আবীর দত্ত ও উজ্জ্বল মুখোপাধ্যায়, কলকাতা: সিগনালের সমস্যার কারণেই বালেশ্বরে ভয়াবহ এই ট্রেন দুর্ঘটনা হয়েছে। এমনটাই জানিয়েছে রেল মন্ত্রক। গতকাল থেকেই এই সম্ভাবনার কথা তুলে ধরেছি আমরা। আজ তাতেই কার্যত সিলমোহর দিল রেলমন্ত্রক।
কী জানা গেল?
রেল বোর্ডের সদস্য জয়া বর্মা সিনহা বলেন, 'সিগনালিংয়ে সমস্যা ছিল, তবুও আমরা রেলওয়ে সেফটির রিপোর্টের অপেক্ষায় আছি।' শুক্রবারের ভয়ঙ্কর দুর্ঘটনার জেরে এক লহমায় নিঃস্ব হয়ে গিয়েছে বহু পরিবার। কান্নায় ভেঙে পড়েছেন কত মানুষ। হাসপাতালের বিছানায় মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন কতজন! যে কারণে এই ভয়ঙ্কর দুর্ঘটনা, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই রেল মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে, সিগনালের সমস্যার কারণেই ভয়াবহ এই ট্রেন দুর্ঘটনা হয়েছে বালেশ্বরে। শনিবার, থেকেই এই সম্ভাবনার কথা তুলে ধরেছিল এবিপি আনন্দ। রবিবার, সেই তত্ত্বেই কার্যত সিলমোহর দিল রেলমন্ত্রক। জয়া বর্মা সিনহা বললেন, 'শুধুমাত্র করমণ্ডল এক্সপ্রেসেই দুর্ঘটনা ঘটে। লুপ লাইনে ঢুকে মালগাড়িকে ধাক্কা মারে করমণ্ডল। ফুল স্পিডে থাকায় ট্রেনের ইঞ্জিন মালগাড়ির মাথায় উঠে যায়।' কিন্তু বিশেষজ্ঞরা যা বলছেন, তার পর একটি প্রশ্ন থেকেই যায়। সিগনাল সবুজ থাকার পরও, কী করে মূল লাইন লুপ লাইনের দিকে ঘোরানো ছিল? আপাতত এটিই খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
আর যা...
জায়গাটার ওপর দিয়ে যেন বিরাট ঝড় বয়ে গিয়েছে। সবকিছু তছনছ!! পড়ে আছে ভাঙাচোরা বগির কঙ্কাল!! মনে করিয়ে দিচ্ছে, শুক্রবার সন্ধেয় কী ভীষণ ভয়ঙ্কর দুর্ঘটনা ঘটেছিল এখানে! দুর্ঘটনার ভীষণ অভিঘাতে রেলট্র্যাক ভেঙে ঢুকে গিয়েছিল বগির মধ্য়ে! কোথাও লাইন বেঁকে গিয়েছিল ধনুকের মতো। আবার কোথাও ট্রেন লাইনের একাংশ উপড়ে গিয়েছিল। তাই যুদ্ধকালীন তৎপরতায় রেল ট্র্যাক-কে পুরোপুরি স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনার ডেডলাইন বেঁধে দিয়েছেন খোদ রেলমন্ত্রী। তাঁর কথায়, 'টার্গেট নিয়েছি, বুধবার সকাল পর্যন্ত সম্পূর্ণ স্বাভাবিক পরিস্থিতি। তার আগে শেষ করব।' রেল সূত্রে খবর, শুক্রবার বাহানাগা বাজার স্টেশনের ট্রেন দুর্ঘটনায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় ৩ নম্বর ট্র্যাক অর্থাৎ যেখানে করমণ্ডল এক্সপ্রেস ছিল। ট্রেনের ধ্বংসাবশেষ সরিয়ে, সেখানে নতুন করে পাতা হয়েছে লাইন। আপ-মেন লাইনের তুলনায় পাশে থাকা ডাউন মেন লাইন অর্থাৎ যেখানে যশবন্তপুর হাওড়া এক্সপ্রেস ছিল তার ক্ষতি তুলনামূলক কম, তাই সেই ট্র্যাক আগে ঠিক করা হয়েছে। রবিবার, দুপুরে রেলমন্ত্রী সেকথা জানিয়ে ট্যুইটারে লেখেন,বেলা ১২টা ৫ নাগাদ ডাউন মেন লাইন ঠিক করা হয়েছে। সোমবার হতে পারে ট্রায়াল রান। তার আগে এদিন, ওভারহেড ইক্যুইপমেন্ট ইন্সপেকশন কার চালিয়ে দেখে নেওয়া হয়, রেলওয়ে স্লিপারের মধ্য়ে গ্যাপ ঠিক আছে কিনা। বৈদ্যুতিক সংযোগ খতিয়ে দেখা হয়। ব্যবহার করা হয় duomatic machine ও tamping machine. রেললাইন পোক্ত করতে ও স্থায়িত্ব বৃদ্ধির জন্য duomatic machine ব্যবহার করা হয়। রেল লাইনের জ্যামিতিক মাপে যাতে ভুল না হয় তাই tamping machine ব্যবহার করা হয়
আরও পড়ুন:এই ৫টি জিনিস স্বপ্নে দেখলেই বিপদ সংকেত! জীবনে আসতে পারে দুর্ভোগ