চণ্ডীগড়: হরিয়ানার বিজেপি সভাপতি সুভাষ বারালার ছেলে বিকাশ বারালার বিরুদ্ধে পিছু নেওয়ার অভিযোগ করা তরুণী তাঁর অভিজ্ঞতার কথা শেয়ার করলেন ফেসবুকে। দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য চণ্ডীগড় পুলিশকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন তিনি।
তিনি লিখেছেন, রাত সোয়া বারোটা নাগাদ সেক্টর ৮ মার্কেট থেকে বাড়ির পথে যাচ্ছিলেন তিনি। গাড়ি চালাতে চালাতে ফোনে এক বন্ধুর সঙ্গে কথা বলছিলেন, হঠাৎ চোখে পড়ে, একটি সাদা এসইউভি গাড়ি তাঁকে ফলো করছে। তিনি খেয়াল করার সঙ্গে সঙ্গে গাড়িটি তাঁর গাড়ির পাশে পাশে চলতে শুরু করে।
ওই এসইউভিতে দুজন ছিল। তারা যেভাবে মাঝরাতে রাস্তায় একা মেয়েকে উত্যক্ত করছিল, তাতে পরিষ্কার, দারুণ মজা পাচ্ছিল তারা। এমনভাবে আচমকা গাড়ি ঘোরাচ্ছিল, মনে হচ্ছিল, তাঁর গাড়িতে ধাক্কা দেবে।
ভয় পেয়ে গিয়ে তিনি একটু নিরাপদ, মানুষজন চলাচল করা রাস্তার দিকে গাড়ি ঘোরানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু ওই এসইউভি তাঁর রাস্তা আটকে দেয়, ফলে সোজা যাওয়া ছাড়া তাঁর উপায় ছিল না। আবার তিনি গাড়ি ঘোরানোর চেষ্টা করেন, এবারেও তাঁকে আটকে দেয় পিছু নেওয়া গাড়িটি। একজন গাড়ি থেকে নেমে এসে তাঁর দিকে হেঁটে আসতে থাকে। সঙ্গে সঙ্গে উল্টোদিকে গাড়ি ঘুরিয়ে নেন তিনি, তারা ধরে ফেলার আগেই ডান দিকে ঢুকে যান।
এই সময়েই তিনি ফোন করেন ১০০ নম্বরে, পুলিশকে। পুলিশ বলে, তখনই আসছে তারা। ১৫ সেকেন্ডের মত আর এসইউভিটিকে দেখতে না পাওয়ায় তাঁর মনে হয়, তারা বোঝহয় তাঁর পিছু নেওয়া বন্ধ করেছে। কিন্তু একটু পরেই বুঝতে পারেন, তাঁর ধারণা ভুল ছিল।
সোজা রাস্তায় অন্তত ৫-৬ কিলোমিটার তাঁর গাড়ির পাশাপাশি চলে ওই এসইউভি। ১০-১৫ সেকেন্ড পরপর তাঁর গাড়ি থামানোর চেষ্টা করে। বারবার তারা চেষ্টা করছিল তাঁর গাড়িকে একটা পাশে ঠেলে দিতে, যাতে এগনোর বা পিছনোর রাস্তা না থাকে। কিন্তু বারবারই কোনওভাবে নিজের পথ করে বেরিয়ে যাচ্ছিলেন তিনি।
ততক্ষণে প্রচণ্ড ভয়ে তাঁর হাত কাঁপছে, পিঠে ব্যথা শুরু হয়েছে, চোখ দিয়ে জল পড়ছে। বুঝতে পারছিলেন না, আদৌ বাড়ি ফিরতে পারবেন কিনা। ফাঁকা রাস্তায় ট্রাফিক লাইটের সামনে আবার তাঁর পথ আটকায় তারা। কোনওমতে গাড়ি পুরো উল্টোদিকে ঘুরিয়ে তিনি বেরিয়ে যান, বারবার হর্ন দিচ্ছিলেন, যাতে গভীর রাতে রাস্তায় যে কটা গাড়ি রয়েছে, তারা তাঁকে খেয়াল করে।
এই সময় এসইউভির যাত্রীরা তাঁর গাড়ির জানলায় জোরে জোরে ধাক্কা দিতে থাকে, দরজা খোলার চেষ্টা করে। তখনই তিনি দেখতে পান, পুলিশের ভ্যান চলে এসেছে। ক্রমাগত হর্ন দিতে দিতে যাওয়া তাঁর গাড়িটি দেখেই চিনতে পারে তারা। তখনই পুলিশ এসে ওই দুজনকে গ্রেফতার করে।
ওই তরুণী বলেছেন, চণ্ডীগড় ভারতের অন্যতম নিরাপদ শহর বলে পরিচিত, প্রত্যেক লাইটপোস্টে ক্যামেরা আছে, ২০০ মিটার অন্তর রছে পুলিশ। তারপরেও ওই যুবকরা ভাবছিল, তাঁর গাড়িতে উঠে পড়া যায় বা তাঁকে টেনে নিয়ে যাওয়া যায় তাঁদের গাড়িতে। তিনি ভাগ্যবতী, তিনি কোনও সাধারণ মানুষের মেয়ে নন, আইএএস অফিসারের মেয়ে, তাঁর বাবার প্রভাব প্রতিপত্তি রয়েছে। তিনি ভাগ্যবতী, তাঁর ধর্ষণের পর নিহত দেহটি কোনও খালে ভাসছে না।
তাঁর কথায়, চণ্ডীগড়ে যদি এমনটা ঘটে, দেশের যে কোনও অংশে ঘটতে পারে। অতএব মেয়েরা সাবধান হন।
মনে হয়েছিল ধর্ষণ হবে, খুন হয়ে যাব, মাঝরাতে চণ্ডীগড়ের রাস্তায় বিকাশ বারালা যাঁর পিছু নেন সেই তরুণীর অভিজ্ঞতা
ওয়েব ডেস্ক, এবিপি আনন্দ
Updated at:
06 Aug 2017 11:42 AM (IST)
দেশ (nation) লেটেস্ট খবর এবং আপডেট জানার জন্য দেখুন এবিপি লাইভ। ব্রেকিং নিউজ এবং ডেইলি শিরোনাম দেখতে চোখ রাখুন এবিপি আনন্দ লাইভ টিভিতে ।
- - - - - - - - - Advertisement - - - - - - - - -