কলকাতা: আজ বিসর্জন-মামলার রায় দেবে কলকাতা হাইকোর্ট। তার আগে গতকাল ইস্যুতে ফের একবার নাম না করে বিজেপিকে আক্রমণ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সংখ্যালঘু তোষণের অভিযোগ সরাসরি খারিজ করে দিয়েছেন তিনি। তাঁর প্রশ্ন, ‘আমি দুর্গাপুজোর উদ্বোধন করলে বা গণেশপুজোয় অংশ নিলে তখন তাকে তোষণ বলা হয় না কেন? যত সমস্যা ইদ বা মহরম নিয়ে!’

মমতা আরও বলেন, ‘এটা যদি তোষণ করা হয়, তা হলে যতদিন বাঁচব, ততদিন সেই তোষণ আমি করব। আমাকে গুলি করে মারলেও এই কাজ আমি করে যাব। আমার কোনও ভেদ-বিচার নেই। কারণ, এটাই বাংলার সংস্কৃতি, আমার সংস্কৃতি।’

গতকাল বিকেল থেকে কলকাতার উত্তর থেকে দক্ষিণে একের পর এক দুর্গাপ্রতিমার উদ্বোধনের সময়ে একাধিক মণ্ডপে বিসর্জন–বিতর্কের প্রসঙ্গ তুলে বার্তা দেন মমতা। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘সহিষ্ণুতা বাংলার সংস্কৃতি। যারা এর মর্যাদা দেয় না, তাদের অশ্রদ্ধা করি বলব না। কিন্তু এটা বলবই যে তাদের ভালবাসি না। যারা বাংলাকে চেনে না, এখানকার ঐতিহ্য জানে না, তাদের জন্য করুণা হয়।’

পুজোর উদ্বোধনে গিয়ে সম্প্রীতির বার্তা দেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘পুজো সবার, সবাইকে নিয়ে আনন্দ করতে হবে। কেউ স্বার্থপর দৈত্যের মতো আচরণ করতে পারি না’। তাঁর বক্তব্য, ‘অন্য কোনও ধর্মের অনুষ্ঠানের জন্য একদিন দুর্গাপ্রতিমার বিসর্জন বন্ধ থাকতে পারে না? এত কটূক্তি, এত প্রশ্ন কেন?’

মমতার অভিযোগ, কিছু লোক নিজেদের স্বার্থে এ সব প্রশ্ন তুলছেন। এটা রাজনৈতিক চক্রান্ত। একাদশীর দিন মহরম থাকায় সে দিন বিসর্জন বন্ধ করার নির্দেশ দিয়ে রাজ্য সরকার যে ‘ভুল’ কিছু করেনি, বারবার সে কথাও উল্লেখ করেন মুখ্যমন্ত্রী।

এই ইস্যুতে রাজ্য সরকারের সমালোচনা করেছেন সিপিএম সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি। তিনি বলেছেন, বিজেপি ও তৃণমূলের সাম্প্রদায়িকতা নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতার ফলেই বিতর্ক তৈরি হয়েছে। তিনি বলেছেন, তৃণমূল সংখ্যালঘু তোষণের রাজনীতি করছে। অন্যদিকে, বিজেপি সংখ্যাগুরু সাম্প্রদায়িকতা উস্কে দেওয়ার চেষ্টা করছে। আর এভাবে তারা একে অপরের শ্রীবৃদ্ধিতে সহায়তা করছে।