মোহন দাস, খানাকুল:  বিস্তীর্ণ এলাকা জলের তলায়। দিনরাত জলবন্দি অবস্থায় কাটাচ্ছেন হুগলির খানাকুলের বাসিন্দারা। ৫ দিন পর মিলল সরকারি ত্রাণ। স্বস্তির সুর দুর্গত এলাকার মানুষদের কণ্ঠে।


গত ৪-৫ দিন এলাকার উঁচু বাড়ির ছাদেই কেটে যাচ্ছে দিনরাত। ছেঁড়াফাটা পুরনো ত্রিপলের নীচে মাথা গুঁজে কোনওরকমে দিন গুজরান।  কোথাও আবার ভিটেমাটি হারিয়ে লরিতে আশ্রয় নিতে হয়। বৃহস্পতিবার বৃষ্টি কমলেও খানাকুলের বিস্তীর্ণ এলাকা এখনও জলের তলায়।  


এক স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, ছেঁড়া ত্রিপল খাটিয়ে আছি। কোনওরকমে বেঁচে আছি। আরেকজন বললেন, ঘরবাড়ি ডুবে যাওয়ায় দাঁড়িয়ে থাকা লরিটিতে আশ্রয় নিয়েছি। এখানেই রান্না করছি।


রয়েছে খাবার ও পানীয় জলের হাহাকার। এই দুঃস্বপ্নের মধ্যেই যেন ক্ষীণ আশার আলো দেখলেন খানাকুলের মানুষ। এদিন প্রশাসনের পক্ষ থেকে এলাকায় বিলি করা হয় শুকনো খাবার ও পানীয় জল। 


সিভিল ডিফেন্সের জওয়ানরা সানসেটে উঠে পৌঁছে দেন ত্রাণ। স্পিড বোটে করে বাড়িতে বাড়িতে ত্রাণ বিলি করা হয়। একগলা জলে দাঁড়িয়ে ত্রাণ সংগ্রহ করতে দেখা গেল দুর্গত মানুষজনকে। 


তাঁদের দাবি, ৫ দিন পর মিলল ত্রাণ। একজন বললেন, বৃষ্টির মধ্যে ছাদে আশ্রয় নিয়েছি। ৫ দিন পর ত্রাণ পেলাম। বাচ্চাটার দুধ পেয়েছি। এবার ওকে খাওয়াব।


আরেকজন বললেন, খাবার-জল কিছুই পাচ্ছিলাম না। আজ অনেক চেষ্টার পর অন্য জায়গা থেকে জল এনেছি। ত্রাণে খাবার-জল সব পেয়েছি। এবার হয়তো কয়েকদিন কাটিয়ে দিতে পারব এই দিয়ে। 


যদিও ত্রাণ দিতে দেরি হওয়ার অভিযোগ উড়িয়ে খানাকুল ২নং ব্লকের বিডিও-র দাবি, পঞ্চায়েতের তরফে সমস্ত দুর্গত এলাকায় আগেই ত্রাণ পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার আলাদা করে স্থানীয় প্রশাসনের তরফে এলাকায় ফের ত্রাণ দেওয়া হল।


কবে কাটবে দুর্ভোগের এই সময়? কবে ফের স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারবেন? রূপনারায়ণ ও মুণ্ডেশ্বরী নদীর সাঁড়াশি আক্রমণে বিপর্যস্ত খানাকুলের বাসিন্দারা এখন এই প্রশ্নেরই উত্তর খুঁজছেন।