নয়াদিল্লি: ভিভিআইপি চপার কেলেঙ্কারিই শুধু নয়, মনে করা হচ্ছে, ইউপিএ আমলে প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত আরও একটি দুর্নীতি হয়েছিল। জানা যাচ্ছে, ২০০৮-এ প্রথম ইউপিএ সরকার ৩টি ইএমবি-১৪৫ জেটের জন্য ব্রাজিলীয় বিমান প্রস্তুতকারী সংস্থা এমব্রায়েরের সঙ্গে ২০৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের চুক্তি করে। কিন্তু এ জন্য এমব্রায়ের নাকি মোটা টাকা ঘুষ দেয় ইংল্যান্ডের এক প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত দালালকে। ভারতীয় আইন অনুযায়ী, প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত ক্ষেত্রে এ ধরনের দালাল বা আইনবহির্ভূত এজেন্ট ব্যবহার নিষিদ্ধ।

প্রতিরক্ষা মন্ত্রক বিষয়টি নিয়ে ব্যাখ্যা চেয়েছে এমব্রায়েরের কাছে। ১৫দিনের মধ্যে তাদের সবকিছু বিশদে জানাতে হবে। এর মধ্যে প্রতিরক্ষা মন্ত্রক ও ডিআরডিও তাদের কাছে থাকা এই সংক্রান্ত যাবতীয় ফাইল বিশ্লেষণ করে দেখবে, আইনবহির্ভূত কিছু আছে কিনা।

২,৫২০ কোটি টাকার ডিআরডিও-র ওই প্রকল্পে ৩টি ইএমবি-১৪৫ জেট ভারতীয় বায়ুসেনার হাতে আসার কথা। ২০১১-য় ডিআরডিও-র হাতে একটি বিমান এসে পৌঁছেছে। বাকিদুটি পরে আসবে।

এক ব্রাজিলীয় সংবাদপত্র জানিয়েছে, মার্কিন বিচার মন্ত্রক ২০১০ থেকেই ওই এমব্রায়ের চুক্তি তদন্ত করছে। এই চুক্তি সম্পন্ন করতে যেভাবে ডমিনিকান রিপাবলিকের সঙ্গে একটি চুক্তি সারা হয়েছে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে তারা। এমব্রায়েরের কাছ থেকে ৩.৫ মিলিয়ন ডলার ঘুষ নেওয়ার জন্য ধরা হয়েছে ডমিনিকান রিপাবলিকের এক প্রাক্তন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী সহ চারজনকে। তদন্ত এড়াতে পারেননি ৩জন এমব্রায়ের কর্তাও। বিষয়টি নিয়ে তদন্তে নেমেছে ব্রাজিল সরকার।

ব্রাজিল সরকারের সঙ্গে এমব্রায়েরের এক পুরনো কর্মী এ ব্যাপারে চুক্তি সেরেছেন। ভারতের সঙ্গে এমব্রায়েরের জেট বিক্রির চুক্তি নিয়ে বিশদে সরকারকে জানাবেন তিনি, বদলে তাঁর বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেবে না তারা। তবে ওই প্রতিরক্ষা চুক্তির দুর্নীতি সংক্রান্ত বিশদ তথ্য এখনও হাতে আসেনি। যতক্ষণ না ইংল্যান্ডের ওই দালালের পরিচয় জানা যাচ্ছে ও তাঁকে ঘুষ দেওয়ার বিষয়টি প্রমাণিত হচ্ছে, ততক্ষণ বিষয়টি সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা করা সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন এক এমব্রায়ের কর্তা। তাঁর বক্তব্য, প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে ভারতে বিশাল বাজার রয়েছে, তাঁরা সেই বাজার ধরতে চান। এ জন্য তাঁদের মূল প্রতিযোগিতা আমেরিকার সঙ্গে।

ব্রাজিলের সাও পাওলোর এমব্রায়ের বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ বিমান প্রস্তুতকারী সংস্থা। একইসঙ্গে এরা বানায় কমার্শিয়াল, প্রাইভেট ও মিলিটারি জেট। ভারতেও এদের চোখে পড়ার মত উপস্থিতি রয়েছে।