মুম্বই: হার্টে কৃত্রিম ভালভ বসাতে গিয়ে বিপত্তি। ভালভ পড়ে গেল মহিলার হার্টের মধ্যেই! যার জেরে মৃত্যু হল রোগিনীর। আর এই ঘটনা ঘটল মুম্বইয়ের অভিজাত হাসপাতালে, খ্যাতনামা হার্ট-স্পেশালিস্টদের উপস্থিতিতে।


৫৬-বছর বয়সী স্ত্রী মঞ্জুর অস্ত্রোপচারের জন্য বহু কষ্ট করে ৪৩ লক্ষ টাকা তুলেছিলেন ঠাণের বাসিন্দা মিথুলাল বাফনা। স্ত্রীর হৃদপিণ্ডের একটি ভালভ বিকল হওয়ায় তিনি বিদেশ থেকে ওই কৃত্রিম ভালভ আনিয়েছিলেন।


ভেবেছিলেন, নতুন ভালভ বসানো হলে, তাঁর স্ত্রী বেঁচে যাবেন। কিন্তু, তিনি কল্পনাও করতে পারেননি—যে ভালভ তাঁর স্ত্রীর প্রাণ বাঁচাতে পারত, তা-ই স্ত্রীর মৃত্যুর কারণ হয়ে উঠবে।


অস্ত্রোপচারটি প্রায় দুমাস আগে মুম্বইয়ের মাহিম অঞ্চলের হিন্দুজা হাসপাতালে হয়। কিন্তু, হাসপাতাল থেকে ছাড়ার দিনই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন মিথুলালের স্ত্রী মঞ্জু।


গত ২৮ ডিসেম্বর চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগে মহারাষ্ট্র মেডিক্যাল কাউন্সিলের দ্বারস্থ হন ৬০ বছর বয়সী মিথুলাল। তাঁর দাবি, ট্রান্সক্যাথিটার মিট্রাল ভালভ রিপেয়ার পদ্ধতিটি ২০০ শতাংশ নিরাপদ বলেই চিকিৎসকরা তাঁকে আশ্বস্ত করেছিলেন।


মিথুলালের অভিযোগ, চিকিৎসকরা দাবি করেছিলেন, পাঁচদিনের মধ্যেই স্ত্রী সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরবেন। কিন্তু, গত ১৯ তারিখ হাসপাতাল থেকে তাঁকে যখন বের করা হয়, তখন ইতিমধ্যেই কোমায় চলে গিয়েছেন মঞ্জুদেবী। অ্যাম্বুলেন্সেই তাঁর মৃত্যু হয়।


এখানেই শেষ নয়। গোটা প্রক্রিয়ার জন্য ২ মাসে ৪৩ লক্ষ টাকার বিল পেশ করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু, মঞ্জুর মৃত্যুর পর প্রায় সাড়ে ১২ লক্ষ টাকা ফেরত দেওয়া হয় মিথুলালকে। আরও ১১ লক্ষ টাকা দেওয়া হয় বিমা থেকে।


মিথুলালের পরিবারের অভিযোগ, প্রথমে বলা হয়েছিল খরচ হবে প্রায় ২০ লক্ষের মতো। কিন্তু, পরে তা ক্রমশ বেড়ে চলে। তারা আরও জানিয়েছে, হাসপাতালের বিলেও প্রচুর বৈষম্য রয়েছে। যেমন, ভালভের দাম ১.৫ লক্ষ হলেও, মিথুলালের থেকে ১১ লক্ষ টাকা নেওয়া হয়েছে।


যদিও, পরিবারের সব অভিযোগ খারিজ করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তাদের দাবি, প্রত্যেক অস্ত্রোপচারেই একটা জটিলতা থাকে। রিস্ক থাকে। তাদের দাবি, মঞ্জুদেবীর হৃদপিণ্ড অত্যন্ত দুর্বল ছিল। ৬ বছর আগে তাঁর একবার ওপেন হার্ট সার্জারি হয়েছিল। ভালভ স্থানচ্যূত হওয়ার বিষয়ে তাদের সাফাই—২০ শতাংশ ক্ষেত্রে এটা হতেই পারে।


Web Desk, ABP Ananda