কলকাতা: ভোট পরবর্তী সন্ত্রাস মামলায় কলকাতা হাইকোর্টের রায়ের পরই তৎপর সিবিআই। সূত্রের খবর, কলকাতা, দক্ষিণবঙ্গ, পশ্চিমাঞ্চল ও উত্তরবঙ্গ, এই চারটি জোনে গোটা রাজ্যকে ভাগ করে তদন্ত চলবে। প্রতিটি জোনের দায়িত্বে থাকবেন জয়েন্ট ডিরেক্টর পদমর্যাদার একজন অফিসার। খুন ও অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় প্রতিটি অভিযোগের জন্য আলাদাভাবে দায়ের হবে এফআইআর। প্রতিটি মামলার দায়িত্ব থাকবে একজন তদন্তকারী অফিসারের হাতে।
সূত্রের খবর, সোমবার কলকাতায় আসছেন সিবিআইয়ের জয়েন্ট ডিরেক্টর পদমর্যাদার চার অফিসার। রাজ্য পুলিশের কাছ থেকে নথি সংগ্রহ করে এফআইআর দায়ের করা হবে। গতকাল সিবিআই ডিরেক্টরের নেতৃত্বে উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত হয় বলে সূত্রের খবর।
গত বৃহস্পতিবার রাজ্যে ভোট পরবর্তী সন্ত্রাস মামলার রায় ঘোষণা করেছে কলকাতা হাইকোর্ট। খুন, ধর্ষণ ও অস্বাভাবিক মৃত্যুর মতো, গুরুতর ঘটনার ক্ষেত্রে CBI তদন্ত এবং ভাঙচুর, আগুন, মারধর, ঘরছাড়া করার মতো অপেক্ষাকৃত কম গুরুত্বপূর্ণ অভিযোগের তদন্তের জন্য ৩ আইপিএস-কে নিয়ে এসআইটি গঠনের নির্দেশ দিল আদালত।
ভোট পরবর্তী সন্ত্রাসের অভিযোগ সংক্রান্ত মামলায় ১৩ জুলাই হাইকোর্টে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের তৈরি কমিটির রিপোর্ট জমা পড়ে। রিপোর্টে মূল সুপারিশ ছিল, ঘৃণ্য অপরাধের তদন্তভার দেওয়া হোক সিবিআই-কে।বিচারপর্ব যেন বাংলার বাইরে হয়।অপেক্ষাকৃত কম গুরুতর অভিযোগের ক্ষেত্রে, উচ্চপদস্থ পুলিশ কর্তাদের দিয়ে এসআইটি গঠন করে তদন্তের সুপারিশ করে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের তৈরি কমিটি।
সেই মামলায় বৃহস্পতিবার হাইকোর্টের পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ সর্বসম্মতিক্রমে নির্দেশ দিয়েছে, আদালতের নজরদারিতে, খুন, ধর্ষণ ও অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনার তদন্ত করবে সিবিআই।৬ সপ্তাহের মধ্যে তাদের রিপোর্ট জমা দিতে হবে।এছাড়া ৩ আইপিএস অফিসার, সৌমেন মিত্র, সুমনবালা সাহু ও রণবীর কুমারের নেতৃত্বে সিট গঠন করতে হবে। এই দল অপেক্ষাকৃত কম গুরুত্বপূর্ণ ঘটনার তদন্ত করবে।এই ৩ আইপিএস অফিসারকে অন্যান্য কাজ থেকে অব্যাহতি দিতে হবে রাজ্য সরকারকে। আদালতের অনুমতি ছাড়া, এই ৩ পুলিশ অফিসারের বিরুদ্ধে রাজ্য সরকার কোনও বিরূপ পদক্ষেপ করতে পারবে না।সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতির নজরদারিতে কাজ করবে এই স্পেশাল ইনভেস্টিগেশন টিম। তাদেরকেও ৬ সপ্তাহের মধ্যেই রিপোর্ট জমা দিতে হবে।হাইকোর্টের তরফে একটি ডিভিশন বেঞ্চ গঠন করা হবে। সেখানেই রিপোর্ট জমা করবে সিবিআই ও সিট।
ভোট পরবর্তী অশান্তি মামলায় যুক্ত হতে চেয়ে, আবেদন করেছিলেন, তৃণমূল বিধায়ক তথা মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক ও পার্থ ভৌমিক। সেই আবেদন খারিজ করে দিয়েছে আদালত। হাইকোর্ট নির্দেশ দিয়েছে, ভোট পরবর্তী অশান্তি মামলায় আর কোনও অভিযোগ থাকলে, তা জানাতে হবে ডিভিশন বেঞ্চে। পাশাপাশি, ক্ষতিগ্রস্তদের এখনই ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। সূত্রের খবর, হাইকোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার ভাবনা চিন্তা করছে রাজ্য সরকার।