ইসলামাবাদ: পাকিস্তানকে ঋণ হিসেবে তেল দেওয়ার সিদ্ধান্ত থেকে সরে এল সৌদি আরব। কাশ্মীর নিয়ে বিবাদের জেরে অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কান্ট্রিজ (ওআইসি) ভেঙে দেওয়ার হুমকি দিয়েছিল ইমরান খান সরকার। তার প্রেক্ষিতেই পাকিস্তানের বিরুদ্ধে এমন পদক্ষেপ করল সৌদি আরব।
অর্থনৈতিক সঙ্কটে জর্জরিত পাকিস্তান। এই পরিস্থিতিতে সৌদি আরবের কাছ থেকে ২০১৮ সালে ৬.২ লক্ষ কোটি ডলার ঋণ নিয়েছিল পাকিস্তান। ঋণের শর্তে বলা হয়েছিল, কোনও বছর সৌদি আরবের যদি ঋণ দিতে দেরি হয়, তা হলে তারা ইসলামাবাদকে ৩.২ লক্ষ কোটি ডলার মূল্যের তেল সরবরাহ করবে। গত শনিবার পাকিস্তান সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, ওই ঋণ-বিলম্বে তেল প্রদানের শর্ত মাস দুয়েক আগেই শেষ হয়েছে। কিন্তু রিয়াধ আর ওই শর্তে পুনরায় সই করেনি। পাক সংবাদমাধ্যমের একাংশের মতে, রিয়াধের এই সিদ্ধান্তের পিছনে রয়েছে পাকিস্তান বিদেশমন্ত্রী শাহ মেহমুদ কুরেশির একটি মন্তব্য। সম্প্রতি পাক বিদেশমন্ত্রী একটি টেলিভিশন চ্যানেলে বলেছিলেন, সৌদি আরবের নেতৃত্বাধীন ওআইসি যদি কাশ্মীর নিয়ে বিদেশমন্ত্রীদের বৈঠক না-ডাকে তা হলে পাকিস্তান পদক্ষেপ করবে। সেক্ষেত্রে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইসলামিক দেশগুলির বিদেশমন্ত্রীদের বৈঠক ডাকবেন কাশ্মীর নিয়ে।
ইসলামিক দেশগুলির সবচেয়ে বড় সংগঠন ওআইসি। গত কয়েক বছর ধরে কাশ্মীর নিয়ে বৈঠক ডাকার জন্য ওআইসি-র উপর চাপ বাড়াচ্ছে ইসলামাবাদ। কিন্তু কাজের কাজ হয়নি। গত বছরের আগস্টে জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা প্রত্যাহার করে নরেন্দ্র মোদি সরকার। জম্মু-কাশ্মীর রাজ্য ভেঙে দুটি পৃথক কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল করা হয়। এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে সরব হয় পাকিস্তান। ওআইসি-তেও ভারতের বিরুদ্ধে সমর্থন আদায়ে মরিয়া চেষ্টা চালিয়েছে ইসলামাবাদ। কিন্তু ইতিবাচক ফল মেলেনি। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশের মতে, তুরস্কের সঙ্গে পাকিস্তানের সখ্যের কারণে ইসলামাবাদ থেকে দূরত্ব বাড়াচ্ছে রিয়াধ। কারণ, ওআইসির প্রধানের পদ থেকে সৌদি আরবকে সরিয়ে ইসলামিক দেশগুলির এই সংগঠনের মাথায় বসতে চেষ্টা চালাচ্ছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইপ এর্ডোগান। কাশ্মীর প্রশ্নে পাকিস্তানের অবস্থানকে প্রকাশ্যে সমর্থন জানিয়েছে তুরস্ক।