পটনা: রাজনীতিকদের হয়ে রণকৌশল সাজিয়েছেন এতদিন। এবার নির্বাচনী রাজনীতিতে প্রবেশ করলেন প্রশান্ত কিশোর। আনুষ্ঠানিক ভাবে নিজের রাজনৈতিক দল হিসেবে জন সুরজ গ্রুপের সূচনা করলেন। দলের নাম হচ্ছে জন সুরজ পার্টি। শোনা যাচ্ছে, পরবর্তী বিধানসভা নির্বাচনে বিহারের সব আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে তাঁর দল। (Prashant Kishor)


নির্বাচনী রাজনীতিতে উদাহরণ সৃষ্টির কথা বার বার শোনা গিয়েছে প্রশান্তর মুখে। জাতপাতের রাজনীতি, কাদা ছোড়াছুড়ির ঊর্ধ্বে গিয়ে, ভবিষ্যৎমুখী রাজনীতির কথা বলতে শোনা গিয়েছে তাঁকে। তবে দলকে নেতৃত্বদানের ক্ষেত্রে এখনও নিজেকে সরিয়েই রেখেছেন তিনি। দলকে কে নেতৃত্ব দেবেন, তা গত দু'বছর ধরে দলকে দাঁড় করানোর কাজে লিপ্ত মানুষজন ঠিক করবেন বলে জানিয়েছেন। (Jan Suraaj Party)


২০২১ সালে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনের পরই ভোটকুশলী হিসেবে কেরিয়ারে ইতি টানার ঘোষণা করেন প্রশান্ত। এর পর জন সুরজের যাত্রা শুরু। গত দু'বছর ধরে বিহারের গ্রাম, শহরের বুকে ঘুরে বেরিয়েছেন তিনি। দীর্ঘ পদযাত্রার ফাঁকে জায়গায় জায়গায় সভা করেছেন। শুনেছেন সাধারণ মানুষের অভাব-অনুযোগের কথা। পেশাদার রাজনীতিকদের উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বার বার। 



গত দু'বছরে বিহার প্রায় চষে ফেললেও, রাজনৈতিক উচ্চাশা নিয়ে সেভাবে মুখ খুলতে দেখা যায়নি প্রশান্তকে। তবে এ বছরের গোড়ার দিকে প্রথমবার রাজনীতিতে প্রবেশের সম্ভাবনা উস্কে দেন তিনি। জানান রাজনৈতিক দলের সূচনা করতে প্রস্তুত তিনি। তথাকথিত রাজনীতির বাইরে মানুষের সামনে বিকল্প উপায় তুলে ধরবেন বলে জানান। 


বিহারের ভূমিপুত্র হিসেবে বিহার থেকেই রাজনৈতিক যাত্রা শুরু করলেন প্রশান্ত। বুধবার দলের সূচনা ঘটিয়ে বিহারবাসীর উদ্দেশে তিনি বলেন, "জোর গলায় 'জয় বিহার' রব তুলুন, যাতে কেউ আপনাকে বা আপনার সন্তানকে বিহারি বললে, তা গালির মতো না শোনায়। দিল্লি পর্যন্ত আওয়াজ পৌঁছতে হবে। বাংলা পর্যন্ত আওয়াজ পৌঁছক, যেখানে বিহার থেকে যাওয়া পড়ুয়াদের মারধর করা হয়। তামিলনাড়ু, দিল্লি, বম্বে, যেখানে যেখানে বিহারের সন্তানদের মার খেতে হয়েছে, সর্বত্র পৌঁছে যাক আওয়াজ।"


এর আগে, বিহারে নীতীশ কুমারের সংযুক্ত জনতা দলের সঙ্গে কাজ করেছেন প্রশান্ত। বিহারে দলকে চাঙ্গা করতে তাঁর দ্বারস্থ হয় কংগ্রেসও, কিন্তু শেষ পর্যন্ত সমঝোতা হয়নি। ২০২২ সালে কংগ্রেসের এমপাওয়ার্ড অ্যাকশন গ্রুপে প্রশান্তকে রাখতে চেয়েছিলেন কংগ্রেস নেতৃত্ব। কিন্তু কংগ্রেসের সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন প্রশান্ত। দলের গভীরে যে সমস্যাগুলি প্রোথিত হয়ে রয়েছে, তার সমাধানে নেতৃত্ব উদাসীন বলে দাবি করেন। এর পরই বিহার জুড়ে যাত্রা শুরু করেন, যাতে এবার রাজনীতির সিলমোহর পড়ল।