নয়াদিল্লি: বিভিন্ন জনমত সমীক্ষাতেই দেখা গিয়েছিল, উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে অন্যান্যদের তুলনায় অখিলেশ যাদব অনেকটাই এগিয়ে। এবারের বিধানসভা নির্বাচনে অখিলেশের পাল্টা মুখ হিসেবে কাউকে তুলে না ধরাটা বিজেপির সাফল্যের পথে অন্তরায় হয়ে দাঁড়াতে পারে বলে অনেকেই মনে করেছিলেন। কিন্তু শেষপর্যন্ত কাউকে মুখ্যমন্ত্রী পদে প্রার্থী হিসেবে তুলে না ধরার অ্যাডভান্টেজটা বিজেপি পেল বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ, উত্তরপ্রদেশে মুখ্যমন্ত্রী পদের লড়াইতে থাকা বিজেপি নেতারা প্রাণপনে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন প্রচারে। ফলে সমর্থকদের মধ্যেও  যথেষ্ট উত্সাহ সঞ্চার হয়। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মনোজ সিনহা শেষ দফার ভোটের আগে একটি সাক্ষাত্কারে কাউকে মুখ্যমন্ত্রী পদে তুলে না ধরার ফায়দার কার্যত এভাবেই ব্যাখ্যা দিয়েছিলেন।

১৯৯৬-র নির্বাচনে অটলবিহারী বাজপেয়ীকে প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী হিসেবে তুলে ধরে ভোটে লড়েছিল। এরপর থেকে যে কোনও ভোটেই কোনও একজনকে মুখ হিসেবে তুলে ধরে ভোটের প্রচারে নামাটা বিজেপি শিবিরে সাধারণত দস্তুর হয়ে উঠেছে। কিন্তু উত্তরপ্রদেশে এবারে সেই ধারায় ছেদ পড়েছিল।

এবার ভোটে বিপুল সাফল্য পাওয়ার পর মুখ্যমন্ত্রী কে হবেন, তা নিয়ে জল্পনা তুঙ্গে উঠেছে। ভোটের প্রচারের সময় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহের নামও আলোচনায় উঠে এসেছিল। রাজনাথও কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর দায়িত্ব ছেড়ে লখনউয়ের তখতে বসার ক্ষেত্রে অনাগ্রহের কথা জানাননি।

কিন্তু নতুন কাউকে মুখ্যমন্ত্রী করা হলে সেক্ষেত্রে জাতপাতের সমীকরণ ও ২০১৯-র লোকসভা নির্বাচনের কথা মাথায় রেখেই করতে পারে বিজেপি।

এবারের বিধানসভা নির্বাচনে অ-যাদব ওবিসি ও উচ্চবর্ণের ভোট নিজেদের ঝুলিতে টানার কৌশল নিয়েছিল বিজেপি। এই কৌশল সফলে হলে এই দুই শ্রেণীর মধ্য থেকে কোনও একজন মুখ্যমন্ত্রী হতে পারেন।

ওবিসি শ্রেণী থেকে মুখ্যমন্ত্রী পদের জন্য দুজনের নাম উঠে আসছে। দলের রাজ্য সভাপতি কেশব প্রসাদ মৌর্য এবং বরিলির সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সন্তোষ গাঙ্গোয়ার।

উচ্চবর্ণের প্রার্থীদের মধ্যে রয়েছেন কেন্দ্রীয় সংস্কৃতিমন্ত্রী মহেশ শর্মা।

টেলিকমমন্ত্রী তথা গাজিপুরের সাংসদ মনোজ সিংহও মুখ্যমন্ত্রী পদের লড়াইতে রয়েছেন। তিনি ভূমিহার সম্প্রদায়ের নেতা।

এছাড়াও দৌড়ে রয়েছে মধ্যপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী উমা ভারতী ও রাজ্যে দলের গুরুত্বপূর্ণ নেতা কলরাজ মিশ্রও। এই ব্রাহ্মণ নেতার লখনউ ও দিল্লিতে প্রশাসনিক ও পরিষদীয় অভিজ্ঞতা রয়েছে। এছাড়াও রয়েছেন গোরখপুরের সাংসদ যোগী আদিত্যনাথ।আরএসএসের একটা অংশের সমর্থন তাঁর পিছনে রয়েছে।