নয়াদিল্লি: আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ে (এএমইউ) ছাত্র ইউনিয়নের কার্য্যালয়ে কেন মহম্মদ আলি জিন্নার ছবি থাকবে, প্রশ্ন তুলে উপাচার্য তারিক মনসুরের কৈফিয়ত চেয়েছেন আলিগড়ের বিজেপি সাংসদ সতীশ গৌতম। উপাচার্যকে লেখা চিঠিতে তিনি জানতে চেয়েছেন, কেন জিন্নাকে অগ্রাধিকার, দেশের নামীদামী, প্রবাদপ্রতিম কোনও মনিষী পাওয়া গেল না? অনুগ্রহ করে এ ব্যাপারে আরও তথ্য জানুন। এর পিছনে কী যুক্তি রয়েছে, জানান। ভারতের কোথাও জিন্নার ছবি থাকা উচিত নয়। জেএনইউয়েরও উচিত রানা মহারানা প্রতাপ সিংহ ও স্যার সৈয়দ আহমেদের অবদানকে স্মরণ করা। বিশ্ববিদ্যালয় গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল ওঁদের।
যদিও এএমইউয়ের ছাত্র ইউনিয়নের প্রেসিডেন্ট ফয়সল হাসানের বক্তব্য, দেশভাগেরও বেশ কয়েক বছর আগে জিন্নার ওই ছবি টাঙানো হয়েছিল। সরকার আনুষ্ঠানিক ভাবে নির্দেশ পাঠালেই ছবিটি সরানোর ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তাহলে কেন সংসদে জিন্নার ছবি সরানো হয়নি, প্রশ্ন তোলেন তিনি। বলেন, দেশভাগের আগে জিন্নাকে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের আজীবন সদস্যপদ দেওয়া হয়েছিল। মহাত্মা গাঁধী, জওহরলাল নেহরুর মতো অন্যান্য ব্যক্তিত্বকেও আজীবন সদস্যপদ দেওয়া হয়, ওঁদের ছবিও রয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তারাও বলছেন, জিন্না বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন প্রতিষ্ঠাতা। বিশ্ববিদ্যালয়ে জিন্নার ওপর কিছু পড়ানো হয় না, যদিও তাঁকে তাঁদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শ্রদ্ধা, সম্মান করা হয়। মুসলিম লিগ পাকিস্তানের দাবি তোলার আগে তাঁকে আজীবন সদস্যপদ দেওয়া হয়েছিল। এমনকী দেশ স্বাধীন হওয়ার পরও জিন্নার ওই ছবিতে কোনও আপত্তি করেননি মহাত্মা গাঁধী, মৌলানা আজাদ, সর্বেপল্লী রাধাকৃষ্ণান, সি রাজাগোপালাচারী, জওহরলাল নেহরুর মতো শীর্ষ নেতারা।
এদিকে এএমইউয়ে জিন্নার ছবি থাকা নিয়ে বিজেপি এমপি-র আপত্তির মধ্যেই হরিয়ানার কংগ্রেস এমএলএ করন দালাল জিন্নাকে স্বাধীনতা সংগ্রামী আখ্যা দিলেন, বললেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে তাঁর ছবি থাকায় দোষের কিছুই নেই। তাঁর বক্তব্য, প্রত্যেকের ছবিকেই সম্মান করা উচিত। ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে যাঁরাই নেতৃত্ব দিয়েছেন, সেই সব নেতার প্রতিই শ্রদ্ধাশীল হওয়া উচিত আমাদের। হতে পারে কেউ পাকিস্তানের, কিন্তু স্বাধীনতার লড়াই তো একসঙ্গেই হয়েছিল। পাকিস্তানও তো শহিদ ভগত্ সিংহকে সম্মান করে।
দিনকয়েক আগে নিজেকে আরএসএস কর্মী বলে দাবি করে জনৈক আমির রশিদ এএমইউ ক্যাম্পাসে সঙ্ঘের শাখা-র আয়োজনের অনুমতি চান উপাচার্যের কাছে। যদিও তিনি জানিয়ে দেন, কোনও রাজনৈতিক দলের শিবির বা শাখা, সম্মেলন করার প্রস্তাব বিবেচনা করা হচ্ছে না। কেননা আমাদের ঐতিহ্যই হল, রাজনৈতিক দলকে ছাত্র ইউনিয়ন বা শিক্ষক সংগঠনের ভোটে অংশগ্রহণ করতে না দেওয়া। ক্যাম্পাসে কোনও রাজনৈতিক দলের প্রত্যক্ষ হস্তক্ষেপ এখানে কাঙ্খিত নয়।
সেই প্রেক্ষাপটেই জিন্নার ছবি নিয়ে বিতর্ক।
কেন আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ে জিন্নার ছবি? উপাচার্যের কৈফিয়ত চাইলেন বিজেপি এমপি, উনি স্বাধীনতা সংগ্রামী, দোষের কিছু নেই, দাবি হরিয়ানার কং বিধায়কের
Web Desk, ABP Ananda
Updated at:
01 May 2018 05:26 PM (IST)
দেশ (nation) লেটেস্ট খবর এবং আপডেট জানার জন্য দেখুন এবিপি লাইভ। ব্রেকিং নিউজ এবং ডেইলি শিরোনাম দেখতে চোখ রাখুন এবিপি আনন্দ লাইভ টিভিতে ।
- - - - - - - - - Advertisement - - - - - - - - -