Nepal Protest: সমাজমাধ্যম নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্তের পর থেকেই নেপালে শুরু হয় তুমুল বিক্ষোভ, ছাত্র-যুবদের আন্দোলন চরম আকার নেয়। সহিংস বিক্ষোভের মুখে সরকার এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করতে বাধ্য হয়। এই আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে, সেনার আক্রমণের আঘাতে কমপক্ষে ১৯ জন নিহত হয়েছেন এবং ৩০০ জনেরও বেশি আহত হয়েছেন। ইতিমধ্যেই পদত্যাগ (Nepal Protest) করেছেন দেশের প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি। স্থানীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে নেপালের এই তরুণদের বিক্ষোভ-প্রতিবাদের নেপথ্যে রয়েছেন এক ব্যক্তি, সুদান গুরুং। ৩৬ বছর বয়সী সুদান গুরুংই এখন নেপালের ছাত্র-যুব আন্দোলনের মুখ। চেনেন এই তরুণকে ?

এই বিক্ষোভের সামনের সারিতে থেকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন সুদান গুরুং। তিনি ‘হামি নেপাল’ নামের একটি যুব-পরিচালিত স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সভাপতি তিনি। নেপালে তাঁর নেতৃত্বেই এক চরম শক্তিশালী নাগরিক আন্দোলনে রূপ নিয়েছে এই প্রতিবাদ-বিক্ষোভ। এক ভয়াবহ ভূমিকম্পে সুদান গুরুং তাঁর সন্তানকে হারিয়েছিলেন। তারপর থেকেই অহিংস প্রতিরোধে নিজেকে সামিল রেখেছেন। তিনি শিক্ষার্থীদের স্কুল ইউনিফর্ম পরে সমাবেশে যোগ দিতে আহ্বান জানান এবং সঙ্গে বই রাখার নির্দেশ দেন আর এই পদক্ষেপের মাধ্যমে আন্দোলন সম্পূর্ণরূপে অহিংস, শান্তিপূর্ণ হয়ে ওঠার বার্তা দেওয়া হয়। তাঁর ডাকেই লক্ষ লক্ষ নেপালের তরুণ-তরুণীরা রাস্তায় নেমেছেন।

এই ঘটনার আগে থেকেই হামি নেপাল স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠান প্রতিবাদের রুট এবং নিরাপত্তা বিষয়ে নানা ধরনের নির্দেশাবলী সমাজমাধ্যমে শেয়ার করতেন। সমাজমাধ্যম প্ল্যাটফর্মগুলির উপরেও প্রচুর পরিমাণে নির্ভরশীল ছিলেন তিনি। এই প্রতিবাদে অংশগ্রহণকারীদের একত্রিত করতে এবং সহিংসতা থেকে রক্ষা করতে ডিজিটাল সরঞ্জাম ব্যবহার করতেন। তাঁর নেতৃত্বই নেপালের হতাশ তরুণ প্রজন্মের কাছে একটা অবলম্বন হয়ে উঠেছিল। সরকারের বিরোধিতা এবং শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদের প্রতীক হয়ে উঠেছেন সুদান গুরুং।

নেপালের তথ্য সম্প্রচার মন্ত্রী পৃথ্বী সুব্বা গুরুং সোমবার রাতেই জানিয়েছিলেন যে ফেসবুক, এক্স, টিকটক, ইউটিউব সহ ২৬টি সমাজমাধ্যম নিষিদ্ধ করে দেওয়া হয়। আর তারপর থেকেই নেপালের তরুণ প্রজন্ম প্রতিবাদে সামিল। অনেকের দাবি সরকারের দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা দুর্নীতির প্রমাণ ঢাকতেই এই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে এবং এই সিদ্ধান্ত এক প্রকার বাক-স্বাধীনতা হরণ করার সামিল। আর এই ঘটনার প্রেক্ষিতেই উত্তাল হয়ে ওঠে নেপাল। অগ্নিগর্ভ নেপালে চলে গুলি, মৃত্যু হয় বেশ কিছু বিক্ষোভকারীর। যদিও এই আন্দোলনের চাপে নেপাল সরকার এই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নিতে বাধ্য হয়।