জগদ্দলপুর: দন্তেওয়াড়ার গম্মাবড়ার বহুদিনের বাসিন্দা ভাস্কর পরিবার। পূর্বজদের স্মৃতি আগলে রেখেছে পরিবারের সদস্যরা।  কীভাবে? মৃতদের স্মৃতিতে স্তম্ভ নির্মাণ করা আদিবাসীদের বহু যুগের রেওয়াজ। ভাস্কর পরিবারও পূর্বপুরুষদের স্মৃতি অক্ষয় রাখতে স্তম্ভ নির্মাণ করে। এবং সেই স্তম্ভগুলো প্রায় আড়াই হাজার বছরের পুরনো। কার্বন ডেটিং পদ্ধতিতে তাঁরা স্মৃতিস্তম্ভগুলো সংরক্ষণ করেন। ভারতের পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণ বিভাগ সেই স্মৃতিস্তম্ভগুলো রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব নিয়েছে। ভাস্কর পরিবারের এই স্মৃতিস্তম্ভগুলোর দুশো মিটারের মধ্যে কোনও খনন বা নির্মাণকার্য বন্ধ করা হয়েছে।

বস্তারের মানুষও পূর্বজদের স্মৃতিতে এমন স্তম্ভ তৈরি করেন বহুদিন ধরেই। মৃতদের স্মৃতি অমর করে রাখতে পাথরের স্তম্ভ নির্মাণ করা হয়। সেই স্তম্ভে মৃত ব্যক্তির জীবনের নানা দিকের বর্ণনা খোদাই করা হয়। তবে সেই স্তম্ভগুলোর ক্ষয় হতে থাকে এবং বস্তারের মানুষ সেই স্তম্ভ রক্ষণাবেক্ষণে আগ্রহ হারায়। তবে গম্মাবড়ার ভাস্কর পরিবার ব্যতিক্রমী। কারণ, তাঁরা যুগের পর যুগ ধরে পূর্বপুরুষদের স্মৃতি রক্ষা করছেন। ভাস্করদের বংশধরেরা ১৩টি গ্রামে ছড়িয়ে রয়েছে। তবে পূর্বজদের স্মৃতিস্তম্ভে প্রায়ই তাঁরা একত্রিত হন।



গম্মাবড়ার ভাস্কর পরিবারের সদস্য সোনাধার ভাস্কর, কুঞ্জলাল ভাস্কররা জানিয়েছেন, যে গ্রামেই তাঁদের পরিবারের সদস্যদের মৃত্যু হোক না কেন, স্মৃতিস্তম্ভ গড়া হয় গম্মাবড়া গ্রামেই। বংশের রেওয়াজ হচ্ছে, পুরুষরা মারা গেলে তাঁদের স্মৃতিতে স্তম্ভ গড়া হয় আর মহিলাদের মৃত্যুর পর তাঁদের সমাধির ওপর পাথর বসানো হয়।

এই স্তম্ভগুলোকে পুজোও করেন ভাস্কর বংশের সদস্যরা। তাঁরা মনে করেন, এই স্তম্ভগুলো পবিত্র। আজ, ১৫ মে, শুক্রবার আন্তর্জাতিক পরিবার দিবসে ভাস্কর পরিবারের এই নজিরের চর্চা মানুষের মুখে মুখে।