নয়াদিল্লি: তিন তালাক বিলের বিরোধিতা শাসক বিজেপির শরিক জেডি (ইউ)-এর। সংসদের আসন্ন অধিবেশনে বিলটি পেশ হতে পারে। কিন্তু শাসক দলের উদ্দেশ্যে নীতীশ কুমারের দলের বার্তা, ব্যাপক আলোচনা ও মতামত আদানপ্রদান ছাড়া কোনও মতই মুসলিমদের ওপর চাপিয়ে দেওয়া চলবে না। দলের মুখপাত্র কে সি ত্যাগী এক বিবৃতিতে বলেছেন, জেডি (ইউ) অভিন্ন দেওয়ানি বিধি নিয়ে আগের অবস্থানেই অটল। দেশটা দাঁড়িয়ে আছে বিভিন্ন ধর্ম ও জনগোষ্ঠীর জন্য নির্ধারিত আইন ও পরিচালন নীতির সূক্ষ্ম ভারসাম্যের ওপর। পূর্ণাঙ্গ আলোচনা না করে কোনও মতামতই চাপিয়ে দেওয়া উচিত নয়।
বিবৃতিতে যদিও সরাসরি তিন তালাক বিলের প্রসঙ্গ টানা হয়নি, কিন্তু জেডি(ইউ)সূত্রেই বলা হয়েছে, অভিন্ন দেওয়ানি বিধি নিয়ে তাদের অবস্থানের মূলে আছে প্রস্তাবিত তিন তালাক বিল, যেহেতু বিজেপি প্রায়ই বলে, মুসলিম সমাজে চালু তাত্ক্ষনিক ডিভোর্স প্রথাকে অপরাধের তকমা দেওয়া বিভিন্ন ধর্মীয় মতাবলম্বী মানুষের মধ্যে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি চালুর লক্ষ্যে প্রথম পদক্ষেপ হবে।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির প্রথম বারের মেয়াদেও জেডি (ইউ) তিন তালাক বিলের বিরোধিতা করেছিল। সেই অবস্থানেই অনড় থাকছে তারা। ত্যাগী বলেছেন, আমাদের বক্তব্য, অভিন্ন দেওয়ানি বিধি নিয়ে নানা ধর্মীয় গোষ্ঠীর সঙ্গে বিস্তারিত, গভীর আলোচনা প্রয়োজন। এই প্রক্রিয়ার অভাবে দীর্ঘদিন ধরে চালু থাকা বিয়ে-থা, ডিভোর্স, দত্তক নেওয়া, সম্পত্তির অধিকার, মালিকানা ও উত্তরাধিকারের মতো জটিল বিষয় সংক্রান্ত ধর্মীয় রীতি-প্রথাকে সঠিক সময় না হতেই তড়িঘড়ি বদলানোর চেষ্টা কখনই করা উচিত নয়।
জেডি (ইউ)এর দাবি, আইনটা যাতে গ্রহণযোগ্য, আরও বিস্তারিত, সামগ্রিক হয়, সেজন্য সব পক্ষের মতামত শুনে আস্থা অর্জন করতে হবে।
এ প্রসঙ্গে ২০১৭ সালে আইন কমিশনকে লেখা নীতীশ কুমারের চিঠিটিও বিবৃতিতে জুড়ে দিয়েছে জেডি (ইউ), যাতে তিনি এ নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণের আগে বিতর্ক, ব্যাপক আলোচনার দাবি করেছিলেন।
মোদি সরকারের প্রথম দফার শাসনে তিন তালাক বিলটি সংসদে পাশ করানোর চেষ্টা ধাক্কা খেয়েছিল রাজ্যসভায় তার হাতে প্রয়োজনীয় সদস্য সংখ্যা না থাকায়। লোকসভায় সরকারের পূর্ণ সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকলেও রাজ্যসভায় বিলটি পাশ করাতে এনডিএ-র বাইরের দলগুলির সমর্থন তার প্রয়োজন হবে। এই প্রেক্ষাপটে শরিক জেডি (ইউ)য়ের বিরোধিতায় সরকারের কাজটা কঠিন হতে পারে বলে মত পর্যবেক্ষক মহলের।