নয়াদিল্লি: ২৫ সেপ্টেম্বরই নতুন প্রাইভেসি পলিসি চালু করছে হোয়াটসঅ্যাপ। তার প্রাক্কালে শুক্রবার এক গভীর তাত্পর্যপূর্ণ রায়ে দিল্লি হাইকোর্ট দ্রুত মেসেজ আদানপ্রদানকারী জনপ্রিয় সফটওয়ারটিকে নির্দেশ দিয়েছে, তারা ২৫ সেপ্টেম্বর অর্থাত নতুন গোপনীয়তা রক্ষা আইন কার্যকর হওয়ার দিন পর্যন্ত ইউজার অর্থাত্ ব্যবহারকারীদের কোনও তথ্য ফেসবুককে দিতে পারবে না, ফেসবুকের সঙ্গে শেয়ার করতে পারবে না।

প্রধান বিচারপতি জি রোহিনী ও বিচারপতি সঙ্গীতা ধিংড়া শেহগালকে নিয়ে গঠিত দিল্লি হাইকোর্টের বেঞ্চ ‘ব্যবহারকারীদের স্বার্থ রক্ষা’য় হোয়াটসঅ্যাপকে জানিয়ে দিয়েছে, ২৫ তারিখের আগে যারা ওই পরিষেবা ছেড়ে দেবেন, তাঁদের যাবতীয় তথ্য মুছে ফেলতে হবে, তা সোস্যাল নেটওয়ার্কিং সাইট ফেসবুক বা তার গ্রুপের কোম্পানিদের দেওয়া চলবে না। আর যাঁরা হোয়াটসঅ্যাপের ব্যবহার চালিয়ে যাওয়াই মনস্থ করবেন, ২৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তাঁদের ব্যাপারে কোনও তথ্যও ফেসবুকের সঙ্গে বিনিময় করা থেকে বিরত থাকতে হবে ওই মেসেজ বিনিময়কারী অ্যাপটিকে।

হোয়াটসঅ্যাপ আগে আদালতে জানিয়েছিল, কোনও ব্যবহারকারীর অ্যাকাউন্ট বাদ অর্থাত ডিলিট হয়ে গেলে তাদের সার্ভারেও সেই ব্যক্তির কোনও তথ্য আর থাকে না। কিন্তু নতুন পলিসিতে তারা এই পরিষেবা ব্যবহারকারীদের যাবতীয় গোপনীয় তথ্য ফেসবুকের সঙ্গে শেয়ার করবে বলে অভিযোগ করেছেন কারমান্য সিংহ সারিন ও শ্রেয়া শেঠি নামে দুই পিটিশনকারী। জনস্বার্থ পিটিশন দাখিল করে লন্ডনের ইম্পিরিয়াল কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র কারমান্য ও অ্যামিটি-র  ফাইনাল ইয়ারের আইনের ছাত্রী শ্রেয়া হোয়াটসঅ্যাপের নতুন প্রাইভেসি পলিসিকে চ্যালেঞ্জ করেন। এই পলিসিতে ব্যবহারকারীদের মৌলিক অধিকার ক্ষুন্ন হবে বলে দাবি করেন তাঁরা।

তাঁদের পিটিশনের পরিপ্রেক্ষিতেই আজ ১৫ পৃষ্ঠার রায়ে বেঞ্চ কেন্দ্র ও টেলিকম রেগুলেটরি অথরিটি অব ইন্ডিয়া (ট্রাই)-কেও খতিয়ে দেখতে বলেছে, হোয়াটসঅ্যাপের মতো ইন্টারনেট বার্তা দেওয়া-নেওয়া করা পরিষেবাগুলিকে তাদের বিধিবদ্ধ নিয়ন্ত্রণ, নজরদারির আওতায় নিয়ে আসা যায় কিনা।

আদালতের নির্দেশকে ‘হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহারকারীদের স্বার্থরক্ষায় যুগান্তকারী পদক্ষেপ’ আখ্যা দিয়েছেন আবেদনকারীদের কৌঁসুলি প্রতিভা এম সিংহ। তিনি বলেছেন, নিঃসন্দেহে ওদের পলিসি ধাক্কা খেল। এবার আদালতের নির্দেশ মাথায় রেখে পলিসিতে বদল আনতে হবে হোয়াটসঅ্যাপকে। ভবিষ্যতে তাদের গ্রাহককে জানাতে হবে যে, তাঁদের যাবতীয় তথ্য ফেসবুকের সঙ্গে শেয়ার করা হবে। সেটা জানার পরও কেউ যদি তা শেয়ার করতে দেন, তাহলে ঠিক আছে।

বেঞ্চ বলেছে, তারা এই নির্দেশ দিচ্ছে কেননা হোয়াটসঅ্যাপ গোড়ায় পরিষেবা শুরু করার সময় ব্যবহারকারীদের তথ্য পুরোপুরি গোপন, সুরক্ষিত রাখার  ব্যবস্থা নিয়েছিল। তাছাড়া সুপ্রিম কোর্টে একজন মানুষের গোপনীয়তা রক্ষার অধিকার সংক্রান্ত ইস্যুটির ফয়সালা এখনও হয়নি।