্ধে মামলা দায়েক করা হয়েছে। হাসপাতাল এই ঘটনায় তদন্ত শুরু করেছে।


উল্লেখ্য, ওড়িশার কালাহান্ডির দানা মাঝিও নিহত স্ত্রীর দেহ বাড়িতে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য কোনও অ্যাম্বুলেন্স পাননি। স্ত্রীর দেহ কাঁধে নিয়ে পাড়ি দিতে হয়েছিল তাঁকে। রাস্তায় লোকজন ও সংবাদমাধ্যমের নজরে পড়ায় শেষমেষ অ্যাম্বুলেন্সের বন্দোবস্ত হয়। কিন্তু তার আগে প্রায় ১০ কিমি পথ স্ত্রীর দেহ কাঁধে নিয়ে হেঁটেছিলেন দানা মাঝি। এই ঘটনায়  সহানুভূতিহীনতা, অমানবিকতা নিয়ে শোরগোল পড়ে গিয়েছিল সারা দেশ জুড়েই। কিন্তু পরিস্থিতি রয়ে গিয়েছে সেই তিমিরেই। তা আরও একবার প্রমাণিত হল উত্তরপ্রদেশের কৌশাম্বি জেলার ওই ঘটনায়।
কৌশাম্বির মালাক সাড্ডি গ্রামের  পেশায় দিনমজুর অনন্ত কুমারের সাত মাসের শিশুকন্যা পুনমকে পেট খারাপ ও বমির কারণে দুদিন আগে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। এরপর কুমার টাকাপয়সা জোগাড়ের জন্য হাসপাতালে থাকতে পারেননি। মেয়ের দেখাশোনার ভার শ্যালক ব্রিজমোহনের ওপর দিয়ে যান।
ব্রিজমোহন বলেছেন, গত সোমবার ভাগ্নীর মৃত্যু হয়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে বারংবার অনুরোধ করা সত্ত্বেও মৃতদেহ নিয়ে যাওয়ার জন্য কোনও গাড়ির ব্যবস্থা করা হয়নি। শেষপর্যন্ত একটা সাইকেল ভাড়া করে দশ কিলোমিটার পথ পেরিয়ে ভাগ্নীর দেহ নিয়ে গ্রামে পৌঁছন তিনি।
এ ঘটনা সম্পর্কে কৌশাম্বির মুখ্য মেডিক্যাল আধিকারিক বলেছেন, ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। তদন্ত রিপোর্ট পাওয়ার পর দোষীদের কঠোর শাস্তি দেওয়া হবে।
হাসপাতাল সূত্রে দাবি, তেলের জন্য তো বরাদ্দ নেই। তাই অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা করা যায়নি।  জেলাশাসক মণীশ কুমার জানিয়েছেন, কর্তব্যরত চিকিত্সক ও অ্যাম্বুলেন্স চালকের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে।