লখনউ: বিধানসভা নির্বাচনে বিশ্রী হারের পর এবার সমাজবাদী পার্টিতে বিভিন্ন নেতা-কর্মীর মধ্যে অখিলেশ যাদবের নেতৃত্ব নিয়ে অসন্তোষ ও মতবিরোধ মাথাচাড়া দিতে শুরু করেছে। দলের একপক্ষের মতে, মুলায়ম সিংহ যাদবের নেতৃত্বেই ফিরে যাওয়ার সময় এসেছে।


৪০৩ আসন বিশিষ্ট বিধানসভায় সপা কেবলমাত্র ৪৭টি দখল করতে সমর্থ হয়েছে। ২০১২ সালের নির্বাচনে সদ্যপ্রাক্তন শাসক দলের আসন সংখ্যা ছিল ২২৪। অর্থাৎ, গতবারের তুলনায় ১৭৭ আসন কম।


দলের এই ভরাডুবিতে মুলায়ম নিজে ছেলে অখিলেশের ঘাড়ে পুরো দোষ চাপাতে অস্বীকার করলেও, প্রবীণ নেতার ঘনিষ্ঠরা কিন্তু ভিন্নমত পোষণ করছেন। মুলায়ম ও শিবপাল ঘনিষ্ঠ নেতারা দাবি তুলেছেন, অখিলেশের উচিত নেতৃত্বভার বাবাকে হস্তান্তর করা।


দলের এক প্রবীণ নেতা বলেন, অখিলেশজি নির্বাচন পর্যন্ত দলের নেতৃত্বভার চেয়েছিলেন। তিনি তা পরীক্ষা হিসেবে নিয়েছিলেন। এখন যখন তিনি ডাহা ফেল করেছেন, তাঁর উচিত, নেতাজির কাছে দলের ব্যাটন তুলে দেওয়া।


প্রসঙ্গত, মুলায়মের তীব্র আপত্তি সত্ত্বেও কংগ্রেসের সঙ্গে গাঁটছড়া করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন অখিলেশ। বিদায়ী মুখ্যমন্ত্রীর লক্ষ্য ছিল, প্রথমত পারিবারিক দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে চলে আসায় দলের ভাবমূর্তিতে যে দাগ লেগেছে, তা ঠিক করা। আর দ্বিতীয়ত, রাজ্যের ১৮ শতাংশ মুসলিম ভোট বিজেপির কাছ থেকে নিজেদের দিকে টানা।


কিন্তু, বাস্তবে ঘটেছে ঠিক তার উল্টো। নির্বাচনে সপা-কং একেবারে ধরাশায়ী হয়েছে। ওই নেতা বলেন, অযোধ্যা-ঝড়ের (১৯৯২) পর যেমনভাবে দলকে সামলেছিলাম, তেমনভাবে এবারও (মোদী-ঝড়) সামলাব। তিনি এ-ও দাবি করেন, অখিলেশের ভবিষ্যৎও সুনিশ্চিত রাখা হবে। কিন্তু, সবার আগে দলকে মুলায়ম সিংহের পুরনো মডেলেই ফিরে যেতে হবে।


নেতার দাবি, নির্বাচনের ফলে দেখা গিয়েছে, সপা-র টিকিটে এবারের নির্বাচনে যাঁরা জয়ী হয়েছেন, কয়েকজনকে বাদ দিয়ে অধিকাংশ প্রার্থীকে বেছেছিলেন মুলায়ম ও শিবপাল। এই বিষয়টিকে হাতিয়ার করে দলের আরেক নেতা মধুকর জেটলি জানান, মুলায়মের হারানো সম্মান পুনরুদ্ধারের সময় এসেছে।


দলের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সদস্য তথা প্রাক্তন মুখপাত্র সিপি রাই আবার রামগোপাল যাদবের তীব্র সমালোচনা করেন। মুলায়ম-অখিলেশ দ্বন্দ্বে ছেলের পক্ষ নিয়েছিলেন রামগোপাল যাদব। রাইয়ের কটাক্ষ, উনি এখন দলের চাণক্য হয়েছেন। উনি অন্যকে যা উপদেশ দিয়ে থাকেন, ওনার উচিত আগে নিজে অনুসরণ করা।