নয়াদিল্লি: একের পর এক ট্রেন দুর্ঘটনা ঘটনায় কাঠগড়ায় রেল। এই পরিস্থিতিতে রেল-নিরাপত্তায় একগুচ্ছ প্রস্তাব দিল বিশ্ব ব্যাঙ্ক। যার মধ্যে রয়েছে—রেলের কোচের বিশেষ রং, নিয়মিত ট্র্যাক রক্ষণাবেক্ষণ ও কর্মীদের পোশাকে-পরিবর্তন।


চলতি সপ্তাহে রেল নিয়ে একটি বিশেষ রিপোর্ট প্রকাশ করেছে ওয়ার্ল্ড ব্যাঙ্ক। রেলমন্ত্রককে দেওয়া ‘স্ট্রেনদেনিং সেফটি অন ইন্ডিয়ান রেলওয়েজ’ শীর্ষক ওই রিপোর্টে বিভিন্ন নিরাপত্তাজনিত বিষয়ের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে।


বিশ্ব ব্যাঙ্কের প্রস্তাব, প্রথম লক্ষ্য হওয়া উচিত প্রত্যেক ট্রেনের সামনে ‘ডিচ লাইট’ লাগানো। এই সুরক্ষা-বৈশিষ্ঠ্যর ফলে ট্রেনগুলির দৃশ্যমানতা বাড়বে।



একইসঙ্গে, ট্রেনগুলিকে উজ্জ্বল হলুদ রং করা। এতে দূর থেকে ট্রেনগুলিকে ভাল ভাবে বোঝা যাবে। বিশেষ করে, সন্ধ্যা বেলায়, যখন দৃশ্যমানতা আচমকা কমে আসে।


অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায়, লেভেল ক্রসিংয়ে ট্রেন ও অন্যান্য গাড়ির ধাক্কা লাগছে। বা পারাপার করার সময় মানুষ ট্রেনে কাটা পড়ছেন। একে রুখতে ক্রসিংয়ে বিশেষ ‘ক্রস-হ্যাচ প্যাটার্ন’ মার্কিংয়ের ব্যবস্থা করা উচিত বলে জানিয়েছে বিশ্ব ব্যাঙ্ক।


ট্রেনে আগুন লাগার ঘটনা রুখতে বিশ্ব ব্যাঙ্কের প্রস্তাব, প্রত্যেক ট্রেনে অগ্নি-নির্বাপক ব্যবস্থা রাখতে হবে। পাশাপাশি, রেলকর্মীদের জন্য উজ্জ্বল পোশাকের প্রস্তাব দিয়েছে বিশ্বব্যাঙ্ক। তারা জানিয়েছে, রেলকে নিশ্চিত করতে হবে যাতে কর্মীরা সর্বক্ষণ ওই বিশেষ পোশাক পরেই কাজ করেন।



তেজস ট্রেন।এই ধরনের উজ্জ্বল রং করার প্রস্তাব দিয়েছে বিশ্বব্যাঙ্ক

আগামী ২ বছরের মধ্যে কার্যকর করার সুপারিশ করে বিশ্ব ব্যাঙ্ক তাদের প্রস্তাবে আরও জানিয়েছে, রক্ষণাবেক্ষণের জন্য প্রতি সপ্তাহে একটি নির্দিষ্ট সময় বরাদ্দ করা।


প্রস্তাব অনুযায়ী, ট্রেন দুর্ঘটনার তদন্তের দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিকদের বিশেষ প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা। আগে জানতে হবে, দুর্ঘটনার মূল কারণ ঠিক কী।


পাশাপাশি, প্রতি সপ্তাহে অন্তত চার-ঘণ্টা সময় বরাদ্দ রাখতে হবে মেইন লাইন পরীক্ষা ও রক্ষণাবেক্ষণ করার জন্য। টার্মিনাল অপারেশন্সের সেফটি পারফরম্যান্সের পর্যালোচনা করতে হবে।


রেলমন্ত্রককে একটি স্বাধীন রেল সেফটি রেগুলেটর নিয়োগ করার সুপারিশ করেছে ওয়ার্ল্ড ব্যাঙ্ক। সেখানে রেল সেফটি কমিশনারকে আরও ক্ষমতা দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।


প্রসঙ্গত, গত এপ্রিল মাসে রেল নিরাপত্তা নিয়ে একটি সমীক্ষা করাতে বিশ্বব্যাঙ্কের দ্বারস্থ হয়েছিলেন সুরেশ প্রভু। এছাড়াও, বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার থেকেও রেল সুরক্ষা, নিরাপত্তা ও পরিকাঠামো উন্নয়ন নিয়ে তাদের মতামত চেয়ে পাঠান।