নয়াদিল্লি : পরিবর্তন হল নাম। উন্মোচিত হল গ্রানাইট কেটে তৈরি নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর (Netaji Subash Chandra Bose) মূর্তি। আর যে মঞ্চ থেকেই নাম না করে কংগ্রেস সরকারের বিরুদ্ধে নেতাজিকে ভুলিয়ে দেওয়ার চেষ্টার অভিযোগ তুললেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Prime Minister Narendra Modi)। কংগ্রেসকে সরাসরি আক্রমণ না করলেও তাঁর আক্রমণের ইঙ্গিত যে দীর্ঘদিন ভারতশাসন করা কংগ্রেসের দিকেই ছিল, তেমনটাই মনে করছে রাজনৈতিক তথ্যভিজ্ঞ মহল। প্রধানমন্ত্রী সরাসরি আক্রমণের সুরে বললেন, '‘স্বাধীনতার পর নেতাজিকে ভুলিয়ে দেওয়ার চেষ্টা হয়েছে। গত পাঁচ বছরে সরকারের সিদ্ধান্তে নেতাজির কর্তব্যের ছাপ রয়েছে’।
মোদির সুভাষ বন্দনা
কর্তব্যপথের নাম পরিবর্তনের পর নেতাজির মূর্তি উন্মোচন করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেন, 'নেতাজি মহামানব ছিলেন। গোটা বিশ্ব নেতা মানত নেতাজিকে। নেতৃত্বে দেওয়ার ক্ষমতা ছিল নেতাজির। আর ভারতের গৌরবময় ঐতিহাস ভারতীয়দের রক্তে রয়েছে। নেতাজি ভারতকে দ্রুত আধুনিক বানানোর প্রচেষ্টায় ছিলেন। নেতাজির পথে চললে দেশ অনেক এগিয়ে যেত। নেতাজি ১২৫ বছর জন্মজয়ন্তীতে কলকাতার বাড়িতে গিয়েছিলাম।'
প্রধানমন্ত্রী জোড়েন, ‘দেশের পথ প্রদর্শক ছিলেন নেতাজি। ১৯৪৭ সালে আন্দামানকে স্বাধীন করেছিলেন নেতাজি। আমাদের সরকারের প্রচেষ্টায় নেতাজি ও আজাদ হিন্দ ফৌজকে নিয়ে মিউজিয়াম বানানো হয়েছে। আর এদিন জর্জ পঞ্চমের বদলে নেতাজির মূর্তি স্থাপন হল।'
৬৫ মেট্রিক টনের ২৮ ফুটের নেতাজি মূর্তি
রাজপথের নাম বদলে করা হল কর্তব্য পথ। ইন্ডিয়া গেটে নেতাজি সুভাষের মূর্তির আবরণ উন্মোচন করলেন প্রধানমন্ত্রী। ২৮০ মেট্রিক টন গ্র্যানাইট কেটে তৈরি করা হয়েছে ৬৫ মেট্রিক টনের এই ২৮ ফুটের নেতাজি মূর্তি। তেলঙ্গানার খাম্মাম থেকে ১৪০ টি চাকার ১০০ ফুটের বিশেষ গাড়িতে দিল্লি আনা হয়েছে মূর্তি। ইন্ডিয়া গেট থেকে রাষ্ট্রপতি ভবন পর্যন্ত রাস্তার নামকরণ করা হয়েছে কর্তব্যপথ।
দুটি প্রসঙ্গ জুড়ে অনুষ্ঠানের শেষলগ্নে প্রধানমন্ত্রী জানালেন, 'সপ্তাহে শুক্র, শনি, রবিবার সন্ধ্যায় নেতাজিকে নিয়ে ড্রোন শো হবে কর্তব্যপথে। আপনারা আসুন, দেখুন। আত্মনির্ভর ভারতের অংশ হোন। আর পরিবারের সঙ্গে নিজেদের ছবি, সেলফি তুলে সোশালে পোস্ট করতে ভুলবেন না। হ্যাশট্যাগে থাকুক কর্তব্যপথ।'
কেন কর্তব্যপথ?
কেন রাজপথের নাম বদলে কর্তব্যপথ, সেই ব্যাখ্যাও দেন প্রধানমন্ত্রী। নরেন্দ্র মোদি বলেন, 'কর্তব্যপথে যখন দেশের লোক আসবে, তখন নেতাজির মূর্তি প্রেরণা দেবে।রাজপথ ছিল পরাধীনতার প্রতীক। রাজপথ ব্রিটিশদের জন্য ছিল, ভারতের পরাধীনতার প্রতীক। রাজপথে আর্কিটেকচার বদলেছে, আত্মাও বদলেছে। কর্তব্যপথে হাঁটলে দেশই প্রথম, এই ভাবনা মনে আসবে। ভবিষ্যতে কর্তব্যের রাস্তা দেখাবে কর্তব্যপথ। কর্তব্যপথের শ্রমিকরা আগামী ২৬ জানুয়ারিতে আমার বিশেষ অতিথি থাকবেন’।