পুনে: পুনেতে ভিমা-কোরেগাঁও যুদ্ধ স্মরণে আয়োজিত ‘এলগার পরিষদ’-এ ভাষণ দিতে গিয়ে বিজেপির প্রতি চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিলেন গুজরাতের সদ্য  নির্বাচিত বিধায়ক তথা দলিত নেতা জিগনেশ মেভানি। তিনি বলেছেন, বিজেপি সংবিধান বদলের চেষ্টা করলে তাঁরা সর্বশক্তি দিয়ে রুখবেন। জিগনেশ বলেছেন, বিজেপি সংবিধানে পরিবর্তন আনার চেষ্টা করলে তিনি ও সম-মনোভাবাপন্নরা মিলে সেই চেষ্টা ভেস্তে দেবেন।

অনুষ্ঠানে জিগনেশ ছাড়াও জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রনেতা উমর খালিদ, প্রয়াত রিসার্চ স্কলার রোহিত ভেমুলার মা রাধিকা, ভীম আর্মির সভাপতি বিনয় রতন সিংহ এবং বি আর অম্বেডকরের নাতি প্রাক্তন সাংসদ প্রকাশ অম্বেডকরও উপস্থিত ছিলেন।

জিগনেশ বলেছেন, গুজরাতের সদ্যসমাপ্ত বিধানসভা ভোটে দলিত, সংখ্যালঘু, কৃষক ও সমাজের প্রান্তিক শ্রেণীর মানুষর বিজেপির অহং ধূলিস্যাত করে দিয়েছে। ভোটে বিজেপির আসন সংখ্যা ৯৯ তেই আটকে গিয়েছে।

সম্প্রতি কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অনন্ত কুমার হেগড়ে সংবিধানের বদল সংক্রান্ত বিতর্কিত মন্তব্য করেছিলেন। ওই মন্তব্যের প্রসঙ্গ টেনে জিগনেশ কেন্দ্রের শাসক দলকে সংবিধান বদলের চেষ্টা ও তা করে দেখানোর চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, 'যদি ভারতের গণতান্ত্রিক কাঠামো ও সংবিধান বদলের কথা আপনারা ভাবেন, তাহলে তা সুরক্ষিত রাখার শক্তি আমাদের রয়েছে। তা করতে গিয়ে সমস্ত সমমনোভাবাপন্ন মানুষ, প্রতিষ্ঠান, সংগঠন নিজেদের মতপার্থক্য ভুলে ২০১৯-র নির্বাচনে বিজেপির বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে লড়াই করবে'।

জিগনেশ বলেছেন, গুজরাতে বিজেপি ১৫০ টি আসন জেতার কথা বলেছিল। কিন্তু সেই স্বপ্ন ভেস্তে গিয়েছে। ২০১৯-এও একযোগে লড়লে বিজেপির আসন দুই সংখ্যায় নামিয়ে আনা যাবে।

গুজরাতের দলিত বিধায়ক আরও বলেছেন, 'কর্নাটক, মধ্যপ্রদেশ ও রাজস্থানের নির্বাচন এগিয়ে আসছে। এই লড়াইয়ের ক্ষেত্রে গরিব-পন্থী মানুষকে একজোট হওয়া উচিত। ভোটে কে জিতবে, তাতে আমার কোনও আগ্রহ নেই। আমি শুধু চাই, বিজেপি হারুক। কারণ, ওরা মুসোলিনি-হিটলারের আদর্শ অনুসরণ করে'।

১৮১৮-র ১ জানুয়ারি ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির বাহিনী ও পেশোয়ার মধ্যে ভিমা-কোরেগাঁও যুদ্ধ হয়েছিল। ব্রিটিশদের বাহিনীতে ছিল প্রচুর সংখ্যায় দলিত সম্প্রদায় মাহারা  যোদ্ধা। যুদ্ধে পেশোয়া হেরে গিয়েছিলেন। দলিত নেতা ও চিন্তাবিদদের একাংশ ওই যুদ্ধে জয়কে ওই সময়ের উচ্চবর্ণের আধিপত্যের বিরুদ্ধে শোষিত শ্রেণীর জয় হিসেবে মনে করেন।