লখনউ: গত শনিবার ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর ১২৫-তম জন্মবার্ষিকী পালন অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সামনেই দর্শকাসন থেকে জয় শ্রীরাম ধ্বনি দিয়ে তাঁকে ডেকে এনে অসম্মান করা হয়েছে বলে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলতে উঠেও শেষ পর্যন্ত ভাষণ না দিয়ে বসে পড়েন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পাল্টা বিজেপি দাবি করে, জয় শ্রী রামে কীসের আপত্তি, কেন! মুখ্যমন্ত্রীর নেতাজিকে শ্রদ্ধা প্রদর্শন করেননি বলে অভিযোগ করে গেরুয়া শিবির। এবার এই বিতর্কে ঢুকে পড়লেন যোগী আদিত্যনাথ। জয় শ্রী রাম ধ্বনিতে কারও খারাপ লাগা উচিত নয় বলে অভিমত জানিয়ে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী সোমবার বলেন, কারও জয় শ্রীরাম বলায় তো খারাপ লাগার কিছু নেই। কেননা এটা তো শুভেচ্ছা প্রকাশের একটা ধরন। কেউ নমস্কার বা জয় শ্রী রাম বললে সেটা তার সৌজন্যবোধেরই প্রদর্শন। আমরা কাউকে তা বলতে বাধ্য করছি না।
আজ লখনউয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপচারিতার সময় আদিত্যনাথ এ জাতীয় বিষয়কে অহেতুক গুরুত্ব দেওয়া উচিত নয় বলেও অভিমত জানান।
শনিবার মুখ্য়মন্ত্রী ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালের অনুষ্ঠানে ভাষণ দিতে উঠে দাঁড়াতেই দর্শকাসন থেকে একদল জয় শ্রী রাম ধ্বনি দিতে শুরু করে। আচমকা এতে দৃশ্যতই ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী কেন্দ্রীয় সংস্কৃতিমন্ত্রক আয়োজিত অনুষ্ঠানে এমন ঘটনার সামনে পড়ে বলে ওঠেন, তিনি কলকাতায় এমন অনুষ্ঠানের আয়োজন করার জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও কেন্দ্রীয় সংস্কৃতিমন্ত্রকের কাছে কৃতজ্ঞ। কিন্তু এটা সরকারি অনুষ্ঠান, দলীয় কর্মসূচি নয়। তাঁকে ডেকে এনে জয় শ্রীরাম ধ্বনি দিয়ে অপমান করা হচ্ছে। প্রতিবাদে তিনি ভাষণ দেবেন না। আজও পুরশুড়ার সভায় মুখ্যমন্ত্রী অভিযোগ করেন, প্রধানমন্ত্রীর সামনে জয় শ্রী রাম স্লোগান দিয়ে তাঁকে টিজ করা হয়েছে।
বিজেপি অবশ্য় মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রীর প্রতিক্রিয়াকে তাঁর ‘তোষণের রাজনীতির মানসিকতার প্রতিফলন’ বলে কটাক্ষ করেছে। এমনকী হরিয়ানার মন্ত্রী অনিল ভিজ মুখ্যমন্ত্রীর সামনে বিদ্রুপের সুরে ‘জয় শ্রী রাম’ ধ্বনিকে ‘ষাঁড়কে লাল শালু দেখানো’র সঙ্গেও তুলনা করেন। বিজেপির নেতা তথা নেতাজির প্রপৌত্র চন্দ্রকুমার বসু ওই স্লোগানে আপত্তিকর কিছুই নেই, নেতাজির জন্মদিনের সঙ্গে রাজনীতি জড়ানো উচিত নয় বলেও জানিয়ে দেন।
তবে এই ইস্যুতে মুখ্যমন্ত্রীর পাশে দাঁড়িয়ে কংগ্রেস ও বামেরা বিজেপির তীব্র সমালোচনা করেছে ওই ঘটনার জন্য।