বিটন চক্রবর্তী, পূর্ব মেদিনীপুর : মাত্র ৫ দিনে ৭ শিশুর শরীরে ধরা পড়ল করোনা ভাইরাস। নার্সিংহোম সূত্রে খবর, ৭ দিন থেকে ১০ বছর বয়সী এই শিশুদের কোনও উপসর্গ ছিল না। একেক শিশুর একেক রকমের সমস্যা দেখা যায়। কোলাঘাটের নার্সিংহোমে পাঁচদিনে সাত শিশুর শরীরে ধরা পড়েছে মারণ করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ। নার্সিংহোম সূত্রে জানা গেছে, আক্রান্তদের মধ্যে কয়েকজনের অভিভাবক আগে করোনা আক্রান্ত হন। বড়দের থেকেই কি শিশুদের সংক্রমণ ছড়িয়েছে? উঠছে প্রশ্ন।
করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের রেশ কাটতে না কাটতেই, দেশে তৃতীয় ঢেউয়ের আশঙ্কা নিয়ে হাজির হয়েছে অতি সংক্রামক ডেল্টা প্লাস প্রজাতি! আশঙ্কা তৈরি হচ্ছে শিশুদের নিয়ে। করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে ভারতে মোট করোনা আক্রান্তের ৫.৮ শতাংশই শিশু। এই উদ্বেগের তথ্যের মধ্যে পূর্ব মেদিনীপুরে কোলাঘাটের এক নার্সিংহোমে ৫ দিনের ব্যবধানে ৭ দিন থেকে ১০ বছর বয়সী ৭ শিশুর শরীরে কোভিডের সংক্রমণ ধরা পড়ায় চিন্তা বাড়ল বিভিন্ন মহলে।
আক্রান্ত শিশুদের কারও বাড়ি পশ্চিম মেদিনীপুর, কারও ঝাড়গ্রাম, কারও আবার হাওড়ায়। সংক্রমিতদের মধ্যে কয়েকজনের অভিভাবক ইতিমধ্যেই করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। চিকিৎসক প্রবীর ভৌমিক বলছিলেন, 'ভর্তি করেছিলাম সাসপেক্টেড কোভিড নিয়ে, রিপোর্ট পেলাম সাতজনের কোভিড পজিটিভ, কারও দুর্বলতা, কারও র্যাশ, কারও সাথে কারও মিল নেই, সময়মতো ডায়গনসিস জরুরি। ওদের স্ক্রিনিং শুরু করি। কারও মা, দিদা পজিটিভ। বড়রা অজান্তে বয়ে নিয়ে আসছে। ওরা উপসর্গহীন। বড়র সচেতন না হলে অজান্তে বাচ্চাদের ক্ষতি করে দেবে।'
এক সংক্রমিত শিশুর মা বলেছেন, 'চোখ যেন ছোট হয়ে যাচ্ছিল মেয়ের, স্যর বলেছিল টেস্ট করিয়ে অ্যাডমিশান করাতে, কোভিড পজিটিভ হয়, পেটের যন্ত্রণা হয়।' করোনার তৃতীয় ঢেউয়ের প্রভাব শিশুদের ওপর হওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করে ইতিমধ্যে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে একাধিক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। ১২ বছর বয়স পর্যন্ত শিশুদের মায়েদেরকে টিকাকরণের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দেওয়ারও কথা জানানো হয়েছে। কিন্তু যেভাবে কোভিড আক্রান্ত শিশুদের একেক জনের একেকরকম সমস্যা দেখা যাচ্ছে, তাতে সব মিলিয়ে করোনার তৃতীয় ঢেউ আছড়ে পড়ার আশঙ্কার মধ্যেই শিশুদের নিয়ে উদ্বেগও দিনে দিনে বাড়ছে।