নয়াদিল্লি:  স্থূলতা এখন ভয়ানক সমস্যা। অনেক রোগের শিকড়ই এই মোটা হওয়া। সম্প্রতি সারা বিশ্বে ও ভারতে এই স্থূলতা  বা ওবেসিটির হার বেড়েছে। এই বছরের শুরুতে  ল্যানসেটের এক গবেষণা চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে এনেছে। মনে করা হচ্ছে, খুব তাড়াতাড়ি এই স্থূলতার হার ভয়াবহ একটা জায়গায় পৌঁছতে পারে।  বিশ্বব্যাপী স্থূলতা কমানোর বিভিন্ন পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা ও গবেষণা চলছে।ল্যানসেটের গবেষণায় আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে,  ২০৫০ সালের মধ্যে, ভারতের জনসংখ্যার এক-তৃতীয়াংশেরও মানুষ স্থূলকায় হয়ে পড়বে। একথা এখন অনেকেই জানেন, স্থূলতা, হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোক, ডায়াবেটিস থেকে স্ট্রেসের সব রোগেরই ঝুঁকি বাড়ায়। আগামী ২০৪৭ সালের মধ্যে বিকশিত ভারতের স্বপ্ন দেখছে ভারত সরকার। আর দেশের সার্বিক উন্নতির জন্য প্রয়োজন সুস্বাস্থ্যের প্রতি নজর দেওয়া। মনে করেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও। তিনি তাঁর স্বাধীনতা দিবসের ভাষণে এই বিষয়টির উপর বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছেন। তিনি মনে করছেন, উন্নত স্বাস্থ্যে পেতে গেলে বিরাট কিছু না-করতে পারলেও ছোট ছোট কয়েকটি পদক্ষেপ করা যেতে পারে। যেমন  রোজকার রান্নায় কমপক্ষে ১০% কম তেল ব্যবহার করা। রান্নার তেল কেনা কমাতে পারলে আর প্রতিদিনের খাবারে ১০% কম তেল ব্যবহার করতে পারলেই সুস্বাস্থ্যের পথে একটা ভাল পদক্ষেপ করা যাবে। 

লালকেল্লা থেকে ভাষণে তিনি বলেন, ' স্থূলতা ভারতের জন্য একটি বিশাল জনস্বাস্থ্য সমস্যা হয়ে উঠেছে। মনে করা হচ্ছে  প্রতি তিন জনের মধ্যে অন্তত এক জন মানুষ অচিরেই স্থূলকায় হয়ে পড়বে। এই সমস্যা কাটিয়ে ওঠা দরকার।  সেইজন্যই আমি প্রতিটি পরিবারকে ১০% কম তেল কিনতে, ১০% কম তেল ব্যবহার করতে এবং স্থূলতার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে যোগ দেওয়ার পরামর্শ দিই"। 

এর আগেও বিভিন্ন সময় ফিটনেস নিয়ে নানারকম বক্তব্য রাখতে দেখা গিয়েছে তাঁকে। প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্যের সঙ্গে সহমত পোষণ করেন বহু চিকিৎসকই। চিকিৎসকরাও বলেন, হার্ট ভাল রাখতে, শরীরকে নানা রোগ ব্যাধি থেকে দূরে রাখতে তেল খাওয়ার পরিমাণ  ধীরে ধীরে হ্রাস করা দরকার। মাত্র এক টেবিল চামচ তেলে প্রায় ১২০ ক্যালোরি থাকে। এটা অনেকে না বুঝেই খেয়ে নেন। যেমন তেল দিয়ে মেখে মুড়ি, বা তেলে ভাজা সবজি, লুচি, পরোটা। তেলের ক্যালরিটার কথা ভুলেই যান তাঁরা। এছাড়া কিছু কিছু তেল বা তেলজাতীয় খাবার রক্তে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। তেলের ব্যবহার ১০% কমিয়ে আনতে পারলে অনেকটা কম ক্যালরি ইনটেক হয়। আর ক্যালরি সব সময় স্বাস্থ্যকর খাবার থেকে গ্রহণই বাঞ্ছনীয়, যার মধ্যে তেল পড়ে না। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং চিনের পরে ভারতেই এখন সর্বাধিক স্থূলকায় মানুষের বাস, দাবি বিভিন্ন আর্টিকলে। তাই সুস্থ ও ফিট থাকতে তেলের ব্যবহার কমানোর ছোট অথচ ফলপ্রসূ উপায়।