নয়াদিল্লি : ভারতের প্রধান বিচারপতি বিআর গাভাইয়ের সঙ্গে ফোনে কথা বলে তাঁকে আক্রমণের ঘটনার তীব্র নিন্দা করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। গতকাল সুপ্রিম কোর্ট চত্বরে ঘটে এই ঘটনা। এরপর সন্ধেয় প্রধান বিচারপতিকে ফোন করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, এই ঘটনা 'প্রত্যেক ভারতীয়কে ক্ষুব্ধ' করেছে।
এরপর এক্স হ্যান্ডেলে প্রধানমন্ত্রীর পোস্ট, 'ভারতের প্রধান বিচারপতি বিআর গাভাইজির সঙ্গে কথা বললাম। এদিন সুপ্রিম কোর্ট চত্বরে তাঁর উপরে হামলার ঘটনা প্রত্যেক ভারতীয়কে ক্ষুব্ধ করেছে। আমাদের সমাজে এই ধরনের নিন্দনীয় কাজের কোনও স্থান নেই। এটা সম্পূর্ণ নিন্দনীয়।'
গতকাল সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি বিআর গাভাইকে লক্ষ্য করে জুতো ছোড়েন বয়স্ক এক আইনজীবী। সকালে ঘটনাটি ঘটে। যদিও বেঞ্চ অবধি পৌঁছায়নি জুতোটি। তবে, সঙ্গে সঙ্গে ওই আইনজীবীকে হেফাজতে নেওয়া হয়। পরে প্রধান বিচারপতি বলেন, আদালত কক্ষের মধ্যে এই বিস্ময়কর ঘটনায় আমি বিচলিত নই। তাঁর কথায়, "এই ধরনের জিনিসে প্রাভাবিত হওয়ার ক্ষেত্রে আমিই শেষ ব্যক্তি।"
প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্য অনুযায়ী, দিনের প্রথম মামলা শুনতে সবে শুরু করেছিলেন প্রধান বিচারপতি। সেই সময় বয়স্ক ওই আইনজীবী স্লোগান তুলতে শুরু করেন। তিনি বলতে থাকেন, "সনাতনের অপমান ভারত সহ্য করবে না।" এরপরই বেঞ্চ লক্ষ্য করে জুতো ছোড়েন তিনি। আদালত কক্ষে থাকা নিরাপত্তাকর্মীরা দ্রুত এগিয়ে এসে ওই আইনজীবীকে হেফাজতে নেন। তবে, প্রধান বিচারপতিকে লক্ষ্য করে ছোড়া জুতো তাঁকে স্পর্শ করেনি।
এ ধরনের ঘটনার মধ্যেও শান্ত ছিলেন প্রধান বিচারপতি। আদালতে উপস্থিত থাকা এক আইনজীবী এমনই বলেছেন। প্রধান বিচারপতি বলেন, "এই ধরনের জিনিসে প্রাভাবিত হওয়ার ক্ষেত্রে আমিই শেষ ব্যক্তি। দয়া করে, শুরু করুন (শুনানি)।"
এনিয়ে পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্তের দাবি জানিয়েছেন বর্ষীয়ান আইনজীবী ইন্দিরা জয়সিং। এক্স হ্যান্ডেলে একটি পোস্টে তিনি লেখেন, "ওই আইনজীবীর নাম প্রকাশ করতে হবে এবং তাঁর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে হবে। এটি ভারতের সুপ্রিম কোর্টের উপর একটি স্পষ্ট জাতিগত আক্রমণ বলে মনে হচ্ছে। সুপ্রিম কোর্টের সকল বিচারপতির এক যৌথ প্রেস বিবৃতির মাধ্যমে নিন্দা করা উচিত যে, আদালত আদর্শগত আক্রমণ সহ্য করবে না। আদালতের মর্যাদা রক্ষা করে, প্রধান বিচারপতি গাভাই কোনও দৃশ্যমান ব্যাঘাত ছাড়াই বিচারের কাজ চালিয়ে গেছেন।"
গত মে মাসে দেশের প্রধান বিচারপতি হন বিআর গাভাই।