শনিবার অমিত শাহর সভায় শুভেন্দু অধিকারী বিজেপিতে যোগ দেবেন বলে ঠিকই ছিল। সেই মতো সকাল সকালই কাঁথির বাড়ি শান্তিকুঞ্জ থেকে কালো স্করপিও চড়ে রওনা দেন তিনি। অমিত শাহ পৌঁছনোর কিছুক্ষণ আগেই তিনি পৌঁছে যান সভাস্থলে। কিছুক্ষণ পর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সভাস্থলে পৌঁছে যখন মঞ্চে ওঠেন, পিছন পিছন ওঠেন শুভেন্দুও। এক সময়ে কথায় কথায় শুভেন্দু যাঁকে আক্রমণ করতেন, সেই দিলীপ ঘোষ এদিন হাত ধরে তাঁকে নিয়ে যান অমিত শাহর কাছে। শুভেন্দু নীচু হয়ে অমিত শাহকে প্রণাম করেন। শুভেন্দুকে বুকে টেনে নেন তিনি। কিছুক্ষণ বাদে ফের শাহের পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করেন শুভেন্দু। বক্তৃতায় অমিত শাহকে বড় ভাই সম্বোধন করে তিনি বলেন, ২০১৪ সালে তাঁর সঙ্গে অমিত শাহের প্রথম সাক্ষাৎ। তখন অমিত শাহ বিজেপির জাতীয় সভাপতি। দেখা হয় দিল্লির অশোক রোডের পুরনো পার্টি অফিসের একটা ছোট্ট ঘরে। দেখা করিয়ে দেন উত্তর প্রদেশের বর্তমান স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও সে সময় পশ্চিমবঙ্গ বিজেপির দায়িত্বে থাকা সিদ্ধার্থনাথ সিংহ। সিদ্ধার্থনাথ তাঁকে বড় ভালবাসতেন, কখনও বিজেপিতে যোগ দেওয়ার ব্যাপারে তাঁকে কিছু বলেননি। জানালেন শুভেন্দু অধিকারী। তিনি বলেন, অমিত শাহ তাঁর বড় দাদার মত। মাসকয়েক আগে যখন তিনি করোনায় আক্রান্ত হন, তখন যে তৃণমূলকে জীবনের ২১টা বছর দিয়েছেন, বিয়ে করেননি, দলের জন্য গ্রামে গ্রামে ঘুরেছেন, তাদের কেউ খোঁজ নেননি। খোঁজ নেন খোদ দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। আর আজ পৃথিবীর সব থেকে বড় পার্টি, গীতার বহুজন সুখায় বহুজন হিতায় বসুধৈব কুটুম্বকমে বিশ্বাসী, জাতীয়তাবাদ, দেশপ্রেম, বহুত্ববাদে বিশ্বাসী ভারতীয় জনতা পার্টির প্রাথমিক সদস্য হিসেবে তাঁকে গ্রহণ করলেন তিনি। তাঁকে কোটি কোটি নমস্কার।
শুভেন্দু আরও বলেন, মুকুল রায় তাঁকে বলেছিলেন, শুভেন্দু, আত্মসম্মানবোধ থাকলে তৃণমূলে থাকবি না, কিচ্ছু দরকার নেই, এখানে চলে আয়, আমরা সম্মান নিয়ে বেঁচে থাকতে পারব। তৃণমূলের বিরুদ্ধে প্রতিশোধস্পৃহার অভিযোগ করে তিনি বলেন, অর্জুন সিংহের বিরুদ্ধে একশটা মামলা চলছে। মণীশ শুক্ল ২০০৯ থেকে ২০১৪ পর্যন্ত তাঁর সঙ্গে কাজ করেন, তাঁর ভাইয়ের মত। তাঁকে মেরে দিয়েছে ওরা। তিনি বলেন, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ১৬ ঘণ্টা সময় দিন, বুথে বুথে পাড়ায় পাড়ায় আমাকে পাবেন। শুভেন্দু মাতব্বরি করতে বিজেপিতে আসেনি, খবরদারি করবে না, কর্মী হিসেবে পার্টির নির্দেশ পালন করবে। দল যদি পতাকা লাগাতে বলে, দেওয়াল লিখতে বলে তাই করবে। শনিবার অমিত শাহর সঙ্গে সভার পর, তাঁর সঙ্গেই চপারে করে কলকাতায় ফেরেন শুভেন্দু অধিকারী। তারপর একসঙ্গেই চলে যান নিউটাউনের হোটেলে।