সোমনাথ দাস, ঘাটাল :
ক্রমেই ভয়াবহ হচ্ছে ঘাটালের বন্যা পরিস্থিতি। শিলাবতী নদীর জল ঢুকছে হু হু করে।  প্লাবিত হয়েছে ঘাটাল মহকুমার বিস্তীর্ণ এলাকা। যে দিকে চোখ যায় শুধু জল আর জল। মাথা দেখা যাচ্ছে গাছে। ঘর-বাড়ি জলের তলায়। প্রাণ বাঁচাতে গ্রামের মানুষ আশ্রয় নিয়েছে বাড়ির মাথায়।  গ্রামাঞ্চলে বহু পরিবার বাড়ির ছাদে আশ্রয় নিয়েছে। জল থইথই ঘাটাল পুর-এলাকাও। বেশ কয়েকটি জায়গায় শিলাবতীর বাঁধ ভেঙে জল ঢুকছে শহরে।  চরম দুর্ভোগে সাধারণ মানুষ।


জলের তলায় বহু বাড়ি। আশ্রয় হারিয়ে অনেকে আশ্রয় নিয়েছেন বাড়ির ছাদে। পরিস্থিতি এতটাই ভয়াবহ যে, কোথাও আবার রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকা ট্রাক্টরই কারও কারও কাছে হয়ে উঠেছে, অস্থায়ী ঠিকানা।  চরম দুর্ভোগের মধ্যেই অনেক জায়গায় আবার ত্রাণ না পাওয়ার অভিযোগ। একটু ত্রাণের জন্য আকুল আর্তি মানুষের। 

শিলাবতীর জলে এখনই এমনই পরিস্থিতি পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটালের। ঘাটালের তিন নম্বর ওয়ার্ডে সামনে, দেখে মনে হবে ভেনিস, জল জমে এই অবস্থা, নৌকা-ডোঙায় করে যাচ্ছে, ত্রাণ শিবিরে অনেকের আশ্রয়। হাহাকার, খাবার জল নেই, তেষ্টা পেলে খাব কী? পুরসভার তরফে মিলেছে অল্প পরিমাণে পানীয় জল। বাড়িতে কেউ অসুস্থ হলেই, উদ্বেগ আরও বাড়ছে পরিজনদের। ঘাটালের ভাগীরথীপুর থেকে এমনই এক অন্তঃসত্ত্বা মহিলাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পৌঁছানোর ব্যবস্থা করে এনডিআরএফ।


প্রতিবার বর্ষা এলেই এক ছবি। আর এতেই একরাশ ক্ষোভ উগরে দিচ্ছেন ভুক্তভোগীরা। স্থানীয়দের কারও কারও দাবি, কেউ কোনও সাহায্য নিয়ে আসে না, ভোটের সময় আসে!! ঘাটাল শহরের পাশাপাশি জলের তলায় আশপাশের এলাকাও। প্রতিবার বর্ষা এলেই জলে ডোবে ঘাটাল। অন্যথা হয়নি এবারও। আর এতেই আরও একবার বিতর্ক তৈরি হয়েছে বহু চর্চিত ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান নিয়ে। ফি বছর বর্ষা এলে, যার কথা শোনা যায়, কিন্তু বাস্তবে তার দেখা মেলে না!


এলাকার পরিস্থিতি কেমন, তা দেখতেই সোমবার দুর্গত এলাকায় যান পঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় ও সেচমন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র। নৌকায় চড়ে ঘুরে দেখেন দুর্গত এলাকা। তুলে দেন ত্রাণ সামগ্রী। আর তখনই ত্রাণ না পাওয়ার অভিযোগ করেন অনেকেই। তিনিও বলেন, ত্রাণ নিয়ে সমস্যা আছে, সাহায্য করা হচ্ছে, পরিস্থিতি খুব খারাপ।