নয়াদিল্লি: সংসদে দাঁড়িয়ে মন্ত্রী বলেছিলেন, গঙ্গাদূষণের ফলে দৃষ্টিশক্তি হারাচ্ছে গাঙ্গেয় শুশুক। তাই প্রথমে ভিন্ন কথা বললেও পরে মন্ত্রীর কথায় সায় জানাল মন্ত্রক!

ঘটনায় প্রকাশ, সম্প্রতি লোকসভায় দাঁড়িয়ে কেন্দ্রীয় জলসম্পদ মন্ত্রী উমা ভারতী দারি করেছিলেন, গঙ্গাদূষণের ফলে ধীরে ধীরে দৃষ্টিশক্তি হারাচ্ছে গাঙ্গেয় শুশুক।

কিন্তু, তথ্য জানার অধিকারের আওতায় করা প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে উমার মন্ত্রক জানিয়ে দেয়, এই (শুশুকদের অন্ধ্যত্ব)  বিষয়ে কোনও বিজ্ঞানসম্মত ব্যাখ্যা নেই।

মন্ত্রকের ব্যাখ্যাকে সমর্থন করেন বিশেষজ্ঞরাও। তাঁদের ব্যাখ্যা, যে পরিবেশে অধিকাংশ শুশুক-প্রজাতিগুলির বিবর্তন হয়েছে, তাতে এই প্রাণীর চোখে কোনও লেন্স (মণি) হয় না।

বিজ্ঞানীদের মতে, বিভিন্ন কারণে দৃষ্টিশক্তি হারাচ্ছে শুশুককূল। তবে, সেই তালিকায় গঙ্গা-দূষণ নেই। কারণ, এর কোনও বিজ্ঞানসম্মত ব্যাখ্যা নেই।

এমনকী, জুলজিক্যাল সোসাইটি অফ লন্ডন পরিচালিত ‘এজ অফ এক্সিসটেন্স প্রোগ্রাম’-এ বিপন্ন প্রজাতি নিয়ে গবেষণা হয়েছে।

সেখানে বলা হয়েছে, অন্যান্য নদী-শুশুকের মতো গাঙ্গেয় শুশুকও কাদা-মাটিতে থাকতে অভ্যস্ত। তাই, তাদের চোখ হয় আকারে ছোট, এবং তার কার্যকারিতাও কম।

সেখানে আরও বলা হয়েছে, এই ধরনের শুশুকরা মূলত আওয়াজ (আলট্রাসনিক) দিয়েই খাবার খুঁজে নেয়। এমনকী, অন্যদের সঙ্গে যোগাযোগের মাধ্যমও এই আওয়াজ।

ফলে, দূষণ হলেও, তাতে শুশুকদের প্রভাবিত (এক্ষেত্রে দৃষ্টিশক্তি ক্ষতিগ্রস্ত) হওয়ার কোনও কারণ নেই।

কিন্তু, মন্ত্রী বলেছেন বলে কথা! তাঁর বচন খণ্ডন করে কার সাধ্যি! তাই একেবারে ১৮০ ডিগ্রি ডিগবাজি খেয়ে এবার কেন্দ্রীয় জলসম্পদ মন্ত্রক থেকে মন্ত্রীর কথাকেই সমর্থন জানানো হয়েছে।

মন্ত্রীর কথাকে সমর্থন করে মন্ত্রকের তরফে বলা হয়েছে, গাঙ্গেয় প্রাণীর জীবনাপনের ওপর একটি আলোচনায় এক বিশেষজ্ঞ জানিয়েছিলেন, গঙ্গা-দূষণের ফলে দৃষ্টিশক্তি হারাচ্ছে শুশুকরা।

শুধু তাই নয়। এই ‘গুরুত্বপূর্ণ তথ্য’ কীভাবে মন্ত্রকের আরটিআই ব্যাখ্যায় ঠাঁই পেল না, তা খতিয়ে দেখার জন্য তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে মন্ত্রক।