লাহৌর: তীব্র বিস্ফোরণে ফের কেঁপে উঠল পাকিস্তান। বিস্ফোরণের নেপথ্যে সন্ত্রাসযোগ রয়েছে বলে সন্দেহ। পাকিস্তানের বালুচিস্তানের মাসতুং জেলার কোয়েট্টা স্টেশনে বিস্ফোরণ ঘটেছে। এখনও পর্যন্ত ২৪ জনের মৃত্যুর খবর মিলেছে। আহত হয়েছেন ৫০ জনের বেশি। সোশ্যাল মিডিয়ায় বিস্ফোরণের যে ভিডিও সামনে এসেছে, তাতে স্টেশনে ভিড় দেখা গিয়েছে। সেই আবহেই আচমকা তীব্র শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে। আগুনের ফুলকি, ধোঁয়ায় ঢেকে যায় চারিদিক। (Pakistan Quetta Blast)


এর আগের সপ্তাহেই বালুচিস্তানের মাসতুঙ্গে একটি স্কুল এবং হাসপাতালের কাছে বিস্ফোরণ ঘটে, যাতে পাঁচ শিশুর মৃত্যু হয়। আরও বেশ কয়েক জন মারা যান এবং আহত হন। সেই রেশ কাটতে না কাটতেই শনিবার তীব্র বিস্ফোরণে কেঁপে উঠল রেল স্টেশন। এমনিতেই গত এক বছরে বালুচিস্তান এবং পাখতুনখোয়া অঞ্চলে নাশকতামূলক হামলার ঘটনা বেড়েছে। সন্ত্রাসবাদীদের আনাগোনাও ওই অঞ্চলে বেড়ে গিয়েছে উল্লেখযোগ্যা ভাবে। সেই আবহেই পর পর এমন ঘটনা, যাকে ঘিরে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। (Pakistan News)


এদিনের ঘটনায় কোয়েট্টার কমিশনার হামজা শফকত জানিয়েছেন, আত্মঘাতী বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছে। হামলার দায় স্বীকার করে নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন বালুচিস্তান লিবারেশন আর্মি (BLA). প্রায় দেড় মাস পরিষেবা বন্ধ থাকার পর, গত ১১ অক্টোবরই কোয়েট্টা থেকে পাকিস্তানে পুনরায় ট্রেন চলাচলের ঘোষণা করে পাকিস্তান রেলওয়ে। আর তার পরই এমন ঘটনা ঘটল। (Quetta Blast) আবারও ট্রেন পরিষেবা বন্ধ রাখতে রেলকে চিঠি দিয়েছেন হামজা।


এদিনের ঘটনায় বিস্ফোরণস্থল থেকে যে ছবি এবং ভিডিও সামনে এসেছে, তাতে সারি সারি দেহ পড়ে থাকতে দেখা গিয়েছে। ছিন্নভিন্ন অবস্থায় পড়ে রয়েছে রেল স্টেশনে যাত্রীদের জিনিসপত্র। রক্তাক্ত দেহগুলি তুলে নিয়ে যেতে দেখা গিয়েছে সাধারণ মানুষকে। বার বার এমন বিস্ফোরণ ঘটিয়ে সাধারণ মানুষকে কেন খুন করা হচ্ছে, সেই নিয়ে প্রশ্ন তুলছে পাকিস্তান সরকার এবং মানবাধিকার সংগঠনগুলি। যে সময় ঘটনা ঘটে স্টেশন থেকে পেশোয়ারের উদ্দেশে রওনা দিতে প্রস্তুত হচ্ছিল জাফর এক্সপ্রেস। আপাতত যাত্রা বন্ধ রয়েছে।


এর আগে, গত ২৬ অগাস্ট থেকে ওই অঞ্চলে রেল পরিষেবা বন্ধ ছিল। কোলপুর এবং মচ, এই দুই এলাকাকে সংযোগকারী সেতুটি বিস্ফোরণ ঘটিয়ে উড়িয়ে দেওয়া হয়। তার জেরেই এমন সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। নতুন করে পরিষেবা শুরু হওয়ার পর এক মাসও কাটল না। আবারও বিস্ফোরণ ঘটল। আহতদের ইতিমধ্যেই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সাধারণ মানুষকে রক্তদানে আহ্বান জানিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। কোয়েট্টার সিনি.র পুলিশ সুপার মহম্মদ বালোচ জানিয়েছেন, বিস্ফোরণের সময় ১০০-র বেশি মানুষ প্ল্যাটফর্মের ওই জায়গায় ছিলেন। হতাহতের সংখ্যা বাড়তে পারে।