চামোলি(উত্তরাখণ্ড): ফিরল ৮ বছর আগের কেদারনাথের ভয়াবহ স্মৃতি। ফের মেঘভাঙা বৃষ্টিতে উত্তরাখণ্ডে তুষারধস। নিখোঁজ প্রায় দেড়শো জন, জানাল উত্তরাখণ্ড প্রশাসন।


উত্তরাখণ্ডের চামোলি জেলায় একটি হিমবাহ ভেঙে গোটা এলাকায় ব্যাপক তুষারধস নেমে আসে। ধসের ফলে প্লাবিত অলকানন্দা ও ধৌলিগঙ্গা নদী।


উত্তরাখণ্ড প্রশাসনের দাবি,  মেঘভাঙা বৃষ্টির জেরে ভেঙে যায় নন্দাদেবী হিমবাহ। তার জেরেই এত বড় বিপর্যয়। ধৌলিগঙ্গার দুটি নির্মীয়মাণ বাঁধে ফাটল ধরেছে, প্লাবিত জোশীমঠ। ভাঙল নন্দাদেবীর হিমবাহ। ভেসে গেল দুটি সেতু।


তুষারধস এসে আছড়ে পড়ে নির্মীয়মাণ ঋষিগঙ্গা ও তপোবন জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের ওপর। তপোবনের রাইনি এলাকায়, তুষারধসের অভিঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত ঋষিগঙ্গা বিদ্যুৎ প্রকল্প।


আচমকা বাড়ল ধৌলিগঙ্গা নদীর জলস্তর। চামোলি জেলার তপোবনেও ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, বেশ কয়েকটি হিমবাহেরও ক্ষতি হয়েছে। আনা হয়েছে বেশ কয়েকটি হেলিকপ্টার।





ঘটনাস্থলে বিপর্যয় মোকাবিলার চারটি বিশেষ দল পাঠানো হয়েছে। খালি করা হচ্ছে আশপাশের গ্রাম, নিরাপদ দূরত্বে সরানো হচ্ছে স্থানীয় বাসিন্দাদের। উদ্ধারকার্যে ইতিমধ্যেই নেমে পড়েছে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী, রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী ও ইন্দো-তিব্বতীয় সীমান্ত পুলিশের টিম।


পর্যটকদের ভরা মরশুমে হরিদ্বার-হৃষিকেশে গঙ্গার জলস্তর বাড়ার আশঙ্কা। দেরাদুনেও জারি করা হয়েছে হাই অ্যালার্ট। বিষ্ণুপ্রয়াগ, জোশীমঠ, কর্ণপ্রয়াগ, রুদ্রপ্রয়াগ, ঋষিকেশ ও হরিদ্বারে সতর্কতা জারি করা হয়েছে।


কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে বিপর্যয়ের কথা জানালেন উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী। উত্তরাখণ্ডে তুষার-বিপর্যয়ের বিষয়ে উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। সমস্ত রকম সহায়তায় আশ্বাস দেয় কেন্দ্র। তৈরি রাখা হয় বায়ুসেনাকে।









জারি করা হয়েছে হেল্পলাইন নম্বর-- হেল্পলাইন নম্বর : ৯১১৩৫২৪১০১৯৭। হেল্পলাইন নম্বর : ৯১১৮০০১৮০৪৩৭৫। হেল্পলাইন নম্বর : ৯১৯৪৫৬৫৯৬১৯০।


মানুষকে আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী ত্রিবেন্দ্র সিংহ রাওয়াত। একইসঙ্গে ভুয়ো খবর প্রচার করা থেকে বিরত থাকার আবেদন জানিয়েছেন। তিনি জানান, রাজ্য ও জেলা প্রশাসন সব ধরনের ব্যবস্থাগ্রহণ করছে।


২০১৩ সালের ১৭ জুন, লাগাতার বৃষ্টির ফলে উত্তরাখণ্ডের চোরাবারি হৃদ উপচে হড়পা বান নেমে এসে উপত্যকা ভাসিয়ে দেয়। জলের সঙ্গে প্রচুর পরিমাণ কাদা-মাটি, পাথর মিশে তা প্রবল শক্তি সঞ্চয় করে। হড়পা বানের পথে যা যা এসেছিল-- মানুষ থেকে শুরু করে গবাদি পশু ও ঘরবাড়ি-- সবকিছু ভেসে বেরিয়ে যায়।


জানা যায়, ১৩-১৭ জুন লাগাতার বৃষ্টির ফলে চোরাবারি হিমবাহ গলে পড়ে। এর ফলে, মন্দাকিনী নদীর বাঁধ ভেঙে যায়। প্রবল গতিতে জল নেমে আসে। প্লাবিত হয় উত্তরাখণ্ড, হিমাচল প্রদেশ ও পশ্চিম নেপালের একাংশ। সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয় কেদারনাথ। বন্যায় প্রায় ৫ হাজার মানুষ প্রাণ হারান।