সনৎ ঝা, শিলিগুড়ি: ছোট থেকে বেড়ে ওঠা একসঙ্গে। পড়াশোনা, খেলাধূলা, পরস্পরকে ছাড়া চলত না। কিন্তু বিবাহ সম্পন্না হয়ে ওঠায় ইতি পড়তে চলেছিল তাতে। পরস্পরের সঙ্গে দেখা হবে না, কথা হবে না, আগের মতো মতো মেশা হবে না, ভেবেই মন ভেঙে গিয়েছিল। শৈশবের বন্ধুত্ব টিকিয়ে রাখতে তাই চরম পদক্ষেপ করলেন দুই তরুণী। একই শাড়ির ফাঁস লাগিয়ে তাঁরা আত্মঘাতী হয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। এই ঘটনায় শোকের ছায়ে গোটা এলাকায়। দুই তরুণী সুইসাইড নোট রেখে গিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে।
শিলিগুড়িতে একই শাড়িতে ফাঁস লাগিয়ে আত্মঘাতী দুই তরুণী
শিলিগুড়ের ভূপেন্দ্রনগরে এই ঘটনা ঘটেছে। মৃত দুই তরুণীর নাম প্রিয়ঙ্কা বর্মন এবং দীপ্তি রায়। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ছোট থেকেই বন্ধু ছিলেন প্রিয়ঙ্কা এবং দীপ্তি। একসঙ্গেই সব কাজ করতেন তাঁরা। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তাতে ছেদ পড়ার পরিবর্তে, তাঁদের বন্ধুত্ব আরও গাঢ় হয়। সুখ-দুঃখের কথা ভাগ করে নেওয়া হোক বা মনের গোপনতম কথা নির্দ্বিধায় পরস্পরকে বলে ফেলা, তাঁদের নিবিড় বন্ধুত্বের কথা জানতেন সকলেই।
কিন্তু সম্প্রতি দীপ্তির বিয়ে ঠিক হয়। তার পর থেকেই দু’জনে মনমরা হয়ে যান। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার প্রিয়ঙ্কার বাড়িতে কেউ ছিলেন না। আর বাড়ি ফাঁকা পেয়েই চরম পদক্ষেপ করে ফেলেন দু’জনে। একই কাপড়ে ফাঁস লাগিয়ে তারা আত্মঘাতী হন বলে অভিযোগ। এক শাড়িতে ফাঁস লাগানো অবস্থাতেই তাঁদের দেখতে পান পরিবারের লোকজন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে দেহ দু’টি উদ্ধার করে ভক্তিনগর থানার পুলিশ।
সুইসাইড নোটেও আলাদা না করার আর্তি
ঘটনাস্থল থেকে একটি সুইসাইড নোটও উদ্ধার করেছে পুলিশ। তাতে লেখা ছিল, ‘আমাদের সব কাজ একসঙ্গে করবেন। আমাদের আলাদা করবেন না।’ গ্রামের মানুষ চোখের সামনেই বড় হতে দেখেছেন ওই তরুণীকে তাঁদের এ হেন পরিস্থিতিতে শোকের ছায়া গোটা এলাকায়। পুলিশ বিষয়টি খতিয়ে দেখছে।