নয়াদিল্লি : কেরলের ভিঝিমজাম আন্তর্জাতিক সমুদ্রবন্দরের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মন্তব্য ফের একবার স্পটলাইট ফেলল কংগ্রেস সাংসদ শশী তারুরের উপর। তাঁর ইহ্গিতপূর্ণ মন্তব্য, এই অনুষ্ঠানে কংগ্রেস সাংসদের উপস্থিতি কিছু মানুষের ঘুমের ব্যাঘাত ঘটাবে। প্রধানমন্ত্রীর কথায়, "আজ এখানে শশী তারুর বসে আছেন। আজকের অনুষ্ঠান কিছু মানুষের ঘুম কেড়ে নেবে। মেসেজ যেখানে যাওয়ার সেখানে চলে গেছে।"
তিরুঅনন্তপুরমের চার বারের কংগ্রেস সাংসদ শশী তারুর। গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই দলে তাঁর জায়গা নিয়ে নানা জল্পনা চলছে। বিশেষ করে কেরল কংগ্রেসে। যেখানে তিনি দলের রাজ্য নেতৃত্বের থেকে নিজের পৃথক পরিচিতি তুলে ধরা বাড়িয়েছেন। এই আবহে দিল্লি বিমানবন্দরের "অকার্যকর" অবস্থার কারণে বিমানের দেরি হওয়া সত্ত্বেও, তিরুঅনন্তপুরম বিমানবন্দরে প্রধানমন্ত্রী মোদিকে তারুরের ব্যক্তিগতভাবে স্বাগত জানানোর বিষয়টিও অলক্ষিত ছিল না রাজনৈতিক মহলের। প্রধানমন্ত্রীকে তাঁর স্বাগত জানানোর ছবি এখন সোশাল মিডিয়ায় ভাইরাস।
প্রধানমন্ত্রী মোদির অনুষ্ঠান মঞ্চে শশী তারুরের উপস্থিতি এমন একটা সময়ে ঘটল যখন তাঁর দলের নেতৃত্বের সঙ্গে, বিশেষ করে কেরালায়, তাঁর সম্পর্ক আলোচনার বিষয় হয়ে উঠেছে। সাম্প্রতিক সময়ে, তারুর রাজ্য কংগ্রেস ইউনিটের "নেতৃত্ব শূন্যতা"র কথা বলে প্রকাশ্যে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। এনিয়ে তিনি রাহুল গান্ধী-সহ সিনিয়র কংগ্রেস নেতাদের সঙ্গে বৈঠকও করেছেন। দলে তাঁর ভবিষ্যৎ নিয়েও আলোচনা হয়েছে। যদিও তাতে কোনও সুনির্দিষ্ট ফল মেলেনি।
এই বন্দর অনুষ্ঠানটি একটি হাই-প্রোফাইল অনুষ্ঠানও ছিল। কারণ, ৮,৮৬৭ কোটি টাকা আনুমানিক ব্যয়ে নির্মিত ভিঝিনজাম আন্তর্জাতিক সমুদ্রবন্দরটি ভারতের সবচেয়ে উচ্চাকাঙ্ক্ষী পরিকাঠামো প্রকল্পগুলির মধ্যে একটি। এই বন্দরটি আদানি পোর্টস এবং এসইজেড লিমিটেড কর্তৃক একটি পাবলিক-প্রাইভেট অংশীদারিত্বের আওতায় তৈরি করা হচ্ছে এবং আন্তর্জাতিক সামুদ্রিক বাণিজ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ ট্রান্সশিপমেন্ট হাব হিসেবে আবির্ভূত হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
আগাগোড়া কংগ্রেসি তারুরের সঙ্গে দলীয় নেতৃত্বের সংঘাত এই প্রথম নয়। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে মুখ থুবড়ে পড়ার পর, নেতৃত্বের সমালোচনা করে যে ২৩ জন নেতা চিঠি দিয়েছিলেন সনিয়া গাঁধীকে, সেই তালিকায় নাম ছিল তাঁর। এর পরও কংগ্রেসের টিকিটে ফের তিরুঅনন্তপুরম থেকে জয়ী হয়েছেন তারুর। এমনকি কংগ্রেস সভাপতি হওয়ার দৌড়েও একসময় শামিল ছিলেন। (Congress News)
সেই তারুরের সঙ্গে সম্প্রতি ফের সংঘাত দেখা দিয়েছে কংগ্রেসের। সম্প্রতি মোদির প্রশংসা শোনা যায় তাঁর মুখে। কেরলে পিনারাই বিজয়ন নেতৃত্বাধীন LDF সরকারেরও প্রশংসা করেন। আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে মোদির সাক্ষাৎ নিয়ে ইতিবাচক অবস্থান নিতে দেখা যায় তারুরকে। আবার পিনারাইয়ের হাতে কেরলের অর্থনীতি এগিয়েছে বলেও মন্তব্য করেন তারুর। কেরলের কংগ্রেসের সংগঠনে খামতির দিকগুলিও তুলে ধরেন। সেই নিয়ে দলের অন্দরে অসন্তোষের সুর ধরা পড়ে।