নয়া দিল্লি: রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের পরিণতি কেবল রক্তক্ষয়ী, প্রাণক্ষয়ী হবে না। এর পরিণতি হতে পারে আরও মারাত্মক। তা পরিবেশ ও মানবসভ্যতার জন্যও এক ভয়ঙ্কর সময় ডেকে আনতে পারে। এই যুদ্ধের ফলে এমন কিছু অঞ্চলে খাদ্য সঙ্কট দেখা যাবে, যেখানে ইতিমধ্যেই এই সমস্যা রয়েছে। রয়েছে নিরাপত্তাহীনতাও। ইতিমধ্যেই খাদ্য-আমদানিকারক দেশগুলিতে কিছুটা প্রভাব দেখা যাচ্ছে। 


রাশিয়ার এই আগ্রাসন নীতির ফলে শস্য ও তৈলবীজের সরবরাহ প্রশ্নের মুখে পড়ছে। বিশ্ববাজারে অপরিশোধিত তেলের দামও বেড়েছে।  স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের সেন্টারের গ্লোবাল ফুড সিকিউরিটি প্রোগ্রামের ডিরেক্টর ক্যাটলিন ওয়েলশ বলেছেন, ব্ল্যাক সি-সংলগ্ন এলাকায় কৃষিতে এই যে ব্যাঘাত ও প্রভাব পড়ল তা কাটতে কয়েক মাস বা এমনকি বছরও লাগতে পারে। বিশ্বব্যাপী খাদ্য এবং জ্বালানী সরবরাহের ব্যাঘাতের ফলে খাদ্যের দাম আরও বৃদ্ধি পাবে। এমনিতেই এই যুদ্ধের ফলে পরিস্থিতিতে কার্যতই দিশেহারা অবস্থা ইউক্রেনের। ভৌগলিক অবস্থানের জেরে রাশিয়াকে টপকে আমেরিকা, ব্রিটেনের বলে বলীয়ান হওয়া সম্ভব নয় তার পক্ষে, কারণ সে ক্ষেত্রে সবরকম ভাবে রাশিয়ার উপর নির্ভরশীল ইউক্রেনে কার্যতই খাদ্য, বস্ত্র, পণ্যের জোগানে ভাটা পড়বে। 


আরও পড়ুন, ইউক্রেনে 'ভ্যাকুয়াম বোম' ব্যবহার করছে রাশিয়া? কতটা ভয়ঙ্কর এই অস্ত্রটি?


সাম্প্রতিক সময়ে যে রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে সেখানে বলা হয়েছে ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের আগে করোনা অতিমারীর একটি প্রভাব ছিলই। চাকরি হারানো, খাদ্যদ্রব্যর মূল্যে বৃদ্ধি মানুষকে নিরাপত্তাহীন করে তুলেছে। রীতিমতো রেকর্ড সংখ্যক মাত্রায় বেড়েছে তা। এমনটাই জানিয়েছেন ওয়ালশ। বিশ্ববাজারে খাদ্য মজুদ এবং রেকর্ড-নিম্ন জ্বালানির দাম সত্ত্বেও খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার এই বৃদ্ধি ঘটেছে।


এই যুদ্ধ বিশ্বব্যাপী কৃষি বাজারেও বিপদ ডেকে আনতে পারে। অস্ট্রেলিয়া, বার্মা, রাশিয়া এবং অন্যান্য - প্রধান উৎপাদকদের মধ্যেও উৎপাদন হ্রাসের ফলে দাম বৃদ্ধি দেখা গিয়েছে। হাইতি থেকে কোট ডি'আইভরি পর্যন্ত প্রায় ৪০টি অন্যান্য দেশে দাঙ্গা হয়েছে এই খাদ্য সমস্যা নিয়েই। ইউক্রেন এবং রাশিয়া থেকে অন্যান্য শস্য এবং তৈলবীজের মজুদ হ্রাস পেয়েছে। আফগানিস্তান, সিরিয়া, ইথিওপিয়া এবং অন্যান্য দেশগুলির সংকটকে আরও বাড়িয়ে তুলতে পারে। রাশিয়ার কৃষি খাতে আরোপিত যে কোনও নিষেধাজ্ঞা সীমিত প্রভাব ফেলবে বিশ্ববাজারে, এমনটাই মত ওয়াকিবহাল মহলের।