পাটনা: 'যে নীতি এবং আদর্শের ওপর ভারত দাঁড়িয়ে আছে তার ভিতে আক্রমণ চালাচ্ছে বিজেপি, আরএসএস', এটা আদর্শের লড়াই আর এখানে আমরা সবাই একসঙ্গে আছি'। পটনায় বৈঠকের পর এমনটাই জানালেন রাহুল গাঁধী। এদিন তিনি আরও বলেন, 'আমাদের মধ্যে ছোটখাটো মতপার্থক্য থাকতেই পারে কিন্তু আমরা ঠিক করেছি যে আমরা একসঙ্গেই কাজ করব। আমাদের আদর্শকে আমরা রক্ষা করব। বিরোধীদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার প্রক্রিয়া আজ শুরু হল এবং এটা আমরা এগিয়ে নিয়ে যাব'। 


পাটনায় (Patna) বৈঠকের পর, একজোট হয়ে মোদি সরকারের (Narendra Modi) বিরুদ্ধে লড়াইয়ের বার্তা দিল বিরোধী দলগুলো। আগামী মাসে ফের শিমলায় বৈঠকে বসতে চলেছে বিরোধীরা। তবে এ দিনের বৈঠকে বিরোধী-অনৈক্য়ের ছবিও সামনে এসেছে। অর্ডিন্য়ান্স-ইস্য়ুতে কংগ্রেসের নীরবতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন কেজরিওয়াল। জল্পনা উস্কে সাংবাদিক বৈঠকের আগেই বেরিয়ে যান তিনি।


পাটনা সফরে গিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী (CM Mamata Banerjee)। তাঁর সঙ্গে রয়েছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। আজ দুপুরে বিরোধী জোটের সঙ্গে প্রথম সম্মিলিত বৈঠক সারলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। কংগ্রেসের (Congress) তরফে বৈঠকে ছিলেন রাহুল গাঁধী। এর আগে নবান্নে (Nabanna) এসে মমতার সঙ্গে বৈঠক করে গিয়েছিলেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার ও উপ মুখ্যমন্ত্রী লালু-পুত্র তেজস্বী যাদব। মমতাই প্রস্তাব দেন বিরোধী জোটের প্রথম বৈঠক পাটনায় করার।


কীভাবে ২০২৪-এর লোকসভা ভোটে তৃতীয়বারের জন্য ক্ষমতায় আসা থেকে বিজেপিকে আটকানো যাবে, তা নিয়েই মূলত এই বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। একের বিরুদ্ধে এক অর্থাৎ যে যেখানে শক্তিশালী সেখানে সরাসরি বিজেপির সঙ্গে লড়াই, এটাই মমতার ফর্মুলা। 


কংগ্রেস নেতা রাহুল গাঁধী বলেন, 'এটা বিচারধারার লড়াই। আর তাতে আমরা সবাই একসঙ্গে আছি। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, আমরা একসঙ্গে কাজ করব। পাটনায় ১৫টি বিরোধী দলের বৈঠকে শীর্ষনেতাদের মুখে ঐক্য়বদ্ধ হয়ে লড়াইয়ের কথা উঠে এলেও, তা কি আদৌ সম্ভব? এই প্রশ্ন সবচেয়ে জোরাল হচ্ছে বঙ্গ রাজনীতির গতিপ্রকৃতি দেখে।


বাংলায় তৃণমূলের সঙ্গে সিপিএম-কংগ্রেসের দ্বৈরথ তুঙ্গে। নিয়োগ দুর্নীতি থেকে গরু-কয়লা কেলেঙ্কারি, তৃণমূলকে চাছাঁছোলা ভাষায় আক্রমণ করে চলেছে অধীর চৌধুরী-মহম্মদ সেলিমরা! পাল্টা জবাব দিচ্ছেন মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়রা। এই পরিস্থিতিতে প্রশ্ন


৪২টি লোকসভা আসন বিশিষ্ট পশ্চিমবঙ্গে কি আদৌ তৃণমূল-কংগ্রেস ও সিপিএমের মধ্য়ে জোট হতে পারে? রাহুল গান্ধী-মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়-সীতারাম ইয়েচুরি একসঙ্গে এক বৈঠকে উপস্থিত থাকলেও একে অপরকে কি পশ্চিমবঙ্গে আসন ছাড়বে?


সাগরদিঘিতে কংগ্রেসের টিকিটে জিতে বায়রন বিশ্বাসের তৃণমূলে যোগদান থেকে পঞ্চায়েত ভোটে কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়ে সংঘাত। সম্প্রতি কংগ্রেসকে তুলোধনা করেন মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়। খোদ রাহুল গান্ধীকে সাম্প্রতিক অতীতে সরাসরি আক্রমণ করেছেন তৃণমূল নেত্রী। কিছুদিন আগেই তিনি বলেছিলেন, "রাহুল গান্ধীকে বিজেপি তুলে ধরতে চাইছে, কারণ রাহুল বিজেপির সবচেয়ে বড় টিআরপি" কর্ণাটকে বিজেপিকে হারিয়ে ক্ষমতা দখলের পরও একটিবারের জন্য়ও কংগ্রেস কিংবা রাহুলের নাম মুখেও আনেননি মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়। আর তাই প্রশ্ন সব মিলিয়ে বিরোধীরা এক মঞ্চে এলেও, মনের মিল কোনওদিন হবে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।