নয়াদিল্লি: সব মিলিয়ে ২৬ দিন ধরে শীতকালীন অধিবেশন চলল এবছর। কিন্তু কম কাজের নিরিখে রেকর্ড গড়ল এবারের শীতকালীন অধিবেশন। ২০১৪ সালে কেন্দ্রে ক্ষমতা দখল করে নরেন্দ্র মোদি নেতৃত্বাধীন বিজেপি। সেই থেকে নবমবারের জন্য কম কাজের রেকর্ড গড়ল সংসদের শীতকালীন অধিবেশন। সংসদ চালাতে প্রতি মিনিটে ২.৫ লক্ষ টাকা করে খরচ হয়।  (Parliament Winter Session)


যে লক্ষ্য রাখা হয়েছিল, তার মধ্যে ৫২ শতাংশ কাজ হয়েছে লোকসভায়। রাজ্যসভায় কাজের হার ৩৯ শতাংশ। এবারের শীতকালীন অধিবেশনে লোকসভায় মাত্র ২৩ ঘণ্টাই আইন প্রণয়ন সংক্রান্ত কাজকর্ম হয়েছে। রাজ্যসভায় কাজ হয়েছে মাত্র ন'ঘণ্টা।  এবারের শীতকালীন অধিবেশনে সংবিধানের ৭৫ বছর পূর্তি নিয়েই বেশি সময় ধরে আলোচনা হয়েছে। (Parliament Working Hours)


১৯ দিনের মধ্যে ১৫ দিন লোকসভায় কাজ হয়নি। ২০ দিনের মধ্যে আট দিন কাজ হয়েছে ১০ মিনিটের কিছু বেশি সময়। শুধুমাত্র সংবিধান নিয়ে দু'দিন ধরে আলোচনা হয়। 


এবছর শীতকালীন অধিবেশনে লোকসভায় ২০টি অধিবেশন হয়। কিন্তু হই-হট্টগোলে ৬৫ ঘণ্টা নষ্ট হয়। এর আগে, ২০২১ সালের বাদল অধিবেশনে ৭৮ ঘণ্টা নষ্ট হয়েছিল। ২০২৩ সালের বাজেট অধিবেশনে ৯৬ ঘণ্টা নষ্ট হয়। সময় নষ্টের পর বাড়তি ২২ ঘণ্টা লোকসভার অধিবেশন বসে।  কিন্তু গত বাজেট অধিবেশনের পর বাড়তি ৩৪ ঘণ্টা অধিবেশন বসেছিল। এবারের অধিবেশনে লোকসভায় সবচেয়ে কম বিল পেশ হয়। মোট পাঁচটি বিল পাস হয়, যার মধ্যে পাস হয়েছে চারটি। ২০২৩ সালের বিশেষ অধিবেশনে শুধুমাত্র মহিলা সংরক্ষণ বিল পাস হয়। 


এবারের শীতকালীন অধিবেশনে দু'টি বিল পেশ হয়। দু'টিই 'এক দেশ এক নির্বাচন' নিয়ে। বিলটি আপাতত যৌথ সংসদীয় কমিটির কাছে পাঠানো হয়েছে। এবারের শীতকালীন অধিবেশনে ওয়াকফ সংশোধনী বিল পেশ হওয়ার কথা ছিল। সেটি সংসদীয় কমিটির কাছে রয়েছে। আগামী অধিবেশনে উত্থাপন করা হতে পারে। এবারের অধিবেশনে লোকসভায় ওয়াকফ বিল নিয়ে পাঁচ ঘণ্টার কম আলোচনা হয়। সেই তুলনায় ২০২৪ সালে বিপর্যয় মোকাবিলা (সংশোধনী) বিল নিয়ে আলোচনা হয়েছিল প্রায় সাড়ে সাত ঘণ্টা ধরে। 


শীতকালীন অধিবেশন ঘিরে এবার আগাগোড়া উত্তপ্ত ছিল সংসদ। আদানি ইস্যুতে সংসদে আলোচনা চেয়ে সরব হয়েছিলেন বিরোধীরা। কিন্তু সরকার সেই নিয়ে কোনও আলোচনায় যায়নি। বরং বার বার অধিবেশন স্থগিত হয়ে যায়। সংসদের বাইরে সেই নিয়ে বিক্ষোভ দেখান বিরোধীরা। এর পর সংবিধান নিয়ে আলোচনার সময় অমিত শাহ বাবাসাহেব আম্বেডকরকে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করেন। সেই নিয়েও উত্তাল হয় পরিস্থিতি। শাহের ইস্তফা দাবি করেন বিরোধীরা, তাঁকে ক্ষমা চাইতে হবে বলে দাবি জানান। সেই নিয়ে সংসদ চত্বরে শাসক এবং বিরোধীদের মধ্যে ধাক্কাধাক্কিও বাধে। সেই নিয়ে রাহুল গাঁধীর বিরুদ্ধে মামলাও দায়ের হয়েছে।