কলকাতা : সোমবার একদিকে যখন চলছে দুই দেশের মধ্যে বিদেশ সচিব পর্যায়ের বৈঠক, ঠিক তখনই ঘৃণার আস্ফালন অব্যাহত বাংলাদেশের। ভারতবিরোধী স্লোগান, ভারতীয় জিনিস বয়কটের ডাক থেকে শুরু করে ভারতের একাধির রাজ্য দখল করে নেওয়ার হুঙ্কার দিয়ে যাচ্ছে প্রতিবেশী রাষ্ট্রের উগ্রবাদীরা। সৌজন্য, কৃতজ্ঞতার লেশমাত্র নেই, যে ভারতের সাহায্যে জন্ম তাদের দেশের, সেই ভারতকেই চোখ রাঙিয়ে চলেছে বাংলাদেশের কট্টরপন্থীরা। আর সেই ঘৃণার আগুনে ঘৃতাহুতি দিচ্ছে পাকিস্তান। হ্যাঁ, ভারত নয়, বাংলাদেশের 'বন্ধুদেশ' এখন পাকিস্তান।
বাংলাদেশের মৌলবাদীদের ভারতের বিরুদ্ধে যুদ্ধজিগির উঠেছে চরমে। ইউনূস-জমানায় বাংলাদেশের মৌলবাদীদের ভারত-বিদ্বেষ হয়েছে তীব্র । কেউ বলছে কলকাতা দখল করবে, তো কারও দাবি বাংলা-বিহার-ওড়িশা! কেউ কেউ তো আবার আরও একধাপ এগিয়ে দাবি করছেন গোটা উত্তর-পূর্ব ভারত। এ নিয়ে ভারতীয় নেতাদের পাল্টা হুঙ্কার শুনেই ঘুম উড়েছে বাংলাদেশী যুদ্ধকামীদের। আর তাদেরতে এবার সরাসরি ইন্ধন জোগাচ্ছে পাকিস্তান।
বাংলাদেশের প্রাক্তন সেনা অধিকর্তাদের মুখে কলকাতা দখলের কথা শুনে , তা দিবাস্বপ্ন বলে উড়িয়েছে ভারত। সামরিত শক্তিতে যে বাংলাদেশ ভারতের ধারেপাশেও নেই, তা তাদেরও জানা। তাই এবার তলায় তলায় পাকিস্তানের সঙ্গেই সখ্যতা গড়ছে তারা। আর যুদ্ধজিগিরকে উস্কে দিয়ে এক পাক কট্টরপন্থীকেও বলতে শোনা গেল, 'বাংলাদেশের ভাইদের বলছি, পাকিস্তানের পরমাণু বোমাও তোমাদের। কেউ চোখ তুলে দেখলে চোখ উপড়ে নেব, হাত তুললে হাত ভেঙে দেব। ' বাংলাদেশের পাশে দাঁড়িয়ে এভাবেই ভারতকে হুমকি দিতে শোনা গিয়েছে পাক কট্টরপন্থী নেতাকে।
অন্যদিকে আবার বাংলাদেশের এক মৌলবাদী নেতার মুখে শোনা গেল নতুন ভাবনার কথা। 'সম্পূর্ণ পূর্বাঞ্চল নিয়ে নতুন বাংলাদেশের সীমানা হবে'
অলীক স্বপ্ন দেখা বাংলাদেশের মৌলবাদীর উস্কানিমূলক বক্তব্য ভাইরাল হয়েছে নেটমাধ্যমে । শুধু তাই নয় ভারতকে জঙ্গিদের আখড়া বলে আক্রমণ শানিয়েছে বাংলাদেশের এক ছাত্র নেতা। তার মতে, 'বাংলাদেশে যারা নিষিদ্ধ, যারা জঙ্গি, তাদের ভারতে আশ্রয়। ভারত জঙ্গিদের আশ্রয় দিলে, প্রশ্নের মুখে পড়বে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক'।
৫ অগাস্ট হাসিনা সরকারের পতনের পর দেশ ছেড়ে ভারতেই চলে আসেন শেখ হাসিনা , তিনি এখন ভারতেরই আশ্রয়ে। এরই মধ্যে সোমবার ভারত ও বাংলাদেশের বিদেশসচিব পর্যায়ের বৈঠক হয়েছে। ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে হামলা থেকে সংখ্য়ালঘুদের বিরুদ্ধে নানা ঘটনা, বৈঠকে বিভিন্ন প্রসঙ্গে কথা হয়। ভারত যে বাংলাদেশের সঙ্গে সুসম্পর্ক চায় তাও জানান বিদেশ সচিব । বৈঠক শেষে বিদেশসচিব বিক্রম মিস্রী জানান, 'আমি জোর দিয়ে বলতে চাই, বাংলাদেশের সঙ্গে ভারত ইতিবাচক, গঠনমূলক এবং উভয়ের ক্ষেত্রে লাভজনক একটা সম্পর্ক চায়। আমরা অতীতেও এই সম্পর্ক বজায় রেখেছি এবং ভবিষ্যতেও জনগণকেন্দ্রিক সেই সম্পর্ক বজায় রাখতে চাই' । কিন্তু নয়াদিল্লির বন্ধুত্বের বার্তার পরও যে বাংলাদশ মোটেও পাল্টায়নি, তার প্রমাণ উগ্রবাদী নেতাদের এই বক্তব্য ।