নয়াদিল্লি: একেই হয়ত বলে স্বপ্ন হলেও সত্যি!
অন্তত এমনটাই মনে হচ্ছিল মঞ্জুদেবীর, যিনি রাজস্থানের প্রথম মহিলা কুলি হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছেন। রবিবার যখন তিনি রাষ্ট্রপতি ভবনে ঐশ্বর্যা রাই বচ্চন সহ ৯০ কৃতী মহিলার সঙ্গে মঞ্চ ভাগ করে নিলেন, তখন তাঁর মনে হচ্ছিল, এটা কি সত্যি সম্ভব?
এদিন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের সামনে নিজের জীবনের লড়াইয়ের কথা শোনান জয়পুর রেল স্টেশনের ‘কুলি নম্বর ১৫’ মঞ্জু। জানান, এমন একটা পেশায় তাঁকে আসতে হল, যা পুরুষরাই মূলত করে থাকেন।
তিনি বলেন, আমার ওজন ৩০ কেজি। আর যাত্রীদের মালপত্রের ওজনও তাই। কিন্তু, স্বামীর মৃত্যুর পর তিন সন্তানের ভরণপোষণের দায়িত্ব সামলাতে আমার কাছে অন্য কোনও উপায় ছিল না।
মঞ্জু যোগ করেন, তাঁর স্বামীও জয়পুর রেল স্টেশনের কুলি ছিলেন। স্বামীর মৃত্যুর পর মঞ্জুর ভাই তাঁকে জয়পুর আসার জন্য বলেন। সেখানে পৌঁছে, তিনি স্টেশনে কুলি পদে কাজ করার ইচ্ছাপ্রকাশ করেন।
মঞ্জু বলেন, প্রথমে রেল আধিকারিকরা তাঁকে জানিয়ে দেন, কুলির পদে যেহেতু মহিলাদের রাখা হয় না, তাই সেখানে মানিয়ে নিতে তাঁর অসুবিধে হবে। কিন্তু, সব বাধাকে অতিক্রম করে তিনি নিজেকে রাজ্যের প্রথম মহিলা কুলি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে তোলেন। এমনকী, মৃত স্বামীর ১৫ নম্বরের ব্যাজও তাঁকে দেওয়া হয়।
মঞ্জু যোগ করেন, তিনি নিরক্ষর ছিলেন। পড়তে জানতেন না। ফলে, প্রথমদিকে স্টেশনের নাম ও নম্বর চিনতে অসুবিধে হত। আধিকারিকরা তাঁর জন্য ৬ মাসের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করে দেন। তারপর থেকে আর কোনও অসুবিধে হয়নি।
মঞ্জুর জীবন-কাহিনী শোনার পর রাষ্ট্রপতি বলেন, এখানে উপস্থিত সকলেরই কিছু না কিছু নিজেদের কাহিনী রয়েছে। কিন্তু, মঞ্জুর গল্প শোনার পর আমি আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েছি।