মুম্বই: ‘সাম্প্রদায়িক উদ্দেশ্যপূরণে’ তাঁর সংস্থা ইসলামিক রিসার্চ ফাউন্ডেশন নিষিদ্ধ করেছে কেন্দ্র। দাবি করলেন জঙ্গিদের উৎসাহ দেওয়া ইসলামিক ধর্মপ্রচারক জাকির নায়েক। তাঁর আরও দাবি, নোট বাতিলের জেরে মানুষের ‘হয়রানি’ থেকে সংবাদমাধ্যমের নজর সরাতেই আইআরএফ নিষিদ্ধ করা হয়েছে।


গুলশন কাফে সন্ত্রাসে লিপ্ত জঙ্গিরা জাকিরের বক্তৃতা থেকে প্রভাবিত হয়েছিল। এই খবর প্রকাশ্যে আসার সময় জাকির বিদেশে ছিলেন, জেল এড়ানোর চেষ্টায় এখনও তিনি দেশের বাইরে। শুক্রবার সামনে এসেছে তাঁর একটি চিঠি। তাতে তিনি দাবি করেছেন, সরকার বোঝাতে চাইছে ইসলাম ও হিংসা সমার্থক। তাই ইউএপিএ-র আওতায় এনে নিষিদ্ধ করা হয়েছে তাঁর সংস্থা। তাঁর আরও দাবি, কোনও নিরাপত্তা সংস্থা তাঁকে একবারও কোনও বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেনি, আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেওয়া হয়নি তাঁকে। অথচ নিষিদ্ধ করা হল তাঁর সংগঠন। তাঁর অভিযোগ, সরকারের লক্ষ্য খুব স্পষ্ট-যেভাবে হোক তাঁকে ফাঁসিয়ে দেওয়া।

আইআরএফ নিষিদ্ধকরণের সঙ্গে নোট বাতিলকেও জড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছেন জাকির নায়েক। তাঁর অভিযোগ, নোট বাতিল নিয়ে হইচই চলাকালীন আইআরএফ নিষিদ্ধ করেছে কেন্দ্র, ঠিক যখন সাধারণ মানুষ ‘অর্থাভাবে’ পড়েছেন। সেই ‘দুর্গতি’ থেকে সংবাদমাধ্যমের নজর ঘোরাতে আইআরএফ ঠিক এই সময়টা নিষিদ্ধ করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন তিনি।

মুম্বই সহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় জাকির নায়েকের প্রচুর সংগঠন চলে। জাকিরের সঙ্গে সন্ত্রাসবাদী যোগাযোগ স্পষ্ট হয়ে ওঠায় তাঁর সংস্থা আইআরএফ নিষিদ্ধ করেছে কেন্দ্র, তাঁর ইসলামিক ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করে দেওয়া হয়েছে। জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা ব্যাঙ্কগুলিকে নির্দেশ দিয়েছে নায়েকের সব অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করে দিতে, একইসঙ্গে ফ্রিজ করতে আইআরএফ ও সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলির অ্যাকাউন্ট।

জাকির অবশ্য নিজেকে ‘নির্যাতনের শিকার’ বোঝাতে চেষ্টার কসুর করছেন না। এর আগেও তিনি দাবি করেছেন, তাঁর বিরুদ্ধে পুলিশি তদন্ত ভারতীয় মুসলিমদের ওপর হামলা ছাড়া কিছু নয়।

তবে জাকিরের সমস্যা আরও বাড়িয়ে আইআরএফ-এর সমস্ত কর্মী পদত্যাগ করেছেন। ওই সংস্থা নিষিদ্ধ হওয়ার পরই নিজেদের কেরিয়ারে তার প্রভাব পড়ার ভয়ে পদত্যাগ করেছেন তাঁরা। একইসঙ্গে নিজেদের সব পাওনাগণ্ডা মিটিয়ে দেওয়ার আবেদন করেছেন। জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা আইআরএফ অফিসে গিয়ে শুধু কাগজপত্রও নিয়ে আসেনি, সঙ্গে এনেছে সিইও মনসুর শেখ ও আরও কয়েকজন বোর্ড সদস্যের মোবাইল ফোন। বাদ যায়নি জাকির নায়েকের ভাইয়ের ফোনও। আইআরএফের কাজকর্মে এই আধিকারিকদের ভূমিকা নিয়ে তাঁদের জেরা করা হচ্ছে। সম্ভবত ফরেনসিক পরীক্ষা করে ফোন থেকে মুছে দেওয়া ডেটা উদ্ধারেরও চেষ্টা হবে।