নয়াদিল্লি: মোদি-পদবী নিয়ে মানহানি মামলায় (Defamation Case) সুপ্রিম কোর্টে (Supreme Court) হলফনামা জমা দিলেন কংগ্রেস নেতা রাহিুল গাঁধী (Rahul Gandhi)। একটি তুচ্ছ বিষয়কে খামোকা বড় করে দেখানো হচ্ছে বলে তাতে দাবি করলেন তিনি। এই মামলায় একজন সাংসদ হিসেবে এই মামলা তার প্রভূত ক্ষতিসাধন করেছে বলেও শীর্ষ আদালতে জানিয়েছেন রাহুল। দণ্ডাদেশে স্থগিতাদেশ চেয়ে আবেদন জানিয়েছেন রাহুল, যাতে সংসদের অধিবেশনে অংশ নিতে পারেন তিনি।
রাহুলের বিরুদ্ধে অপরাধমূলক মামলা দায়ের করেছিলেন গুজরাতের বিজেপি বিধায়ক পূর্ণেশ মোদি। আদালতে রাহুলকে 'অহঙ্কারী' বলে উল্লেখ করেন তিনি। তারই জবাবে শীর্ষ আদালতে হলফনামা জমা দেন রাহুল। তাতে পূর্ণেশের দাবিকে অসূয়াপূর্ণ বলে দাবি করেছেন তিনি। রাহুলের তরফে তাঁর আইনজীবীরা আদালতে জবাবি হলফনামাটি জমা দিয়েছেন।
গুজরাত হাইকোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন রাহুল। এর আগে, গুজরাত হাইকোর্টেও আবেদন জানান তিনি। দণ্ডাদেশে স্থগিতাদেশ দেওয়ার আর্জি জানান। কিন্তু গুজরাত হাইকোর্টে তাঁর সেই আবেদন গৃহীত হয়নি। এর পরই শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হন তিনি। মানহানির মামলাকে কৌশল বলে সেখানে উল্লেখ করেছেন তিনি। রাহুলের দাবি, তুচ্ছ বিষয়কে ইচ্ছাকৃত ভাবে বড় করে দেখানো হচ্ছে, যাতে তাঁকে দিয়ে ক্ষমা চাওয়ানো যায়। এতে আদালতেরও অবমাননা হচ্ছে বলে দাবি করেন তিনি। তিনি যে মন্তব্য করেন, তাতে মামলাকারীকে কোনও ভাবেই অপমান করা হয়নি বলেও জানান রাহুল।
শীর্ষ আদালতে জমা দেওয়া হলফনামায় রাহুল আরও জানান, তাঁর বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হচ্ছে, তাতে কোনও দিক থেকেই দোষী নন তিনি। আদালতের দণ্ডাদেশেরও ভিত্তি নেই কোনও। রাহুল জানিয়েছেন, ক্ষমা চাওয়ার মতো কিছু করে থাকলে, ঢের আগেই ক্ষমা চেয়ে নিতেন তিনি। কিন্তু মামলাটিই সারবত্তাহীন বলে জানিয়েছেন রাহুল। রাহুলের আইনজীবী জানান, গোড়ার দিকে নিজেকে মোদি সমাজের প্রতিনিধি বলে দাবি করেন পূর্ণেশ। কিন্তু সরকারি রেকর্ডে মোদি সমাজ বলে কিছু নেই। মোদি বণিক সমাজ, মোধ ঘাঁচি সমাজ রয়েছে শুধু। পরে আবার অবস্থান বদলে পূর্ণেশ দাবি করেন, তিনি প্রকৃতপক্ষে মোদি সমাজের নন, বরং ভুটালা।
২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের প্রচারে বেরিয়ে কর্নাটকে নীরব মোদি, ললিত মোদির সঙ্গে একসারিতে বসিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে আক্রমণ করেন রাহুল। তাঁর সেই মন্তব্যের প্রেক্ষিতেই অপরাধমূলক মানহানি মামলা দায়ের করেন পূর্ণেশ। তার পর বিষয়টি না এগোলেও, এ বছরের গোড়ায় চার বছর পুরনো সেই মামলায় রাহুলকে দোষী সাব্যস্ত করে গুজরাতের আদালত। তাতে সাংসদ পদ বাতিল হয় তাঁর। হাতছাড়া হয় সরকারি বাসভবনও। রাহুল এবং কংগ্রেসের দাবি, মামলা শুধুমাত্র বাহানা, আসলে গৌতম আদানির সঙ্গে মোদির সংযোগ তুলে ধরেছিলেন তিনি, তাই সংসদ থেকে তাঁকে দূরে রাখতেই চক্রান্ত করে সাংসদ পদ বাতিল করা হয়েছে।