নয়াদিল্লি: লাইসেন্স পুনর্নবীরণের আর্জি খারিজ হয়েছিল আগেই। এ বার স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা OXFAM-এর বিরুদ্ধে তদন্তের নির্দেশ দিল কেন্দ্রীয় সরকার। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থাকে OXFAM-এর বিদেশি অনুদান সংক্রান্ত দিকটি খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিয়েছে অমিত শাহের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। শিশুশিক্ষার বেহাল অবস্থা, ভারতে ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক বৈষম্য নিয়ে একাধিক রিপোর্ট প্রকাশ করেছে OXFAM. এ বার তাদের বিরুদ্ধেই তদন্তের নির্দেশ।


OXFAM-এর বিরুদ্ধে অভিযোগ যে বিদেশি অনুদান আইন লঙ্ঘন করেছে তারা। বলা হচ্ছে, করোনার সময় বিদেশি অনুদান আইনে সংশোধন ঘটানো হয়েছিল। বিদেশি অনুদানের ক্ষেত্রে বেঁধে দেওয়া হয়েছিল কিছু নিয়ম-কানুন। অভিযোগ, তার পরও OXFAM 'বেআইনি' উপায়েই বিদেশি অনুদান নিয়ে চলেছে। আয়কর বিভাগের নজরে সম্প্রতি সংস্থার বেশ কিছু ই-মেলে অনিয়ম চোখে পড়ে। অলাভজনক সংস্থা মারফতই বিদেশ থেকে অনুদান নিয়ে চলেছে OXFAM, এমনই অভিযোগ উঠছে। 


শুধু তাই নয়, আয়কর বিভাগের একটি সমীক্ষায় দাবি করা হয়েছে, কিছু বিদেশি সংস্থা এবং তাদের শাখা OXFAM-কে ব্যবহার করে বিদেশ থেকে অনুদান সংগ্রহ করছে। ভারতে সামাজিক কাজকর্মের জন্যই নথিভুক্তি OXFAM-এর। অভিযোগ, সংস্থার কর্মী, সহযোগী এবং অন্য মাধ্যমে বিদেশি অনুদানের টাকা সংগ্রহ করে সেন্টার ফর পলিসি রিসার্চে ঢুকিয়েছে OXFAM.


TDS সংক্রান্ত তথ্যেও এই অনিয়ম চোখে পড়েছে বলে অভিযোগ। বলা হয়েছে, ২০১৯-'২০ সালে বিদেশি অনুদান আইনের ১৯৪J ধারায় সেন্টার ফর পলিসি রিসার্চের অ্যাকাউন্টে ১২ লক্ষ ৭১ হাজার ১৮৮ টাকা জমা পড়ে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের দাবি, সামাজিক কাজকর্মের নিরিখে ২০১০ সালের বিদেশি অনুদান আইনে নথিভুক্ত ছিল OXFAM. ২০২১ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ছিল তার মেয়াদ। কিন্তু ভূরি ভূরি অনিয়মের জন্যই তাদের লাইসেন্স পুনর্নবীকরণ করা হয়নি বলে অভিযোগ।


২০২১ সালের ২২ ডিসেম্বর OXFAM-এর লাইসেন্স  পুনর্নবীকরণের আর্জি খারিজ করে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। সেই নিয়ে আইনি টানাপোড়েন চলছে। এ বছর ফেব্রুয়ারি মাসেই OXFAM-এর লাইসেন্স নিয়ে কেন্দ্রের অবস্থান জানতে চেয়েছিল দিল্লি হাইকোর্ট। এখনও টানাপোড়েন চলছে সেই নিয়ে। 


২০০৮ সালে স্বাধীন সংস্থা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে OXFAM. উত্তরপ্রদেশ, ঝাড়খণ্ড , বিহার, ছত্তীসগঢ়, অসম, ওড়িশা, এই ছয় দরিদ্রতম রাজ্য দিয়ে কাজ শুরু করে তারা। ২০১৩ সালে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা হিসেবে OXFAM-এর নাম নথিভুক্ত হয়। গত ১০ বছরে অসম, বিহার, উত্তরপ্রদেশ, কেরল, কাশ্মীর, মণিপুর, গুজরাত, তামিলনাড়ু, পশ্চিমবঙ্গ, ওড়িশার মতো রাজ্যে প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় ত্রাণ বিলি থেকে সহযোগিতার কাজ করেছে OXFAM. কার্গিল যুদ্ধ, মুজফ্ফরনগ হিংসা, কোকরাঝড় হিংসার সময়ও সাহায্যে এগিয়ে যায় তারা।