সন্দীপ সরকার ও উজ্জ্বল মুখোপাধ্য়ায়, কাঠমাণ্ডু : জ্বলছে নেপাল। উদ্বেগ বাড়ছে ভারতে। নেপালে অরাজক পরিস্থিতিতে জেল থেকে পালাচ্ছে একের পর এক কয়েদি। কাঠমাণ্ডু পোস্ট সূত্রে খবর, নেপালে ২৫টিরও বেশি জেল থেকে ১৫ হাজারেরও বেশি কয়েদি পালিয়েছে। ভারতে ঢোকার চেষ্টা করায় বেশ কয়েকজন জেল পালানো বন্দিকে আটক করেছে SSB। গত কয়েকদিনে নেপালে অস্থিরতা তৈরি হওয়ায় বিভিন্ন জেল থেকে পালিয়েছে বন্দিরা। জেলে ভাঙচুর, আগুন লাগানোর ঘটনাও ঘটেছে। কোথাও কোথাও নেপাল সেনাকে বন্দুক তাক করে জেলের গেটের সামনে পাহারা দিতে দেখা গেছে। নেপালের জেল পালানো কয়েদিরা যাতে ভারতে ঢুকতে না পারে, তার জন্য সীমান্ত সুরক্ষা বাড়ানো হয়েছে। 

Continues below advertisement

নেপাল। গৌতম বুদ্ধের দেশ। সেই দেশেই এখন বিদ্রোহ, অশান্তির ভয়ঙ্কর ছবি। নেপাল ভারতের পাশের দেশ। যে সীমান্ত আবার পুরোটাই খোলা। পাসপোর্ট ছাড়াই এপার ওপাড় করা যায়।পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গেও নেপালের প্রায় ১০০ কিলোমিটার সীমান্ত রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে আতঙ্ক বাড়িয়েছে নেপালের বিভিন্ন জেল ভেঙে প্রায় ১৫ হাজার কয়েদির পালানোর খবর। এরইমধ্য়ে গা ঢাকা দিতে নেপাল ছেড়ে ভারতে ঢোকার সময় ৬০ জন কয়েদিকে সীমান্তে পাকড়াও করেছে SSB। খবর অনুযায়ী, জেল ভেঙে পালিয়েছিল বেশ কয়েকজন কয়েদি। তারা ভারতে ঢোকার চেষ্টা করতেই বেশ কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে। তারপর থেকে নিরাপত্তা ব্য়বস্থা এবং ভিতরে ঢোকার সমস্ত নিয়ম কানুন আরও বেশি কড়া করা হয়েছে।

এভারেস্টের দেশ নেপালে যে দুর্নীতির এভারেস্ট তৈরি হয়েছিল, তা চুরমার হয়ে গেছে গণবিদ্রোহে। দুর্নীতিতে অভিযুক্ত একাধিক মন্ত্রী থেকে মেয়রের বাড়ি এবং অফিস পুড়িয়ে ছাই করে দিয়েছে বিক্ষোভকারীরা। সেই ভয়াবহ ছবি ধরা পড়েছে এবিপি আনন্দর ক্য়ামেরায়। নেপালের প্রাক্তন জেনারেল অ্য়াডমিনিস্ট্রেশন মন্ত্রী রাজকুমার গুপ্তার ঘর। তাঁর বাড়িতে স্থানীয় মানুষের ক্ষোভ আছড়ে পড়েছিল। সুবিশাল অট্টালিকা, সেই সুবিশাল অট্টালিকার ড্রয়িং রুম ছিল। পাশে প্রশাসনিক কাজকর্মের ঘর ছিল। সেইসব ঘর আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। যাবতীয় সরঞ্জাম আগুনের গ্রাসে।

Continues below advertisement

নেপালের যুব প্রজন্ম যখন দুর্নীতির বিরুদ্ধে জোরাল বার্তা দিচ্ছে, তখন এ রাজ্য়ে নিয়োগ দুর্নীতির আবহে, টেট-প্রার্থীদের গলাতেও উঠে আসছে নেপালের প্রসঙ্গ। এদিন এক  চাকরিপ্রার্থী বলেন, "মুখ্যমন্ত্রীকে এটাই বলব, নেপাল দেখে শিক্ষা নিন। ৫০ হাজার নিয়োগ দিন। যুবসমাজ রেগে গেলে আপনি কিন্তু রাজ্যকে আর বাঁচাতে পারবেন না।"

এদিকে নেপালে অন্তর্বর্তী সরকরের প্রধান কে হবেন, তা নিয়ে এখনও জল্পনা চলছে। কখনও নাম শোনা যাচ্ছে সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি সুশীলা কার্কির। আবার কখনও নাম ভাসছে নেপালের বিদ্য়ুৎ বোর্ডের প্রাক্তন এমডি কুল মান ঘিসিং-এর। নাম নিয়ে মতভেদের মধ্য়েই সূত্রের খবর, অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী বাছাই করার জন্য় নেপাল সেনাবাহিনী, আন্দোলনকারী ও রাষ্ট্রপতি ভবনের মধ্য়ে আলোচনা চলছে। সূত্রের খবর, এক্ষেত্রে রেসে অনেকেটাই এগিয়ে রয়েছেন নেপাল সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি সুশীলা কারকি।