লখনউ: গোরক্ষপুর, ফুলপুরের লোকসভা উপনির্বাচনে অপ্রত্যাশিত হারের পর কি ২৩ মার্চ নির্ধারিত উত্তরপ্রদেশের ১০টি রাজ্যসভা আসনের ভোটেও শরিক সুহেলদেব ভারতীয় সমাজ পার্টি (এসবিএসপি)-র কাছ থেকে বড় ধাক্কা খেতে চলেছে বিজেপি? তাদের ৮ প্রার্থীকে রাজ্যসভায় পাঠানোর প্রয়োজনীয় সংখ্যা বিজেপির হাতে আছে, কিন্তু ৪০৩ আসনের উত্তরপ্রদেশ বিধানসভায় মাত্র ৪ বিধায়কের শরিকের ওপরই বিজেপির নবম প্রার্থীর ভবিষ্যত্ নির্ভর করছে।
প্রার্থী বাছাইয়ের সময় তাদের সঙ্গে বিজেপি কোনও আলোচনা করেনি, এই অভিযোগে ক্ষুব্ধ তারা। দলের প্রধান ওমপ্রকাশ রাজভড় বলেছেন, এখনও আমরা বিজেপির সঙ্গে জোটে রয়েছি। কিন্তু রাজ্যসভা ও গোরক্ষপুর, ফুলপুরে প্রার্থী চূড়ান্ত করার সময় আমাদের সঙ্গে ওরা কথা বলেছিল কি? স্থানীয় পুরসভা ভোটেও ওরা নিজেদের প্রার্থী দাঁড় করিয়েছিল, কিন্তু সঠিক জোটধর্ম কি পালন করেছিল? লোকসভা উপনির্বাচনের বেলায়ও কখনও জোটশরিকদের কাছে জানতে চেয়েছিল, তারা কী ভাবছে? তাহলে আমরাই বা কী করে বলি, রাজ্যসভা নির্বাচনে বিজেপিকে ভোট দেব না অন্য কাউকে দেব? আমরা এখনও কিছু ঠিক করিনি।
উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ বলেছেন, অষ্টম প্রার্থীর জয় নিশ্চিত করার পরও প্রথম পছন্দের ২৮টি ভোট বিজেপির হাতে থাকছে, তাই তারা একজন অতিরিক্ত প্রার্থী দিয়েছে। অতিরিক্ত প্রার্থী দেওয়ায় কোনও ক্ষতি নেই। ২৮টি বাড়তি ভোট আছে। আরও ৯টা ভোট কী করে জোগাড় করে প্রয়োজনীয় ৩৭টা ভোটের ব্যবস্থা হবে, দেখবেন।

ক্ষুব্ধ রাজভড়ের দাবি, তাঁরা অন্তত ৩০ হাজার ভোট প্রভাবিত করতে পারতেন, যাতে গোরক্ষপুর উপনির্বাচনের ফল অন্যরকম হতেও পারত। কিন্তু মনে হয়, বিজেপির আমাদের কোনও দরকারই নেই। একইভাবে ফুলপুরেও আমাদের বিজেপি প্রার্থীর পক্ষে একবারও প্রচারে নামতে বলা হয়নি।  বিজেপি কি একবারও আমাদের সঙ্গে কথা বলতে পারত না?দলিত, পিছিয়ে পড়ারা উপেক্ষিত, সেই প্রবণতা অব্যাহত রয়েছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
আরেক জোটশরিক আপনা দল (এস) মুখপাত্র অরবিন্দ শর্মা অবশ্য বলেছেন, রাজ্যবাসীর বৃহত্তর স্বার্থে আমরা রাজ্যসভা ভোটে বিজেপিকে সমর্থন করব।
উত্তরপ্রদেশে বিজেপি ও তার শরিকদের সব মিলিয়ে আসন ৩২৪টি। রাজ্যসভায় জিততে একজন প্রার্থীর চাই প্রথম পছন্দের ৩৭টি ভোট। অঙ্কের হিসাবে, এসবিএসপি সমর্থন না করলেও ১০টির মধ্যে ৮টিতে সহজে জিতবে বিজেপি। তারপরও বাড়তি ২৮টি ভোট থাকবে তাদের। নবম আসনে কিছুটা হলেও লড়াই হতে পারে বলে জানিয়েছেন এক বিজেপি নেতা। বসপার ১৯ জন বিধায়ক। ফলে ১৮টি প্রথম পছন্দের ভোট নেই তাদের। সদ্য বিজেপিতে যোগ দেওয়া নরেশ আগরওয়ালের ছেলে নীতিন, যিনি সপা বিধায়ক হলেও বিজেপির পক্ষে ভোট দিতে পারেন। সেক্ষেত্রে মায়াবতীর প্রার্থীর পক্ষে লড়াই আরও কঠিন হয়ে যাবে।
নতুন মৈত্রীর ফলে কংগ্রেসের সাতটি, আরএলডির একটির পাশাপাশি মায়াবতী অখিলেশ যাদবের দলের বাড়তি ১০টি ভোট পাওয়ার আশায় রয়েছেন। কিন্তু নীতিন বসপার ক্ষতি করতে পারেন বিজেপির পক্ষে ভোট দিলে।
২৪৫ সদস্যের রাজ্যসভায় উত্তরপ্রদেশ থেকে যান ৩১ জন সাংসদ। কিন্তু বিজেপি-এনডিএ-র সেখানে সংখ্যাগরিষ্ঠতা নেই। সেখানে এনডিএ-র মোট শক্তি ৮৩, যার মধ্যে ৫৮ জন বিজেপির।