কলকাতা: সুশান্ত সিংহ রাজপুতের মৃত্যুর পর বলিউডে স্বজনপোষণ ও পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ ঘিরে শোরগোল পড়ে গিয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় নেটিজেনদের নিশানায় বলিউডের বেশ কয়েকজন প্রথমসারির ব্যক্তিত্ব। এরইমধ্যে অভিনেত্রী তথা বিজেপি সাংসদ রূপা গঙ্গোপাধ্যায় বলেছেন, বলিউডের বিশেষ কয়েকজন ব্যক্তিত্ব, যাঁরা নির্লজ্জভাবে স্বজনপোষণ করে থাকেন, তাঁদের সিনেমা তিনি বয়কট করবেন।

রূপা গঙ্গোপাধ্যায় টেলিফোনে সংবাদসংস্থাকে বলেছেন, এরপর আমি নির্দিষ্ট কিছু লোকেদের সিনেমা দেখব না। কারণ, তাঁরা দেশকে একটা বার্তা দিয়েছেন যে, ছোট শহরগুলি থেকে ছেলে-মেয়েদের ইন্ডাস্ট্রিতে আসা উচিত নয়। সেখানে সর্বত্র থাকবে স্বজনপোষন। বাবা-মায়েরা অবশ্যই তাঁদের সন্তানদের সাহায্য করতে পারেন। কিন্তু এটা এমন পর্যায়ে পৌঁছে যাওয়া উচিত নয়, যা কাউকে কাউকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেবে।
গত প্রায় এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে সুশান্তের অকালমৃত্যুর ঘটনায় সিবিআই তদন্তের দাবি জানাচ্ছেন রূপা গঙ্গোপাধ্যায়। তাঁর ট্যুইটার টাইমলাইন জুড়ে রয়েছে হ্যাশট্যাগ সিবিআই ফর সুশান্ত।

রূপা গঙ্গোপাধ্যায় বলেছেন, কোনও সুইসাইড নোট পাওয়া যায়নি। তাঁর ঘরে কোনও চেয়ার বা টুল ছিল না, যার সাহায্য গলায় ফাঁস লাগাতে পারেন। এরপরও পুলিশ সিদ্ধান্তে পৌঁছে গেল যে, এটা আত্মহত্যা। দুর্ঘটনাবশত মৃত্যু না বলে পুলিশ বিবৃতি দিয়ে জানাল, এটা আত্মহত্যা। কয়েকদিন আগে এই ভাষ্যও তৈরি হয়ে যায় যে, তিনি অবসাদে ভুগছেন। আর এটাই আমাদের মনে বড় প্রশ্ন তুলে দিয়েছে। কোনও সুইসাইড নোট ছাড়াই এমনকি ময়নাতদন্তের আগেই পুলিশ কীভাবে এটাকে আত্মহত্যা বলল?

রূপা গঙ্গোপাধ্যায় বলেছেন, ফরেনসিক দল কেন ১৫ জুন তাঁর বাড়িতে গেল। পুলিশ বলছে যে, এক্ষেত্রে কোনও চক্রান্ত নেই। একদিন পরে ফরেনসিক দল পৌঁছল, এটাই বড় প্রশ্ন তুলে দেয়। শরীরে এত বেশি দাগ ছিল কেন? ছাদ থেকে গলায় ফাঁস লাগিয়ে ঝুলে পড়লেও শেষ ছবিতে যা দেখা গেছে, তাতে মুখে তার ছাপ পড়েনি। পুলিশ এখনও বাড়িটি সিল করেনি কেন? তাঁর কুকুর কোথায়?

তাঁকে খুন করা হয়েছে, এমনটা কি সম্ভব নয়? এটা কী সম্ভব নয় যে, তাঁকে কেউ হত্যা করে, বেডরুমে দেহ রেখে বলছেন যে, চাবি হারিয়ে গিয়েছে? কাউকে এখনও গ্রেফতার করা হল না কেন? পুলিশ এটা আত্মহত্যা বলে প্রমাণ করতে পারেনি বলেও অভিযোগ করেছেন রূপা গঙ্গোপাধ্যায়। রূপা গঙ্গোপাধ্যায় বলেছেন, যে ব্যক্তি মাটির এত কাছাকাছি, বিনম্র, যিনি এত উচ্চাকাঙ্খী ছিলেন যে, নিজের স্বপ্ন লিখে রাখতেন..তিনি কীভাবে এত সহজে হাল ছেড়ে দেবেন?

মুম্বই পুলিশের সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন তিনি তুলছেন না বলেও জানিয়েছেন অভিনেত্রী-সাংসদ। মুম্বই পুলিশ ৩৪ বছরের সুশান্তর মৃত্যুর ঘটনার তদন্ত করছে। রূপা গঙ্গোপাধ্যায় বলেছেন, মুম্বই পুলিশের সামর্থ্য নিয়ে তিনি প্রশ্ন তুলছেন না। কিন্তু সিবিআইয়ের মতো কেন্দ্রীয় সংস্থার মাধ্যমে তদন্ত আরও বেশি নিরপেক্ষ হতে পারে।

সিবিআই তদন্তের দাবি নিয়ে তিনি তাঁর দলের কোনও নেতার সঙ্গে কথা বলেছেন কিনা, এই প্রশ্নের উত্তরে রূপা গঙ্গোপাধ্যায় বলেছেন, সাংসদ হিসেবে সুশান্তর মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে নিজের উদ্বেগের কথা জানাননি। তাই প্রথমে এ ব্যাপারে দলের কোনও সদস্য বা নেতাকে জড়াতে চাননি।

সাধারণ মানুষ হিসেবে সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজের মতামত জানাচ্ছেন। কিন্তু এত খারাপ লাগছে তাঁর যে, তিনি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে সম্ভবত চিঠিও লিখবেন। সেই সঙ্গে তদন্তে সিবিআইয়ের সাহায্য নিতে মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রীকেও অনুরোধ করেছেন তিনি।